Main Menu

স্থানীয় রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে নাসিরনগরে হামলা, পুলিশের প্রতিবেদন

+100%-

1aবিবিসি বাংলা:: স্থানীয় রাজনীতিকদের দ্বন্দ্বের সুযোগেই বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়িঘর এবং মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে বলে পুলিশের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং একই দলের অপর এক নেতার দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে তৃতীয় একটি পক্ষ এই হামলা চালিয়েছে বলে বলছে পুলিশ।

তবে নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়নে চালানো ঐ হামলায় তৃতীয় কোন পক্ষ উস্কানি দিয়েছে তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ।

পুলিশের প্রতিবেদনে স্পষ্ট হচ্ছে যে, নিছক উত্তেজিত জনতা নয়, বরং এর পেছনে পরিকল্পিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল।

পুলিশের চার সদস্যের তদন্ত কমিটি আজ পুলিশ সদর দপ্তরে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. শওকত হোসেন বলেন: “এই দ্বন্দ্বের সুযোগে তৃতীয় একটি পক্ষ কিছু লোককে উসকিয়ে দিয়ে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে আমরা মনে করি” ।

2

ঐ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তের স্বার্থে তৃতীয় পক্ষ বলতে কাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে তা বলতে চাননি মি. হোসেন। যদিও তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে যে, স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন এমন ব্যক্তিরাই এই হামলার উস্কানিতে যুক্ত।

নাসিরনগর উপজেলায় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে দ্বন্দ্ব বেশ আগে থেকেই সুস্পষ্ট এবং হামলার পর দুই পক্ষই বিভিন্ন বক্তব্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একে-অপরকে দোষারোপ করে আসছে।

হামলার পরপরই জেলা আওয়ামীলীগ থেকে তিনজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু তাদেরকে নির্দোষ দাবী করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক। যদিও হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বলছিলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালানোর পেছনে কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল বলে তিনি মনে করেন না।

“রাজনৈতিক উদ্দেশ্য না। আমার মনে হয় মানুষের একটা জনরোষ নামছিল, মানুষ আবেগাপ্লুত হয়ে এই কাজ করে ফেলছে বলে আমার মনে হয়”। বলেন আতিকুর রহমান।

হরিপুরের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মি. রহমান মনোনীত হয়ে নির্বাচিত হলেও প্রথমে অন্য একজনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল, পরে যা বাতিল করা হয়। এই দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্বের সুযোগেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে পুলিশের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি প্রশাসনের ভূমিকাও তদন্ত করেছে পুলিশের এই কমিটি। পুলিশ কর্মকর্তা শওকত হোসেন বলছেন, প্রশাসনের কিছু দুর্বলতা তারা পেয়েছেন।

তিনি বলেন, “ঐদিন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন থাকায় সমাবেশ দুটিতে (ঘটনার দিনের সমাবেশ) পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। এটা যে এত লোকের সমাবেশ হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে কিছু কিছু দুর্বলতা আমাদের কাছে পরিলক্ষিত হয়েছে”।

ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনা প্রতিরোধে একটি সুপারিশমালাও দিয়েছে তদন্ত কমিটি।

এদিকে নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগকারীদের ধরিয়ে দিলে এক লাখ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা পুলিশ।

গত ৩০শে অক্টোবর ফেসবুকে প্রকাশিত একটি ছবিকে কেন্দ্র করে নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর এবং মন্দিরে হামলা চালায় একদল লোক। এর কয়েকদিন পর আবার কিছু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।






Shares