Main Menu

বাংলাদেশের যে গ্রামে টেলিভিশন দেখা নিষেধ!

+100%-

tvডেস্ক ২৪::সিনেমা নয় বাস্তবে এমন একটি গ্রামের সন্ধান পাওয়া গেছে যে গ্রামে ১০ বছর ধরে টেলিভিশন দেখা নিষেধ।শরীয়তপুর সদর উপজেলার বড়াইল গ্রাম। এ গ্রামে প্রায় ১০ বছর ধরে টেলিভিশন দেখা নিষেধ। এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন বড়াইল নূরানী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মো. আবদুল হাই মুন্সী। অথচ এ গ্রামে ১৫ বছর আগে থেকে রয়েছে বিদ্যুৎ সুবিধা। প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুতের আলো, ফ্যান, ফ্রিজ ও আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু টেলিভিশন দেখতে মানা।

বিভিন্ন সময় নানা ফতোয়া দিয়ে বড়াইল গ্রামবাসীকে আধুনিক ও ডিজিটাল প্রযুক্তি থেকে দূরে সরিয়ে রাখারও অভিযোগ রয়েছে। সর্বোচ্চ ৮ বছর বয়সী মনির, আসিফ, আন্না, ইভা, সানজিদার সঙ্গে আলাপকালে জানা যায় তাদের চাপা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তারা বলে, টেলিভিশন না দেখলেই কি সবাই ভালোমানুষ হয়ে যায়? টেলিভিশন দেখা কি খারাপ? টেলিভিশনে ভালো কিছু কি দেখায় না?

ইমরান, ইছব বেপারী, সাইফুল মুন্সী, কামরুল মুন্সী, জাকির হাওলাদার, জাহাঙ্গীর বেপারী, আতাউর শেখ, রেহানা বেগম, খায়রুন্নেছা, ফাহিমা বেগমের বয়স ১৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তারা জানান, ডা. জাকির নায়েকের বক্তব্য তো টিভিতেই দেখায়। ওটি দেখা অন্যায়? টেলিভিশন না দেখে কি ভালো হয়েছে?

ষাটোর্ধ্ব মোহাম্মদ তালুকদার, ইব্রাহীম তালুকদার, নুরুল হক মুন্সীসহ অনেকে জানান, আবদুল হাই মুন্সী তাদের এলাকার সন্তান। বড়াইল গ্রামে আবদুল হাই মুন্সীর অনেক অবদান রয়েছে। তিনি জীবিত থাকতে বড়াইল গ্রামে কেউ টেলিভিশন আনতে পারবে না। তা ছাড়া বড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো পুরুষ শিক্ষক যোগদান করতে পারেন না।

যদি কোনো পুরুষ শিক্ষক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন, তাহলে তাকে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটি প্রতিহত করে।

শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান বলেন, এখন বহুল ব্যবহৃত হয় মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার। টেলিভিশন এগুলোর চেয়ে অনেক নিচে। টেলিভিশনে ৯০ শতাংশ অনুষ্ঠান দেখা ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ; কিন্তু ১০ শতাংশ তো জায়েজ। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সব ধরনের অশ্লীল সিনেমা দেখা যায়। আর সেই ফোন যদি পকেটে থাকতে পারে, তাহলে টেলিভিশন ঘরে থাকতে সমস্যা কোথায়!

বড়াইল নূরানী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মো. আবদুল হাই মুন্সী তাবলিগ জামাতে গিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি। ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা তৈয়াবুর রহমান এলাকায় টেলিভিশন চলতে না দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বড়াইল গ্রামে ঐক্য থাকায় গ্রামবাসী সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে_ গ্রামে টেলিভিশন চললে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা নষ্ট হবে। এ ছাড়া তরুণ-তরুণীরা বেপরোয়া হতে পারে_ এ আশঙ্কায়ও গ্রামে টেলিভিশন চালানো নিষেধ।






Shares