Main Menu

আগরতলার বিষাক্ত বর্জ্যে বিপর্যস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তের জীববৈচিত্র

+100%-

brahmanbaria-news-pic-1

ডেস্ক নিউজঃ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা শহরের শিল্প বর্জ্য ও পয়ঃনিস্কাশনের দূষিত পানি তিতাস নদীতে ফেলতে ব্যবহার হচ্ছে বাংলাদেশের একটি খাল। ওই খালে ইটিপি প্লান্ট স্থাপনের কথা থাকলেও দীর্ঘদিনেও বাস্তবায়ন হয়নি তা। ফলে এই দূষিত পানির প্রভাবে আখাউড়ার সীমান্তবর্তী প্রায় ১৫টি গ্রামের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ এখন হুমকির মধ্যে।

কুচকুচে কালো এই পানির উৎকট গন্ধে জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। তার প্রভাবে ওই এলাকার মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে চর্মরোগ। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এ পানি দিয়েই অন্তত: ১৫০০ হেক্টর জমির ধান চাষ করতে হচ্ছে কৃষকদের। বিষাক্ত পানি নদীতে মিশে যাওয়ায় পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। পানি বন্ধের দাবিতে স্থানীয়রা একাধিকবার মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয়নি।

আখাউড়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগরতলা শহরের পয়ঃপ্রণালী ও স্থানীয় শিল্প কারখানার বর্জ্যের পানিই মূলত এখান দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের অংশ তুলনামূলক উচু হওয়ায় সহজে বাংলাদেশের খাল দিয়ে নামছে এ পানি। প্রশাসন বলছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্মেলনে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হিসেবে বর্জ্য শোধন প্রকল্প বা ইটিপি প্লান্ট স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছে। তবে তাতে সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সীমান্ত এলাকায় কর্তব্যরত বিজিবির কয়েকজন জওয়ান জানান, ‘দুগন্ধযুক্ত পানির কারণে ক্যাম্পে ডিউটি করতে মারাত্মক অসুবিধা হয়। এই গন্ধে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সম্প্রতি বিষাক্ত পানির প্রভাবে শ্বাসকষ্ট আর চুলকানি প্রকোপ বেড়েছে।’

brahmanbaria-news-pic-2

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ডক্টর মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা ভারতেকে জানালে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আশ্বাস দিয়েছে। খালের মুখে ইটিপি প্লান্ট স্থাপন করলে বিষাক্ত বর্জ্য বাংলাদেশে আসবেনা।’ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে কয়েকটি গ্রাম পেরিয়ে তিতাস নদীতে এসে মিলিত হওয়া খালটি প্রায় ৭ কিলোমিটার লম্বা। খালের আশে পাশের অঞ্চল বিশেষ করে আখাউড়ার দক্ষিণ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগর, দ্বিজয়পুর, হীরাপুর, সাতপাড়া, নূরপুর, মোগড়া ইউনিয়নের বাউতলা, ধাতুরপহেলা, নয়াদিল ও পৌরসভার তারাগন, দেবগ্রাম, নারায়নপুর, রাধানগর গ্রামের মানুষ ও পরিবেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান হাবীব বলেন, কৃষি, বন, পরিবেশ এবং মৎস্য বিভাগ প্রাথমিক কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছে। তাতে ভারতের এ পানিতে আখাউড়ার সীমান্তবর্তী দুইটি ইউনিয়ন আর পৌরসভার একটি অংশে বড় ধরনের বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। আখাউড়া কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, প্রায় ১৫০০ হেক্টর জমিতে এই কালো পানি দিয়ে ধান চাষ হয়। উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের ধানি জমি বেশি। মোগড়া ইউনিয়ন ও আখাউড়া পৌরসভারও কিছু জমি আছে। নদী ও খাল থেকে মেশিনে জমিতে পানি দেওয়ার সময় মাথা সমান উচুঁ ফেনা হয়। ওই ফেনা আর কালো পানি ধান গাছের পাতায় লাগলে গাছ লাল হয়ে মরে যায়। সেচের পানি যেখানে প্রথম পড়ছে সেখানকার ধান গাছ পুড়ে গেছে। সুত্রঃ প্রিয়ডটকম






Shares