Main Menu

নবীনগরে জমজমাট ক্রিকেট জুয়া:: নি:স্ব হচ্ছে অনেক পরিবার!!

+100%-

নবীনগর সংবাদদাতা: ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নবীনগরে ক্রিকেট নিয়ে জমজমাট জুয়া খেলা চলছে দিনের পর দিন। মাদকের নেশার মতো জুয়া খেলায় বিভোর হাজারো যুবক। বাংলাদেশের বি,পি,এল ও ভারতের আইপিএলকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর শুরু হয় সর্বনাশা এ জুয়া খেলা। বর্তমানে চলমান ভারতের আইপিএলকে কেন্দ্রকরে তা আরো বেড়েছে। জুয়ার মাধ্যমে প্রতিদিন হচ্ছে লাখ-লাখ টাকা হাত বদল। এলাকার সবকয়টি ইউনিয়নের বাজার ও পাড়া-মহল্লায় কিছু এজেন্টের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে এই সর্বনাশা জুয়া খেলা। খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে জানাগেছে এই তথ্য।
সরেজমিন খোঁজ নেয়ার সময় দেখা গেছে,টিভিতে ক্রিকেট খেলা শুরু হলেই এলাকার প্রাইভেট হাসপাতাল বা বাজার গুলোর বিশেষ কিছু দোকানে থাকে যুবকদের জটলা। প্রায় সবার মুখে মুখে ক্রিকেটের আলোচনা ও বিশ্লেষন। কেউ কেউ আবার অস্থিরতায় ভোগছেন। খেলা নিয়ে বার বার মোবাইল ফোনে কথা বলছেন। এদের একজন বলছেন অমুক দলের পক্ষে কত? আমার ২ হাজার। আরেকজন বলছেন আরেক দলের পক্ষে ৫ হাজার। গেইল আজকে আউট হয়ে যাবে ১০ রান করার আগেই লাগাও ১থেকে ১০ হাজার টাকা। ক্রিকেট খেলা নিয়ে আরো অনেক ধরণের কথোপকথন চলছিল এই সব স্থানগুলোতে।
জানাগেছে, ‘এটা এখন নবীনগর সদর সহ প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিদিনের চিত্র’ আইপিএলকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন লাখ-লাখ টাকা হাত বদল হচ্ছে এখন। কোন দল জিতবে, কোন খেলোয়াড় কত রান করবে? কত ওভারে কত রান হবে, পাওয়ার প্লে তে কত রান আসবে? অমুক ক্রিকেটার হাফ সেঞ্চুরী না কি সেঞ্চুরী করবে টসে কোন দল জিতবে, কোন খেলোয়াড় কত উইকেট নেবে? ক্রিকেট জুয়ার বাজি চলে এসব নিয়ে।
ওরা আরো জানায়, স্কুল কলেজের ছাত্রদের থেকে শুরু করে, ব্যবসায়ী, শ্রমিক কর্মচারীও এই জুয়া খেলায় জড়িয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। বাজারের ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী শ্রমিক কর্মচারী যা আয় করছে তা সবই লাগিয়ে দিচ্ছে ক্রিকেট জুয়ায়। বাজারের অনেক দোকানি হারিয়েছেন ব্যবসার পুঁজি। এতে নিঃস্ব হয়ে পারিবারিক অশান্তিতে ভোগছে তারা। স্কুল কলেজের ছাত্ররা ক্রিকেট জুয়ায় জড়িয়ে অভিভাবক মহলে চাপ সৃষ্টি করছে। টাকা জোগাড় করতে ঘরে চুরি পর্যন্ত করছে।বর্তমানে আইপিএল খেলাকে কেন্দ্র করে এলাকার পাড়া-মহল্লায় বেড়ে গেছে চুরি। নবীনগর পৌরশহর ছাপিয়ে এই জুয়া এখন উপজেলার সব গ্রাম অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। জুয়ার হারজিতকে কেন্দ্র করে পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জুয়ারী জানায়, বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারে অবস্থিত চায়ের দোকান,সেলুন,খাবারের হোটেল,ক্ষুদ্র মুদিব্যবসায়ী সহ যেসব দোকানে টিভিসেট আছে সেখানেই বসে ছাত্র-যুবক-শ্রমজীবী মানুষের জটলা। খেলা শুরু হলেই শুরু হয় দরকষাকষি।
সে আরো জানায়, এই ক্রিকেট জুয়ার বাজিতে কেউ জয় লাভ করুক আর পরাজিত হোক কেউ বাজীর টাকা পরিশোধে গড়িমসি করেনা প্রতিটি খেলায় এজেন্টের মাধ্যমে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা হয়।
উপজেলার সচেতন সমাজের প্রতিনিধিরা জানায়, যে কোনো খেলা নির্মল আনন্দ দেওয়ার জন্য। কিন্তু যদি প্রতিটি বল বাজি ধরার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে আর খেলার আনন্দ থাকে না। এ ধরণের জুয়া সামাজিক শান্তি বিনষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বড় কোনো সর্বনাশ হওয়ার আগেই এর লাগাম, টেনে ধরতে হবে।

 






Shares