Makon

| মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য, স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা ও ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মাখনের ৬৫তম জন্মদিন আজ শুক্রবার পহেলা জুলাই। ১৯৪৭ সালের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুনিয়াউটে জন্ম নিয়েছিলেন এই জাতীয় বীর । ১৯৬৬-৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৬৮-৬৯ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে ছয়দফা আন্দোলনে ছাত্রছাত্রীদের একট্টা করেতে তিনি ছিলেন অগ্রভাগে। ছাত্রনেতা হিসেবে ’৬৯ এর গণঅভূত্থানে আব্দুল কুদ্দুস মাখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালে তিনি সর্বপ্রথম ছাত্র-ছাত্রীদের ভোটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরই মাঝে তিনি সাংবাদিকতায়ও জড়িয়ে পড়েছিলেন। স্কুল জীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৬৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে। সেখানে অল্প কয়েক দিনে ছাত্র নেতা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের চেতনায় ছাত্রসমাজকে ছাত্রলীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধকে সুসংগঠিত করতে আব্দুল কুদ্দুস মাখনের ছিল অসামান্য অবদান। ১৯৭১ সালে গঠিত স্বাধীনবাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের চার নেতার একজন ছিলেন তিনি। ওই ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ২মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে সর্বপ্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। ৩ মার্চ ছাত্র পরিষদের এক জনসভায় স্বাধীনতার প্রথম ইস্তেহার পাঠ করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি ও বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক ঘোষণা দেওয়া হয় ওই ইস্তেহারে। ২৩ মাচং বঙ্গবন্ধুর হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন আব্দুল কুদ্দুস মাখন। স্বাধীনতা যুদ্ধেও আব্দুল কুদ্দুস মাখনের ছিল অসামান্য অবদান। তিনি ছিলেন পূর্বাঞ্চলীয় লিবারেশন কাউন্সিলের ছাত্র বিষয়ক প্রতিনিধি। সকল মুক্তিযোদ্ধাদের রিক্রুমেন্ট, ট্রেনিং ও অস্ত্র সরবরাহের দায়িত্ব ছিলো তাঁর কাছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক ও তাঁর পরিবারকে হত্যার পর যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছিল তাতে গা ভাসাননি আব্দুল কু্ধসঢ়;দ্দুস মাখন। ২৩ আগস্ট রাতে তিনি গ্রেপ্তার হন। সাজাও হয়েছিল সামরিক আইনে। ১৯৭৮ সালের ১২ নভেম্বর তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। এরপর তিনি আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা করেন। মৃত্যুর আগ তিনি আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। আজবীন সংগ্রামী এই নেতা ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার পিতা মোহাম্মদ আবদুল আলী। মাতা আমেনা খাতুন। সাত ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। ক্ষনজন্মা এই মানুষটি ১৯৯৮ সালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। |































