Main Menu

সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে আমাদের আত্মা, চিন্তা, বিশ্বাস ও দর্শনের উন্নতি করতে হবে:: বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসব উদ্বোধন কালে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এমপি

+100%-

20160109_122429ডেস্ক ২৪:: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেছেন বর্তমান ছেলে মেয়েরা শুধু পরিক্ষায় পাশের জন্য, ভালো গ্রেট আর সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য লেখা-পড়া করছে। এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী নেই, আছে পরিক্ষার্থী। যা জাতি হিসেবে কখনো আমাদের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তিনি বলেন আমাদের নতুন প্রজম্মের ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার পাশাপাশি দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, নিজেস্ব ভাষা-সংস্কৃতি, খেলাধুলায় মনোযোগী করে তুলতে হবে। তাদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তাদের জ্ঞানী হতে হবে। তাদের আলোকিত মানুষ হবে হবে। তানা হলে দেশ গড়ে উঠবে না। আর এ দায়িত্ব নিতে হবে আমাদের সকল অভিভাবক ও শিক্ষকদের।

মন্ত্রী ৯ জানুয়ারী শনিবার সকাল ১১ টায় চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অনার্স কলেজ প্রাঙ্গনে তিন দিন “ব্যাপী বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসব” উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। বক্তব্যে তিনি আরো বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেত্রীত্বে¡ দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্ত প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নতি হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে আমাদের আত্মার উন্নতি করতে হবে। আমাদের চিন্তা, বিশ্বাস ও দর্শনের উন্নতি করতে হবে। আর এর জন্য আমাদের সংস্কৃতি চর্চা করতে হবে। তিনি বলেন সংস্কৃতি চর্চা মানে শুধু নাচ গান চর্চা নয়। সংস্কৃতি চর্চা মানে নিজেকে জানা, নিজের দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, নিজেস্ব ভাষাকে জানা এবং তার মযার্দা রক্ষা করা। তিনি বলেন আমাদের বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিলো সংস্কৃতির চেতনার মধ্য দিয়ে যা ছিলো আমাদের ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। যেটাকে পরবর্তীতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান একটি মুক্তিযুদ্ধে রুপান্তরিত করেছিলেন। তিনি আমাদের জয় বাংলা স্লোগান স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। যে শ্লোগান দিয়ে আমরা ঝাঁপিয়ে পরেছিলাম মহান মুক্তিযুদ্ধে। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু ছিলো দেশের সকল দল, সকল মানুষের অবিসংবাদিত নেতা। আমার যারা মুক্তিযুদ্ধে যোগদিয়ে ছিলাম তারা ৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষানের মাধ্যমে যোগ দিয়ে ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণই ছিলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষনা। তিনি বলেন বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহান বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছিলো, এখনো হচ্ছে। আর তা রুখতে হলে দেশের সকলকে সুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চা করতে হবে।

সাহিত্য একাডেমী-ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অনার্স কলেজ ও চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন “বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসব” উদযাপন পর্ষদের চেয়ারম্যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এ মাসুদ। অনুষ্ঠানে দেশ বরেণ্য সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব ওস্তাদ ক্যাপ্টেন আজিজুল ইসলাম, চলচিত্র ব্যক্তিত্ব মোরশেদুল ইসলামকে নিজ নিজ কাজে গুরুত্তপূর্ন অবদান রাখার জন্য সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসব বাস্তাবায়ন পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেন্দ্রের আহবায়ক অ্যাড মোহাম্মদ আবু তাহের, ধন্যবাদ বক্তব্য জ্ঞাপন করেন বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসব বাস্তাবায়ন পরিষদ চিনাইর কেন্দ্রের আহবায়ক অধ্যক্ষ মকবুল আহাম্মদ, শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন কবি দিলিপ দাস, কবিতা পাঠ করেন বাচিক শিল্পী গোলাম সারওয়ার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কবি মুহিবুর রহিম ও আলেয়া জাহান তৃপ্তি। nas3-1452248605-4b159

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে সরকারি সঙ্গীত কলেজ, আগারগাঁ, ঢাকা এর শিল্পীবৃন্দ। এদিন বিকাল ৪টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্তরে অনুষ্ঠিত হয় কবি ও কবিতা বিষয়ক আলোচনা-স্বরচিত কবিতা ও ছড়া পাঠ। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি সৈয়দ শামসুল হক। উদ্বোধন করেন কবি কাজী রোজী এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি রফিকুল হক দাদু ভাই, কবি লুৎফর রহমান রিটন, কবি আমিরুল ইসলাম, কবি মোহাম্মদ আশরাফ। অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা ও ছাড়া পাঠ করেন কবি এম আর মনজু, কবি আহমদ মাযহার, কবি মইনুদ্দীন কাজল, কবি সৈয়দ আহমদ আলী আজিজ, কবি আহমেদ কায়সার, কবি শিরীন বকুল, কবি রিফাত নিগার শাপলা, কবি রোকেয়া ইসলাম, কবি মাহবুবুল আলম, কবি নাহার ফরিদ খান, কবি মিলন সব্যসাচী, কবি আয়তআলী পাটওয়ারী, কবি আরিফ মইনুদ্দিন, কবি গিয়াস উদ্দিন চাষা, কবি আনিস মুহাম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি আসলাম সানী, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ও আবৃত্তি করেন ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে ত্রিতাল সঙ্গীত নিকেতন, সরাইল ও লোকরঙ ঢাকা এর শিল্পীবৃন্দ।

উল্লেখ্য আমরা সকলে মিলে একটি পদ্মের পাঁপড়ি হয়ে বিকশিত হবো-এ-ই হোক আমাদের প্রত্যয়, প্রার্থনা ও প্রতিজ্ঞা এই লক্ষ্যেকে সামনে রেখে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে “বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসব”। ৯, ১০ ও ১১ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে দেশ বিদেশের বাঙ্গালী মনিষার এই মহাসম্মিলন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্তরে ও চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অনার্স কলেজ প্রাঙ্গনে একযোগে তিনদিন ব্যাপী এই উৎসব চলবে।

20160109_121422

20160109_121612

20160109_121616

20160109_122429

20160109_130811

20160109_135037






Shares