Main Menu

সরাইলের শাহজাদাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ::ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ও খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল থেকেঃব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহজাদাপুর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছাদ থেকে নিয়মিত খসে পড়ছে পালেস্তুরা। বেরিয়ে গেছে রড। শ্রেণী কক্ষের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনে ও খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। এ পর্যন্ত শিক্ষিকা সহ আহত হয়েছে ৩০ জন শিক্ষার্থী। তারপর রয়েছে শিক্ষক সংকট। ব্যহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৮৭ শতাংশ জায়গার উপর ১৯৩৭ খ্রীষ্টাব্দে স্থাপিত এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে শ্রেণি কক্ষের সংকট চরম আকার ধারন করেছে। ৬’শ ৫৯জন শিক্ষার্থী অত্যন্ত কষ্টে গিজাগিজি করে ক্লাশ করছে। এ ছাড়া সেখানে রয়েছে শিক্ষক সংকট। বর্তমানে সহকারি শিক্ষকের চারটি পদ শুন্য রয়েছে। সরজমিনে দেখা যায়, ১’শ ফুট লম্বা ও ২০ ফুট প্রস্থের ভবনটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ।  ১৯৯৭ সালে ওই ভবনটি পুনঃ নির্মিত হয়েছিল। কাজের এক বছর পরই খসে পড়তে থাকে ছাদ ও দেওয়ালের পলেস্তরা। বের হয়ে পড়েছে ছাদের ও পিলারের রড। পুরো ছাদেই দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাঁটল। ছাদ থেকে সিমেন্টের বড় টুকরা পড়ে এ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা অর্পনা চক্রবর্তী সহ আহত হয়েছে ত্রিশ শিক্ষার্থী। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের প্রাণহানি। শ্রেণি কক্ষের সংকট এতই তীব্র, যে কারনে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাশ চলছে ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে। পশ্চিম পাশের ভাঙ্গা ছোড়া কক্ষে বসেন প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকরা। তারাও ঝুঁকিমুক্ত নন। টেবিল গুলোতে রয়েছে বালুর স্তুপ। পাশে ২০০৫-২০০৬ অর্থ বছরে নির্মিত নতুন ভবনটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট। সাড়ে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী কোন ভাবেই দুই কক্ষে ক্লাশ করতে পারে না। তাই দুই ভবনের মাঝখানে খোলা আকাশের নিচেও চলছে পাঠদান। বৃষ্টি বা রোদে ওই শিক্ষার্থীদের পোহাতে হয় দূর্ভোগ। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিষয়টি আতঙ্ক ও ভীতির সৃষ্টি করেছে অভিভাবকদের মনে। ফলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একাধিক শিক্ষার্থী আবেগ আপ্লুত হয়ে বলে, আমরা টিভিতে দেখি বিল্ডিং ভেঙ্গে অনেক মানুষ মারা যায়। ভিতরে আটকা পড়ে কান্নাকাটি করে। আমাদের উপরের ছাদ যে কোন দিন ভেঙ্গে মাথায় পড়ে যাবে। কে বাঁচাবে আমাদের? এখানে তো ফায়ার সার্ভিস নাই। অন্য কোন ব্যবস্থাও নাই। এ বিষয়টি একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানোর পরও প্রতিকার নেই। সবশেষ গত ৫ জানুয়ারী উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি, নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা পরিষদ। ওই আবেদনে বলা হয়, অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রি দিয়ে কাজ করায় অল্প সময়ের মধ্যেই ছাদ ধ্বসে যাচ্ছে। বের হওয়া রডে মরিচা ধরে ফেলেছে। ভবনটিকে দ্রুত পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে পুনঃনির্মানের ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে পাঠদানের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের অনুরোধ করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিদাস ভৌমিক বলেন, তখনকার নিম্নমানের কাজের খেসারত ভোগ করছি। ভবনটি ধ্বসে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী। আবার ভেতরে বৃষ্টিও পড়ে। কক্ষের অভাবে আমরা বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ করাচ্ছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি। ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি মোঃ মশিউল হক মোশাররফ বলেন, পুরাতন রড দিয়ে কোন রকমে দায়সারা কাজ হয়েছে। পুরো ভবনটিতে এখন ফাঁটল দেখা দিয়েছে। জায়গার অভাবে ঝুঁকির মধ্যেই ক্লাশ চলছে। কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল খায়েরের মুঠোফোনে (০১৭১১-৯৪২২২১) একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন এ বিষয়ে লিখিত আবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নিব।






Shares