কসবায় গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু, লাশ নিয়ে ফেরার সময় এম্বুলেন্স চাপায় শ্রমিক নিহত




খবর পেয়ে রংপুর থেকে মেয়ে তাজনুর নাহারের লাশ দেখতে এসে বাকরুদ্ধ বাবা- মা ও ভাই।
রুবেল আহমেদ : কসবায় তাজনুর নাহার (২৮) নামে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের মনকাশাইর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধু মনকাশাইর গ্রামের আহমেদ শরীফ রানার স্ত্রী এবং রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার তরফসাদী গ্রামের আজহার আলীর কন্যা।
গৃহবধুর পরিবার বলছে, স্বামী ও শ্বাশুড়ী মিলে নির্যাতন করে হত্যা করেছে তাকে। এ ঘটনায় গৃহবধুর স্বামীর বাড়ির লোকজন বলছে কেরির বড়ি ( কীটনাশক) খেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে । তবে তার শরীরে কিছু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
গৃহবধুর দেবর রবি মিয়া জানায়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে সোমবার রাতে কেরির বড়ি খেয়ে ফেলে তার ভাবী তাজনুর নাহার। বিষয়টি টের পাওয়ার পর রাত ৯টার দিকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্ত্যব্যরত চিকিৎসক তাকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এম্ব্যুলেন্সে করে সেখানে নেয়া হলে ভোরে মারা যায় তাজনুর নাহার। পরে সেখান থেকে ওই এম্ব্যুলেন্সে করে মরদেহ নিয়ে আসার পথে এই কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের চাপানগর এলাকায় এই লাশবাহী এম্ব্যুলেন্সটি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ময়নাল মিয়া (৩০) নামে এক ট্রাক্টর শ্রমিককে সজোরে ধাক্কা দিলে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। এম্ব্যুলেন্সটি গাছের সাথে ধাক্কা লেগে দুমরে-মুচরে যায়। এতে চালকসহ আরও দুজন পথচারী আহত হয়। পরে অপর একটি গাড়িতে করে বিকেলে গৃহবধুর লাশ তার স্বামীর বাড়িতে আনা হয়। পরে খবর পেয়ে বিকেলে পুলিশ আসে এবং নিহতের মা-বাবা ও ভাই সন্ধ্যার আগে রংপুর থেকে এসে পৌছায়।
প্রায় ৭/৮ বছর আগে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকুরীর সুবাধে পরিচয় হয়ে তাদের বিয়ে হয়েছিলো বলে জানায় প্রতিবেশীরা। নিহত গৃহবধু অন্তস্বত্ত্বা ছিলো বলে জানায় বাড়ির লোকজন।
নিহত গৃহবধুর পিতা আজহার আলী জানায়, স্বামী ও শ্বাশুড়ী প্রায় সময় তাদের মেয়েকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো বলে জানাতো মেয়ে। তারা নির্যাতন করে মেরে কেরির বড়ি খেয়ে মারা যাওয়ার কথা বলছে। তিনি এ ঘটনার ন্যায় বিচার দাবী করেন।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, গৃহবধু মৃত্যুর ঘটনায় লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত জানা যাবে।