Main Menu

র‌্যাব-১৪ এর অভিযান—সরাইলে দুই মাদক সম্রাট ও ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেট গ্রেপ্তার

+100%-

Sarail Pic(Arrest) 16.06.16 মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল থেকে ॥ র‌্যাব-১৪ এর মাদক বিরোধী অভিযানে সরাইলে মিলন মিয়া (৪০) ও খোকন মিয়া (২৩) নামের দুই মাদক সম্রাট এবং ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেট কে গ্রেপ্তার হয়েছে।

গত বুধবার গভীর রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শাহবাজপুর জিলানী পাম্প এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য পাচারের কাজে ব্যবহৃত কাগজপত্র বিহীন প্রাইভেটকার, ১৫ পিস ইয়াবা ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়েছে। গতকাল সকালে র‌্যাব-১৪ এর সদস্যরা গ্রেপ্তারকৃত দুই মাদক সম্রাটকে সরাইল থানায় সোপর্দ করেছেন।

র‌্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার মোঃ আব্দুল আলিম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন। মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামের আলী আজম মিয়ার ছেলে মিলন। মধ্যপ্রাচ্যে ছিল দীর্ঘদিন। ৫ বছর আগে দেশে এসেছে। আর চুন্টা গ্রামের নুরুল হকের ছেলে খোকন। খোকন দীর্ঘদিন ধরে মিলনের সহযোগী হয়ে কাজ করছে।

বুধবার গভীর রাতে আখাউড়া থেকে প্রাইভেটকারে করে মাদক নিয়ে ঢাকা যাওয়ার উদ্যেশ্যে শাহবাজপুর জিলানী পাম্পের উত্তর পাশে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছিল মিলন ও খোকন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে হাজির হয় ভৈরব ক্যাম্পের ডিএডি আব্দুল আলিমের নেতৃত্বে র‌্যাব-১৪ এর সদস্যরা। এত রাতে এখানে কেন? কোথায় থেকে এসেছেন? যাবেনই বা কোথায়? এমন সব প্রশ্নের জবাবে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় তারা। পরে র‌্যাব সদস্যরা গাড়ি থেকে নামিয়ে তাদের দেহ তল্লাশী করে ১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও মাদক বিক্রয়ের ২৫ হাজার টাকা তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেন। গাড়ির গ্লাসে তারা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট লিখা দেখতে পান। পরে বৈধ কাগজপত্র বিহীন ওই গাড়িটিও (ঢাকা মেট্রো-গ-১৫-৫২১১) জব্দ করে র‌্যাব। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে সরাইল সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাদক ব্যবসার কথা স্বীকার করে তারা।

senior

স্থানীয় লোকজন জানায়, মিলন সৌদী থেকে দেশে এসেই লোক দেখানো ব্যবসার অন্তরালে চালায় নানা অপকর্ম। কালো গ্লাসের একাধিক মাইক্রো ও প্রাইভেটকারে শুরু করে মাদক ব্যবসা। অল্প সময়ে গোটা উপজেলায় ছড়িয়ে দেয় মাদক। এক সময় জনৈক পুলিশ কর্মকর্তার সাথে গড়ে তুলে সখ্যতা। আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে মিলন। তার গাড়িতে করে ওই পুলিশকে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে সরাইল সহ দেশের নানা জায়গায়। বিভিন্ন জায়গায় আমোদ ফূর্তিও করেছে মিলন। এক সময় বৃদ্ধি পেতে থাকে তার সিন্ডিকেটের সদস্য। অসামাজিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি তার মাদক ব্যবসার পরিধিও বেড়ে যায়।

সীমান্ত এলাকা আখাউড়া থেকে গাঁজা ও ইয়াবা সড়ক পথে এনে সরাইলের গ্রামে গঞ্জে বিক্রি শুরু করে। কৌশল হিসাবে তার সুজুকি প্রাইভেটকারটির গ্লাসে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট লেখা ষ্টিকার লাগিয়ে চালায় মাদক ব্যবসা।

মিলন সরাইলের অগনিত যুবক ও কিশোরকে নামিয়েছে মাদক ব্যবসায়। মাদকাসক্ত করেছে হাজার হাজার ছেলেকে। ২ বছর আগে তার গাড়িতে করে মদ নিয়ে আসার পথে সদরের ঘাটুরা এলাকায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তার ৪ সহযোগীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা হয়। ২০১৪ সালে একটি প্রাইভেটকারে করে ৪ মন গাঁজা চুন্টায় নিয়ে যাচ্ছিল মিলন ও তার সহযোগীরা। ভোর বেলা সরাইল- অরুয়াইল সড়কের বড়িয়া এলাকায় জনতা ধাওয়া করলে গাঁজা ভর্তি প্রাইভেটকারটি ফেলে গা ঢাকা দেয় মিলন ও তার লোকজন। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায় মোটা অংকের টাকায় থানা থেকে গাড়িটি ছাড়িয়ে নেয়। মিলন গ্রেপ্তারের খবরে উপজেলার মাদক বিরোধী সংগঠন ও সাধারন লোকজন স্বস্থির নিঃশ্বাশ ফেলেছে।

সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ রুপক কুমার সাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মিলন দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচার ও ব্যবসা করে আসছে। তার বিরুদ্ধে সরাইল, জেলা সদর, আশুগঞ্জ ও বিজয়নগর থানায় একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে।






Shares