Main Menu

একজন জ্ঞান তাপস ও ইংরেজী ভাষা শিক্ষা অান্দোলনের অগ্রপথিক-

+100%-

shimulসমাজ, দেশকে নিয়ে যারা প্রতিনিয়ত ভাবে, যারা লোকচক্ষুর অন্তরালে জাতি ও দেশ গঠনে নিরলস কাজ করে যান, তারা যুগে যুগেই থাকে প্রচারবিমুখ। কোন কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা না করে শুধু দিয়ে যাবার মন্ত্রে এগিয়ে যায়। এমনই একজন মানুষ আমাদের “ওয়াসিম আহমেদ খান শিমুল”। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসের শুরুতে ইংরেজি ভাষা শেখার তাগিদ থেকে গিয়েছিলাম International Language Teaching Academy অফিসে এবং সে পরিপ্রেক্ষিতে অামার সাথে পরিচয় এই জ্ঞান তাপস ও ইংরেজী ভাষা শিক্ষা অান্দোলনের একজন অগ্রপথিকের সাথে। সে দিন তিনি যেভাবে অামার সাথে প্রারম্ভিক অালোচনা শুরু করেছিলেন তা থেকেই অামি বুঝতে পেরেছিলাম যে, ইংরেজি শিখানো (Teaching) কে তিনি একটি মানবিক ও পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করেন। অাজ খুব মনে পড়ছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিম্নোক্ত কবিতাটি—-
“বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে, বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে, দেখিতে গিয়াছি পবর্তমালা, দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু। দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দু পা ফেলিয়া, একটি ধানের শীষের উপরে, একটি শিশির বিন্দু”।
তেমনি শিমূল স্যার হলো অামাদের ঘরের অাঙ্গিনায় শিশির বিন্দু যিনি এই জেলা শহরে নিরবে নিভৃতে ইংরেজী ভাষা শেখানোর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলাধীন সুহিলপুরের সম্ভ্রান্ত খান পরিবারের সন্তান ওয়াসিম অাহমেদ খান শিমুল। বাবা সুলতান অাহমেদ খান ছিলেন সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের একজন সফল ও খ্যাতিমান চেয়ারম্যান। মেঝো ভাই ছিলেন সুহিলপুর ইউনিয়নের তিনবারের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান। চাচা জনাব সাদত খান ছিলেন অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সফল সহকারী প্রধান শিক্ষক। যিনি মানুষ গড়ার কারিগর ও একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে গণ্য ছিলেন। বড় ভাই মেজর (অব:) জহিরুল হক খান, বীর প্রতীক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অাওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবং সর্বোপরি একজন খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ ছিলেন। যদিও তিনি রাজনীতি পরিবারের সন্তান কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন “রাজনীতি একমাত্র সেবার কেন্দ্রবিন্দু নয়। অামরা যদি যার যার অবস্থান থেকে অামাদের দায়িত্ব পালন করি, দেশের জন্যে কাজ করি তাহলে অামরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে পারব”। তাইতো তিনি শিক্ষকতাকে মহান ও পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছেন।ছাড়পত্র কবিতায় সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছেন—-
” চলে যাব——তবু অাজ যতক্ষণ দেহে অাছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব অামি——
নবজাতকের কাছে এ অামার দৃঢ় অঙ্গীকার”।
শিমুল স্যারের অক্লান্ত পরিশ্রম দেখে সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার সুরে সুর মিলিয়ে বলতেই হয় যে, ছাত্র-ছাত্রীদের মন থেকে ইংরেজি ভীতি দূর করার জন্যে অাপনি যেন অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং ইংরেজি ভাষা শেখার জন্যে যে পরিবেশ প্রয়োজন সেরূপ পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। অারেকটি বিষয় উল্লেখ না করলে নয়, ছাত্রছাত্রীদের মাঝে তিনি একটি স্লোগান ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন “ইংরেজি শিখে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে, বদলে যাও বদলে দাও বাংলাদেশ”। কয়েক বছর পেছন ফিরে গেলে দেখবো, অামাদের দেশের ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজী শিক্ষার দৈন্যদশা দেখে ২০০৫ সালে নিজ জন্মভূমিতে “সুহিলপুর ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টিচিং একাডেমি” নামে যে ইংরেজী ভাষা শিক্ষার একটি অবৈতনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন অাজ তা রূপ লাভ করেছে International Language Teaching Academy তে যা সকল শিক্ষার্থীর অাশা-অাকাঙ্খার প্রতীক হয়ে দাড়িয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ইংরেজী ভাষা শিখে শত শত শিক্ষার্থী অাজ শিক্ষকতার মতো মহান পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জাতি গড়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়াও হাজার হাজার শিক্ষার্থী ইংরেজী ভাষার উপর দক্ষতা অর্জন করে দেশে বিদেশে স্ব স্ব অবস্থানে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগী, সমাজহিতৈষী সর্বোপরি যারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রোডম্যাপ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার সহযাত্রী তারা অাজ বিস্মিত, উচ্ছসিত কারণ ইংরেজী ভাষাকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের দ্বারপ্রান্তে পৌছানোর জন্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক স্কুলে English Language Club গঠনের মাধ্যমে চলতি বছর প্রায় ২০,৪৮৭ জন ছাত্রছাত্রীকে ইংরেজী ভাষা শেখাচ্ছেন যা একটি “ইংরেজী ভাষা শিক্ষা” অান্দোলনে রূপ লাভ করেছে। অামার মতো অারো অনেক তরুণ-তরুণী এসে অংশীদার হলো এই “ইংরেজি ভাষা শিক্ষা অান্দোলনে”। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে English Language Club গঠনের পূর্বে মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম অায়োজনের একজন সফল উদ্যোক্তা অাপনি। এখানে ইংরেজি শেখানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শেখানো হয় সততা, ভদ্রতা, নৈতিকতা ও দেশপ্রেম যা সবার জীবন চলার পথে পাথেয় হয়ে থাকবে। এছাড়াও দীর্ঘদিনের ইংরেজি ভাষা শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতার অালোকে ও শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের লালিত ইংরেজী ভীতি দূর করার লক্ষ্যে রচনা করেন একটি বই যেটি বিগত প্রায় একযুগের স্বকীয় মেধা, বাস্তব প্রশিক্ষণ, ব্যাপক অধ্যয়ন ও দীর্ঘ দিনের গবেষনার ফসল “An Adviser of Communicative English Grammar & Language” বইটি । তাছাড়া বিনামূল্যে ইংরেজী ভাষা শিক্ষা বিস্তারে অনন্য অবদান সরূপ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা। চীন দেশীয় একটি প্রবাদ অাছে —
“যদি তুমি এক বছরের পরিকল্পনা নিয়ে থাকো, তাহলে শস্যদানা বহন করো, তুমি যদি দশ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে থাকো, তাহলে বৃক্ষরোপন করো। এবং তুমি যদি এক হাজার বছরের পরিকল্পনা নিয়ে থাকো তাহলে মানুষ রোপন করো। অার, শিক্ষার মাধ্যমে এ মানুষ রোপন করা হয় এবং সহস্র বছরের সভ্যতা সূচনা হয়”।
সেই সভ্যতা গড়ার কাজ করে যাচ্ছেন শিমুল স্যার। সর্বোপরি ইংরেজি শিখানো ছাড়াও অামাদের প্রাণেরভাষা বাংলা ভাষা যে ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিলেন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার সেই বাংলা ভাষা ও বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে পৌছানোর প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে International Language Teaching Academy (ILTA) প্রতিটি সদস্য, শিক্ষকবৃন্দ।

ফুয়াদ উদ্দিন অাহমেদ ফারহান
সিইও অফিস কোয়ার্টাস, মেড্ডা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।






Shares