এসিড নিক্ষেপকারী সেই মনির ছয় বছর আগেই প্রথম স্ত্রীকে এসিডের হুমকি দিয়ে বিয়েতে বাধ্য করে
প্রতিনিধি : ঢাকা ইডেন কলেজের ছাত্রী আখি আক্তারকে এসিডদগ্ধের ঘটনায় করা মামলায় অভিযুক্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের বুড়িশ্বর গ্রামের মৃত আবু তাহেরের পুত্র মনির ওরফে স্বাধীন ছয় বছর আগেও পাশ্ববর্তী শ্রীঘর গ্রামের বাবু মিয়ার মেয়ে স্কুলছাত্রীকে এসিড নিক্ষেপের ভয় দেখিয়ে বিয়েতে বাধ্য করে। পরে অবশ্য ওই মেয়েকে ছুরিকাঘাত ও তালাক দেওয়া হয়। সোমবার নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো. আমিন মিয়া এসব তথ্য জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ছাত্রীর মা এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘স্কুল ছাইড়া দিয়াও আমার মাইয়া রেহাই পাইছেনা। প্রতিদিন স্কুলে যাইবার সময় আমার মাইয়ারে পথে-ঘাডে ডিস্টাব করতো। তারে তুইল্যা লইয়া যাইবোগা বইল্যা ডর (ভয়) দেহাইতো। পরে তার স্কুলে যাওয়াও বন্ধ কইরা দেই। শেষ পর্যন্ত পড়ালেহাও বন্ধ কইরা দেই।’ শ্রীঘর গ্রামের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু কালাম ও মনিরের বড় বোন শেফালি কানিজের সাবেক স্বামী নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারি মো. রজব আলী জানান, প্রায় ছয় বছর আগে মনির তারই আত্মীয় শ্রীঘর গ্রামের বাসিন্দা ফান্দাউক পন্ডিত রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে প্রেম নিবেদন করে। এতে ওই ছাত্রী সাড়া দেয়নি বলে তাকে উত্যক্ত করা শুরু করে মনির। তার উত্যক্তের শিকার হয়ে অবশেষে ওই ছাত্রী বিদ্যালয় পরিবর্তন করে উপজেলা সদরের নাসিরনগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ওই ছাত্রীর বাবা জানান, স্কুলে যাওয়া বন্ধের পরই তার মেয়ের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা করতে থাকে মনির। সে তাকে এসিড নিেেপরও হুমকি দেয়। তার অব্যাহত হুমকিতে তটস্থ হয়ে পরিবারের লোকজন মনিরের কাছেই তাকে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়। মনিরের প্রতিবেশী বুড়িশ্বর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী জানান, জেদ মেটাতে ওই মেয়েকে হুমকি-ধামকি দিয়ে বিয়ে করে মনির। এরপরই বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে মনির। একপর্যায়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে নাসিরনগর সদরের টিএন্ডটি কার্যালয় সংলগ্ন পরিত্যক্ত বাড়ির একটি ঘরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে মেয়েটিকে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটাতে চাপ দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে ছুরিকাঘাত করে মনির। তাছাড়া মনিরের মা এবং বোনেরাও তাকে অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করে। এরপরই ওই মেয়ের পরিবারের লোকজন মনিরের সঙ্গে তার বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটায়। মেয়েটিকে পরে অন্যত্র বিয়ে দেওয়া হয়। এলাকায় খোজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পরদিন থেকে মনির ও মাসুমের পরিবার পলাতক রয়েছে। |