তিন বার ফাঁসির চেষ্টা করেও মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে আসা এক ব্যাক্তির অলৌকিক ঘটনা
ডেস্ক ২৪::সব প্রাণীরই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। জীবন থাকলে মৃত্যু থাকবেই, এটাই পৃথিবীর নিয়ম। মৃত্যু যত ভয়ঙ্করই হোক না কেন এটা কিন্তু সব সময় ছায়ার মতো আমাদের পাশে পাশে থাকে, কখন যে সামনে এসে উপস্থিত হবে তা কেউ আমরা বলতে পারি না। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার উপায় আমাদের কারো নেই। তবে পৃথিবীতে কিছু সৌভাগ্যবান মানুষ আছেন যারা বেশ কয়েকবার মৃত্যুর দোড়গোড়া থেকে ফিরে এসেছেন।
এমনি এক সৌভাগ্যবান ব্যাক্তি হচ্ছেন জন হেনরি জজ লি। এই সৌভাগ্যবান ব্যাক্তিকে তিনি তিনবার ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু প্রত্যেকবারই অলৌকিক ঘটনা ঘটে তার সাথে। পরে শেষ পর্যন্ত তাকে আর মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় নি। চলুন জেনে আসি তার সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে আসার ঘটনাটি…
ঘটনাটি আজ থেকে প্রায় ১৩০বছর আগের ঘটনা।
জন হেনরি জর্জ লি নামের এক ব্যাক্তি যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন। লি কাজ করতেন রাজকীয় নৌবাহিনীতে। আগে থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের চুরির অভিযোগ ছিল। কিন্তু প্রমাণের অভাবে কিছুই করা যাচ্ছিল না। তবে ১৮৮৪ সালের ১৫ নভেম্বর যা হলো, তাতে লির বাঁচার আর কোনো পথ রইল না।
ঘটনার দিন তিনি কাজ করছিলেন তাঁর চাকরিদাতা এমি কিজের বাসায়। সেদিন বাড়িতে জন ছাড়া কেউই ছিল না। বড়সড় দাঁও মারার লোভে এমি কিজকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেন লি। বিচারে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় লির অপরাধ। ফাঁসির রায়ও হয়।এর পরই ঘটে সেই আশ্চর্য ঘটনা। ১৮৮৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য লিকে জেলখানা থেকে নিয়ে যাওয়া হলো ফাঁসির মঞ্চে। গলায় দড়িও পরানো হলো, কিন্তু দেখা গেল পায়ের নিচের যে ট্র্যাপডোর সরে ফাঁসি কার্যকর করবে, সেটা নড়ছেই না।
জেলখানায় ফিরিয়ে নেওয়া হলো লিকে। প্রকৌশলী দিয়ে পরীক্ষা হলো ট্র্যাপডোর, তখন কোনো ত্রুটি পাওয়া গেল না। এরপর আরো দুবার লিকে ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা হয়, ফল সেই একই। লি থাকলে যেন ট্র্যাপডোরটা নিজের কাজই ভুলে যায়। অথচ অন্য সময় একেবারে স্বাভাবিক।
এ অবস্থায় লির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আশা বাদ দিতে হয় কর্তৃপক্ষকে, যুক্তরাজ্যের হোম সেক্রেটারি উইলিয়াম হারকোর্ট লির মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। লি তখন ১৯ বছরের যুবক। ২২ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পান তিনি। এরপর তিনি পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে, সেখানেই তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়।