Main Menu

ইউপি নির্বাচন :: আশুগঞ্জে সকালে ভোটারের ঢল, ২ ঘণ্টা পর আতঙ্ক

+100%-

ASHUGANJভোট শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে আশুগঞ্জের আড়াইসিধা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি কেন্দ্র দখল হয়ে যায়। শুরু হয় ভোট ছাপা। এ নিয়ে মধ্যনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বেশ কিছু সময় কেন্দ্রটিতে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। আশুগঞ্জের ৭ ইউনিয়নের মধ্যে তারুয়া ও শরীফপুর ইউনিয়নেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের এই পরিস্থিতিতে আড়াইসিধা ও তারুয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। শেষ সময়ে চরচারতলা ইউনিয়নের সারকারখানা কেন্দ্র দখলে নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া হয়। পুলিশ গুলি ছুড়লে উত্তেজনা বেড়ে যায়। পরে পুলিশ-গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্রোহী প্রার্থী জিয়াউদ্দিন খন্দকারের সমর্থকরা জানান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আহ্বায়ক শাহিন সিকদার ও ছাত্রলীগ সভাপতি রনি কেন্দ্রটি দখল করে সিল মারতে থাকে। তখন জিয়ার সমর্থকরা তাদের ধরে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এ উপজেলার সব কয়টি ইউনিয়নে সকাল থেকেই ভোটারের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে উচ্ছ্বাসে ছেদ পড়ে। ওদিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ৮ ইউনিয়নের সব কেন্দ্র দখল করে নেয়ার অভিযোগে সকাল ১০টায় ৬ ইউনিয়নের বিএনপির দলীয় প্রার্র্থীরা নির্বাচন বর্জন করেন। নির্বাচনের গোড়াতেই অন্য দুটি ইউনিয়নের প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল খালেক এক সংবাদ সম্মেলনে ৬টি ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। সলিমাবাদ ইউনিয়নের সাতভিলা কেন্দ্রে ব্যালেট বাক্স ভেঙে পানিতে ফেলে দেয়া হয়। এ সময় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ফজলুল হক ও পোলিং অফিসার হেলালউদ্দিন আহত হন। আশুগঞ্জের ৩ ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থীরাও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
আশুগঞ্জে সকালে ছিল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ছিল ভোটারদের ঢল। সকাল ৭টায় তারুয়া মুহিউছুন্নাহ দারুল উলুম ফোরকানিয়া মাদরাসায় দেখা গেছে নারী-পুরুষ ভোটারের দীর্ঘলাইন। জড়াখোলা গ্রামের রহিমা খাতুনসহ আরও অনেক ভোটার জানান, তারা সকাল ৬টায় কেন্দ্রে এসেছেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আড়াইসিধা মধ্যনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল নিয়ে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. সেলিম মিয়ার সমর্থকরা কেন্দ্রটি দখল করে ভোট দিতে গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। এ ঘটনায় কেন্দ্রটিতে কিছু সময় ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম জানান, লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে গন্ডগোল হয়েছে। কিন্তু অনেক ভোটার জানান, সকাল ৯টায় কেন্দ্র দখল করে ব্যালেটে সিল মারা শুরু হয়। ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে অবস্থান করে দফায় দফায় কেন্দ্রে ঢুকে বহিরাগতদের ব্যালেটে সিল মারতে দেখা যায়। এ কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথে ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা মো. ফজলুল হক, আবু আবেদ, মো. আইয়ুবকে দুদফা ব্যালেট বই নিতে দেখা যায়। দুই ঘণ্টাতে শতকারা ৫০ ভাগ ভোট পড়ে এই কেন্দ্রে। সিল মারার সময় কেন্দ্রের ভেতর থেকে একজনকে আটক করে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজা দেন। এ সময় ছাত্রলীগের এক নেতাকেও আটক করেছিল পুলিশ। কেন্দ্রটিতে দায়িত্ব পালনরত নির্বাচন অফিসের এক কর্মচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জলজ্যান্ত দুনম্বরি। এর নাম নির্বাচন! আজাইরা? পাশাপাশি ইকরা একাডেমি ও বাজার চরচারতলা কেন্দ্রও দখল করে ফেলা হয়। এ অবস্থায় আড়াইসিধা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুল হাসান মোবারক নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনের সহায়তায় মধ্যনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইকরা একাডেমি ও বাজার চরচারতলা কেন্দ্র থেকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়। এরপর জেলা শহর থেকে আসা সন্ত্রাসীরা ব্যালেটে সিল মারতে থাকে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ভোট হলে শতকারা ৮০ ভাগ ভোট তিনিই পেতেন। এ ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থী মো. ইউনুছ ভূঁইয়াও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তারুয়া শালুকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ইউনিয়নের ৩টি কেন্দ্র দখল করে সিল মারার অভিযোগে সকাল ১১টায় আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী বাদল সাদির ভোট বর্জন করেন। সকাল ৯টার মধ্যে তারুয়া শালুকপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৩০০ ভোটের মধ্যে ৯০০ ভোট কাস্ট হয়। শরীফপুর ইউনিয়নে ৩টি কেন্দ্রে একাধিকবার প্রকাশ্যে ভোট দেয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাইফউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমন চৌধুরী সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খোলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকালে প্রকাশ্যে ভোট দিতে দেখা যায়। সূত্র:: মানব জমিন






Shares