নাসিরনগরে হাসি মূখে হাতবাড়ানোর মাত্রা বেড়ে গেছে, আওয়ামীলীগের দুর্গ দখলে নিতে মরিয়া বিজেপি
মোঃ আব্দুল হান্নান : ১০তম জাতীয় সংসদ নির্বানের সময় যত ঘনিয়ে আসছে নেতাদের হাঁসি মূখে হাত বাড়ানোর মাত্রা তত বেড়ে যাচ্ছে। প্রার্থীরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গা গণসংযোগ, পথসভা, সভাসমাবেশ বিভিন্ন বিয়ে, বৌ-ভাত ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান করতে শুরু করছে। বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দান খয়রাত এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে সহযোগীতার আশ্বাস দিচ্ছে। একজন প্রর্থিী একজন সাধারণ ভোটারকে দেখলেই হাসি মুখে হাত বাড়িয়ে মন খুলে বুকে টেনে নিয়ে জরিয়ে ধরে মন জয় করার চেষ্টা করছেন। এবার নাসিরনগরে লড়াই হতে পারে আওয়ামীলীগ বিএনপি, বিজেপি ও জেপি চার প্রার্থীর মধ্যে। তবে বিজেপি দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এবার নাসিরনগর আসনে আওয়ামীলীগের ভরাডুবী হতে পারে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে। এলাকার সাধারণ ভোটার, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, কৃষক, শ্রমিক, জেলে, গাড়ী চালক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন লোকজন এ তত্ত্ব জানিয়েছেন। জানা গেছে এক সময়ে জাতীয় পার্টির ঘাটি হিসেবে পরিচিত নাসিরনগর উপজেলায় পর পর ৪ বার আওয়ামীলীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এডঃ ছায়েদুল হক। তিনি একজন সৎ চরিত্রবান, মেধাবী প্রবীন রাজনীতিবিদ হলেও বিগত আওয়ামীলীগের শাসনামলে উপজেলার সিনিয়র কয়েকজন নেতার দূর্নীতি ও অপকর্মের কারণে আগামী নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামীলীগের ভরাডুবী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ফান্দাউক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি জানান “এমপি পাশ করবে তবে কঠিন হবে”। ২০০৩ সালে আওয়ামীলীগের উপজেলা কমিটি হয়েছিল এর পর আর কোন কমিটি হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগ একজনই নিয়ন্ত্রন করে তাই কমিটির প্রয়োজন পরে না। তিনি আরো জানান ১৯৯১ তে এডঃ ছায়েদুল হক স্বতন্ত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তখনও আমরা তার সাথে ছিলাম। একমাত্র তৎকালীণ আওয়ামীলীগের উপজেলা সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ ও শেখ আব্দুল আহাদ তার বিরোধীতা করে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। উপজেলা ছাত্রলীগে একমাত্র আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন রানা ও আহবায়ক সদস্য মোঃ মনির হোসেন ছাড়া অন্যরা সবাই অদৃশ্য হয়ে গেছে। তাছাড়াও উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগের সাথে জেলা কমিটির ব্যাপক বৈরী সম্পর্ক বিরাজ রয়েছে। এডঃ ছায়েদুল হক জেলা ছাত্রলীগের সাথে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাদের যোগাযোগ করতে না দেওয়ায় কমিটির অনুমোদন দেয়নি জেলা ছাত্রলীগ। এমন অভিযোগ উপজেলা ছাত্রলীগের। এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাদের ভিতরে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। তাছাড়াও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইসচেয়ারম্যানের স্বামীর বিভিন্ন দূর্নীতি ও অপকর্মের কারণে আওয়ামীলীগের ভরাডুবীর সম্ভাবনা রয়েছে। কুন্ড ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতা মোঃ আব্দর রউফ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এডঃ সাইদুল হক একজন বদ মেজাজি ওনি দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে র্দূব্যবহার করেন । ৭১ এ নির্বাচনের সময় নাসিরনগর সদরে সাইদুল হকের সামনে তার নির্বাচন করতে গিয়ে মিছিলের কারণে আমি প্রায় ৩ ঘন্টা অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। পরে পানি ডেলে আমাকে সুস্থ করা হয়। বিগত ইউপি নির্বাচনে আমার স্ত্রী বিপুল ভোটে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে ডাকবাংলোতে সাক্ষাত করতে যায় । সেখানে স্বামী-স্ত্রী অনেক্ষণ দাড়িয়ে থাকি কিন্তু তিনি আমাদের বসার কথাও বলেননি। সেদিন ডাকবাংলো থেকে ফিরে আসার পর আর কোন দিন তার কাছে যায়নি এবং ভবিষ্যতেও যাওয়ার ইচ্ছা নেই । এমন অভিযোগ শুধূ আমার নয় আরও অনেকেরই জানান, আব্দু রউফ। একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানায়, আগামী সংসদ নির্বাচনে নাসিরনগর তিল পাড়া, সিংহ গ্রাম, অনন্দপুরসহ এলাকার বিভিন্ন সংখ্যালগু ভোট নৌকা প্রতিকে না দিয়ে আহসানুল হকের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে উপজেলা বিএনপিতে অভ্যন্তরীন কোন্দল বিরাজ করছে। জানা গেছে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান ও তার অনুসারীরা একদিকে। সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ ইকবাল চৌধুরী ও তার অনুসারীরা বিএনপি থেকে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। বতর্মান উপজেলা বিএনপির সভাপতি সংসদ সদস্য প্রার্থী বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব এস এ কে একরামুজ্জামান (সুখন) একজন বড় মনের অধিকারী । নাসিরনগর আসনে তার মত প্রার্থীর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সাধারণ মানুষের জন্য বিশেষ প্রয়োজন । দলীয় কোন্দলের কারণে আগামী নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। |