mustafizমুস্তাফিজুর রহমান কি সাসেক্স খেলছেন, না মহমেডান?

মুস্তাফিজুর রহমান কি আদৌ কোথাও খেলছেন? নাকি বিশ্রামে যাচ্ছেন?

পদ্মাপারের ক্রিকেটমহল বুধবার গোটা দিন ধরে দু’টো প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াল। কিন্তু নিশ্চিত কোনও উত্তরে পৌঁছতে পারল না।

মঙ্গলবার রাতেই ঢাকায় পা দিয়েছেন মুস্তাফিজ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করে। আসমুদ্রহিমাচল প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছে তাঁর বোলিং পারফরম্যান্সের, আইপিএলের সেরা উঠতি প্রতিভার পুরস্কারও পেয়েছেন সাতক্ষীরা পেসার। কিন্তু এর পর তাঁর নিকট-ভবিষ্যতে কী, সাসেক্স না ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের মহমেডান, নাকি সব ছেড়েছুড়ে শুধুই বিশ্রাম—পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না।

বুধবার মীরপুরে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফিজিও এবং ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করেন মুস্তাফিজ। আইপিএল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে নামার আগে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পান মুস্তাফিজ এবং সেই ম্যাচে গুজরাত লায়ন্সের বিরুদ্ধে খেলতেও পারেননি। দু’দিন পরের ফাইনালে যদিও তাঁকে খেলিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশের সাংবাদিকমহলের কাউকে কাউকে ফোন করে জানা গেল যে, দেশের এক নম্বর পেস অস্ত্রের অবস্থা কী, তিনি সাসেক্স খেলতে যেতে পারবেন কি না, জানতে আরও দু’চার দিন লেগে যেতে পারে। ফিজিওরা আগে সব কিছু দেখবেন। তার পর বাংলাদেশ বোর্ড ঠিক করবে, কী করা হবে না হবে।

পদ্মাপারের সাংবাদিকদের কারও কারও ধারণা, মুস্তাফিজকে হয়তো শেষ পর্যন্ত সাসেক্স খেলতে না-ও ছাড়তে পারে বিসিবি। কারণ—টানা ক্রিকেট খেলতে খেলতে মুস্তাফিজ এমনিতেই এখন ক্লান্ত। এর পরেও যদি চালিয়ে যান, ‘বার্ন আউট’ হয়ে পড়ার একটা আশঙ্কা থেকে যায় না। এবং তাঁর মতো পেসারকে নিয়ে ন্যূনতম ঝুঁকির রাস্তায় হাঁটতে চায় না। ঘটনা হল, এ ছাড়াও একটা ছোট সমস্যা আছে। মুস্তাফিজুরকে যদি ফিট ঘোষণাও করা হয়, সেটা থাকবে। মুস্তাফিজকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মহমেডান নিয়েছে। তারাও শোনা গেল প্রবল ভাবে চাইছে, পরবর্তী পর্যায়ের ম্যাচগুলো মুস্তাফিজ খেলুন। আবার ও দিকে সাসেক্স জানিয়ে দিয়েছে, তারা বাংলাদেশ পেসারের জন্য অপেক্ষা করতে রাজি। তবে এর বাইরেও তৃতীয় একটা সম্ভাবনার কথা বলে রাখছে ও পারের সাংবাদিকমহল। সেটা হল—মুস্তাফিজকে আপাতত বিশ্রামে রাখা। কেউ কেউ বললেন যে, বাংলাদেশ পেসার সেটা নাকি দেশজ বোর্ডকে জানিয়েওছেন।

তবে শেষ পর্যন্ত তিনি সাসেক্সে খেলুন, মহমেডানে খেলুন, বা সোজাসুজি বিশ্রামে থাকুন, যা খুশি হোক। নায়ককে নিয়ে আবেগ-মাত্রায় পদ্মাপারের কোনও হেরফের তাতে হচ্ছে না। মঙ্গলবার রাতে এয়ারপোর্টে নামতে না নামতে গোলাপের মুকুট, ফুলের মালা— বাংলার বীর-বরণে কম কিছু ঘটেনি। শোনা গেল, এয়ারপোর্টে তাঁর জন্য জনসমাগমও ছিল দেখার মতো। মন্ত্রী, ক্রিকেট বোর্ড কর্তা, সাধারণ মানুষ— কে বাদ ছিলেন? আপ্লুত মুস্তাফিজ সেখানে বলে দেন, আগামী আইপিএলে তাঁর চেষ্টা হবে নিজেকে আরও ধারালো করার। ‘‘আমি এখনও অনেক ছোট। চেষ্টা করব আরও উন্নতির,’’ বলে দেন তিনি। সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ভারতে বাবা-মা-কে খুব মিস করেছি। দেশকে খুব মিস করেছি।’’ এ দিন সকালে মীরপুরে বাংলাদেশ কিংবদন্তি মাশরফি মর্তুজার সঙ্গে দেখা হলে আর একপ্রস্থ আবেগঘন দৃশ্য তৈরি হয়। সব মিটিয়ে বিকেলের দিকে সাতক্ষীরা রওনা হয়ে যান মুস্তাফিজ। অদৃশ্য ভাবে বুঝিয়ে দিয়ে যে, বাংলাদেশের আশা-আকাঙ্খার এখন একটাই নাম। বাংলাদেশের আবেগ-আলোচনার এখন একটাই মুখ।