Main Menu

নাসিরনগরে হামলার ঘটনায় জাহাঙ্গীরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

অবমাননাকর সেই ছবি বিলি করে জাহাঙ্গির, আদালতে জবানবন্দি

+100%-
jnnডেস্ক ২৪:: ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুপল্লীতে চালানো হামলার ঘটনায় গ্রেফতার জাহাঙ্গীর আলম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তৃতীয় দফায় ৩ দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ জাহাঙ্গীরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালতে হাজির করা হলে জাহাঙ্গীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জাহাঙ্গীর আলম  হরিণবেড় বাজারে অবস্থিত বহুল আলোচিত ‘আল আমিন সাইবার পয়েন্ট’ এর কর্ণধার। তিনি নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শংকরাদহ গ্রামের দেনু মিয়ার ছেলে এবং হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির অনুসারী।
জানা গেছে, মো. জাহাঙ্গীর আলমকে তৃতীয় দফায় রিমান্ডে আনা হয় গত মঙ্গলবার। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২৯ অক্টোবর সকালে শংকরদাহ গ্রামের জুয়েল নামে এক যুবকের কাছ থেকে মোবাইল ফোনের শেয়ারইটের মাধ্যমে ‘ধর্ম অবমাননাকর’ ছবিটি তিনি নেন। রাতে তিনি ছবিটি প্রিন্ট দিয়ে লিফলেট আকারে বিতরণ করেন। পরে জামাল পাঠান নামের একজন দুটি ছবির রঙিন প্রিন্ট দেন। এর আগে ফারুক মিয়া, হাজি বিল্লল ও কাপ্তান মিয়া নামের তিন ব্যক্তি রসরাজকে ধরে আনার নির্দেশ দেন। পরে রসরাজকে ধরে পুলিশে দেওয়া হয়। ৩০ অক্টোবর সকালে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি ট্রাক ভাড়া করতে বলেন। তিনিসহ সুজন ও রুবেল মিলে ট্রাক ভাড়া করেন। বিকেলে ৫টি ট্রাকের ভাড়া বাবদ ১৫ হাজার টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে আতিকুর রহমান ১০ হাজার, তিনি তিন হাজার, মিন্টু, মাহমুদ, ইসলাম ও নবী মিলে দেন বাকি দুই হাজার টাকা। ট্রাকগুলোতে লাঠিসোঁটা নিয়ে লোকজন নাসিরনগর সদরে যায়।
জাহাঙ্গীর আদালতকে আরও জানায়, ২৯ অক্টোবর সকালে হরিণবেড় বাজারে রসরাজের ফেসবুকের পোস্টটি নিয়ে স্থানীয় খালেদ, মোবারক, ফারুক মিয়া, নয়ন মিয়া, ইউপি সদস্য প্রফুল্ল চন্দ্র দাস রসরাজের প্রতিবেশী অনুকুল চন্দ্র দাসের ছেলে আশুতোষ চন্দ্র দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। সে সময় আশুতোষ বলেছিল ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় কে বা কারা রসরাজের ফেসবুক আইডি থেকে ওই ছবিটি পোস্ট করে।পরদিন বিদেশ থেকে এক লোক বিষয়টি আশুতোষকে জানায়। এরপর আশুতোষ রসরাজের ফেসবুক থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করে আরেকটি পোস্ট দেন। রসরাজের ফেসবুক আইডি ও পাসওয়ার্ড আশুতোষ জানতো বলেও জানায় জাহাঙ্গীর।
গত ২৮ নভেম্বর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কালাইশ্রীপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন পুলিশ তাকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলামের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করলে আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। চারদিনের রিমান্ড শেষে দ্বিতীয় দফায় শনিবার (৩ ডিসেম্বর) পুলিশ তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিনের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও  পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দ্বিতীয় দফায় তিনদিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার পুলিশ তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালতে হাজির করে আরও পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিন দফায় রিমান্ড শেষে আজ  বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন জাহাঙ্গীর।





Shares