Main Menu

দুই বছরেই আখাউড়া- আগরতলা রেল: ভারতীয় সংবাদপত্রের প্রতিবেদন

+100%-

ডেস্ক ২৪: আগরতলা- আখাউড়া রেল লিঙ্ক স্থাপনের কাজ সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে। পরবর্তী দেড় বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ করার লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে  দু’দেশের মধ্যে রেল চলাচল শুরু হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগবে। মঙ্গলবার এই রুটের রেলপথ নিয়ে ঢাকায় রেল ভবনে বাংলাদেশ ও ভারতের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে এই রেলপথের ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সুত্র এই তথ্য জানায়।
বাংলাদেশ ও ভারতের রেল চলাচলের জন্য দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে গত ষোল ফেব্রুয়ারী। এর আওতায় আগর তলা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেললাইন ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ভারতীয় অংশের ছয় কিলোমিটার ভারতীয় রেলওয়ে এবং বাংলাদেশ অংশের দশ কিলোমিটার বাংলাদেশ রেলওয়ে র্নিমাণ করবে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আগরতলা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত পুরো রেলপথ ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ স্থাপনের এবং তাদের মালামাল ও শ্রমিক সহ সমস্ত জনবল নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। বাংলাদেশ রেলওয়ে এতে আপত্তি জানিয়ে দু’দফা খসড়া সমঝোতা স্মারক ফেরত পাঠাই। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় কর্তৃপক্ষ শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের শর্তে ছিল, বাংলাদেশ অংশের রেলপথ স্থাপনের সিøপার ও অবকাঠামো নির্মাণকাজের প্রয়োজনীয় সকল মালামাল, যন্ত্রাংশ তারা সরবারহ করবে। র্নিমাণ কাজ তাদের প্রকৌশলীদের  দিয়ে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করা হবে। বাংলাদেশ তাতে প্রবল আপত্তি করে জানিয়ে বলেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকৌশলীরা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নির্মাণ ও সংস্কার করে আসছে। ভারতীয় প্রকৌশলীদের তদারকি ছাড়াই এ কাজ ও তাড়াই করবেন। সিøপার সহ রেল লাইন স্থাপনে ও অবকাঠামো নির্মাণে ভারতীয় মালামাল সংগ্রহে বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজী হয়েছে। যৌথ ভাবে অ্যাকশন প্ল্যান করা ও স্টিয়ারিং কমিটি গঠনে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। স্টিয়ারিং কমিটিতে প্রকল্প পরিচালক ছাড়াও রেলওয়ে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও ব্র্হ্মাণবাড়ীয়ার ডিসি থাকবেন। ভারতীয় পক্ষ তাদের নাম পাঠানোর পর স্টিয়ারিং কমিটি কাজ শুরু করবে। প্রকল্পের ডি পি পি প্রণীত হচ্ছে।

ভারতীয় পক্ষ আগরতলা থেকে আখাউড়ায় কাস্টমস চেকিং ও ক্লিয়ারেন্সের পর সরাসরি চট্টগ্রাম পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের সুযোগ চেয়েছে। ভারতীয় ট্রেনের লোকো মাস্টার ও সহকারী লোকো মাস্টার দিয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ট্রেন প্ররিচালনা করাতে চায়। গার্ড ও নিরাপত্তা কর্মীরাও হবে ভারতীয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে এতে আপত্তি জানিয়েছে। বলেছে, আখাউড়া থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ট্রেন পরিচালনা করবে বাংলাদেশ লোকো মাস্টার ও সহকারী লোকো মাস্টার। বাংলাদেশ ভুখন্ডে ট্রেনের নিরপত্তার দায়িত্ব থাকবে বাংলাদেশ রেলওয়ের। ভারতীয় লোকো মাস্টার ও অন্যদের আখাউড়ায় থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। চট্টগ্রাম থেকে আখাউড়া ফেরার পর ভারতীয় রেলের লোকো মাস্টার ট্রেন আগরতলায় নিয়ে যাবে। বাংলাদেশ ভারতীয় রেলের কর্মীদের এক বছরের ভিসা দেবে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ভিসা চেয়েছেন দু’বছরের। রেলকপথ মন্ত্রী মোঃ মুজিবল হক বলেন, ডি পি পি প্রণয়ন ও অনুমোদন শেষে সরকারের মেয়াদকালেই আগরতলা-আখাউড়া নির্মাণ কাজ শুরু করা হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশ রেলওয়ের মধ্যে গত সপ্তাহে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার পর গত ছয় মার্চ ভারতীয় রেলের উপদেষ্টা ঢাকা আসেন। রেলের ডিজি সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে অ্যাকশন প্ল্যানের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
এদিকে কুলাউড়া-শাহাবাজপুর-করিমগঞ্জ রেলসংযোগ চালুর বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও বৈঠকের এজেন্ডায় রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রকল্পটি গ্রহণের জন্য খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেবে দুই দেশ। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া জংশন থেকে শাহাবাজ পুর হয়ে আসামের করিমগঞ্জ পর্যন্ত সাতষট্টি দশমিক চার কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচশ ঊনিম কোটি টাকা। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-শাহাবাজপুর রেলপথ ব্রিটিশ আমলে নির্মিত আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ঘন ঘন দুর্ঘটনা, কাঠের সিøপার, সেতু সহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংস্কারের অভাবে ও এ লাইনে লোকসানের অজুহাতে তৎকালীন বি এন পি জোট সরকার ২০০২ সালের ৭ জুলাই এ পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। তবে বর্তমান হাসিনা সরকার একশ সতের কোটি আটষট্টি লাখ টাকায় কুলাউড়া-শাহবাজপুর বেয়াল্লিশ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।  তবে ২০১১ সালের জুলাইয়ে অনুমোদনের পর আর প্রকল্পটির কোনও কাজই হয়নি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনে সম্প্রতি প্রকল্পটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর হয়ে ভারতের মহিশাসনের করিমগঞ্জ বর্ডার পর্যন্ত সাতষট্টি দশমিক চার কিলোমিটার রেলপথ সংস্কার ও পুননির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।  এতে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাড়িয়েছে পাঁচশ ঊনিশ কোটি টাকা। এতে পাচঁ কোটি চুয়াল্লিশ লাখ ডলার (চারশ পয়ঁত্রিশ কোটি টাকা) ঋণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে।






Shares