Main Menu

স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগীতায় ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখছে কৃষক।

নাসিরনগরে বাদাম চাষে বাম্পার ফলনের আশা

+100%-

এম.ডি.মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর হতে :হাওর বেষ্টিত এক জনপদের নাম নাসিরনগর। এখানে রয়েছে ১৩ টি ইউনিয়ন। যার মধ্যে চাতলপাড়,গোয়ালনগর ভলাকুট হল সম্পূর্ণ নদী বেষ্টিত। এ তিন ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্য হল নৌকা। যার চার দিকে নদী,খাল,বিল আর চরের সহারোহ। নদী বেষ্টিত এসব ইউনিয়নগুলোর নদী পাড়ের বেশির ভাগ জমিতে অধিক পরিমাণে বেলে-দোঁয়াশ মাটি রয়েছে। যা বাদাম চাষের জন্যে খুবই উপযোগী।
এই তিন ইউনিয়নের মানুষগুলো নিজেদের জীবন যুদ্ধে টিকিয়ে রাখতে বছরের সারাটা সময় কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। ক্ষণে ক্ষণে রং বদলায় তাদের জীবিকা নির্বাহের সাদা ধবধবে বালুর চড়ের। কখনো প্রকৃতির সাথে আবার কখনো নিজেদের দারিদ্রতার সাথে। নদীর বুকচিড়ে জেগে উঠা চড় ৬ মাস পর নদে পরিণত হয়, তাই ওরা বাদাম চাষকে উৎকৃষ্ট বলে মনে করে এই তিন ইউনিয়নরে মানুষ।
উপযুক্ত মাটি ও আবহাওয়া এবং স্থানীয় কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগীতায় এ বছর চিনা বাদামের বাম্পার ফলনের আশা করছে স্থানীয় কৃষকরা। আগামীতে বেশি করে বাদাম চাষে আগ্রহী হবে বলে আশাবাদী এখানকার স্থানীয় কৃষি অফিস। যার ফলে চরাঞ্চল খ্যাত তিন ইউনিয়নের মানুষের জীবন যাত্রার মান বদলে যাবে।
অল্প খরচ ও কম পরিশ্রমে চিনা বাদাম চাষে অধিক লাভ হওয়ার কারনে দিন দিন বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে নাসিরনগরের ভাটি এলাকার চাষিদের।

সরেজমিনে ঘুরে বাদাম চাষী মোঃ মজিবর রহমান,মোঃ মীর হোসেনের সাথে কথা বললে জানা যায়, তিন দানা বিশিষ্ট জিংগা বাদাম(চিনা বাদাম) বাংলাদেশ সরকারের ২০১৭-২০১৮ এর অর্থ বছরের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে চাতলপাড়,গোয়ালনগর ও ভলাকুটে ৫ একর জমিতে প্রদর্শনী সরুপ বাদাম চাষ করা হয়েছে। দু’দানা বিশিষ্ট বাদাম ফলনে কম হয়।। তিন দানা বিশিষ্ট জিংগা বাদামের ফলন বেশি। এবছর নাসিরনগরে মোট ২৬ হেক্টর জমিতে দু’দানা বিশিষ্ট বাদাম চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ২.৯ মেঃটন বাদাম উৎপাদন হবে বলে তারা জানান। তারা স্থানীয় উপজেলা কৃষি অফিস হতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ, সার,বীজ সহ সকল সহযোগীতা পাচ্ছে। বাদাম বছরে দু’বার চাষ করা যায়। কার্তিক মাসে চাষের পর ফসল ঘরে তুলা হয় বৈশাখের আগ মূহুর্তে। পরে আবার বৈশাখ মাসে নতুন করে বাদাম চাষ করা সম্ভব। বাদাম চাষে সেচের প্রয়োজন হয়না। মূলত যেসব জমিতে ধান চাষ হয়না কিংবা অনাবাদী কৃষি জমি সে সকল জমিতে বাদাম চাষ করা হয়। বাদাম একটি উচ্চমূল্যে ফসল। ফলনও ভাল হয়। প্রতি কেজি বাদাম ৩০০ টাকা। প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০/৪৫ মেঃটন বাদাম চাষ হয়। যা ধান চাষের চেয়ে অধিক লাভবান। তাই কৃষকরা বাধ্য হয়েই বাদাম চাষের প্রতি বেশি আগ্রহ।
মোছাঃ খুশনাহার জানান, আমাদের এই তিন ইউনিয়ন নদী বেষ্টিত। এখানে ফসলের আবাদ করা খুবই ঝুকিপূর্ণ। নদীর জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে চাষাবাদ হয়। প্রয়োজনের সময় পানি না পাওয়া ও অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত পানি চলে আসা চাষের জন্য মারাত্বক ক্ষতির কারণ। তিনি আরো বলেন, ধান,আলু বা অন্যান্য রবি শষ্য চাষের চেয়ে বাদাম চাষে লাভ বেশি। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপযুক্ত মাটি ও আবহাওয়া অনুকুল থাকে প্রায়শয়। খরচও অল্প। পরিশ্রম নেই বললেই চলে। এবার অতি বৃষ্টি ও বর্ষার আগাম পানি না থাকায় বাদামের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তাই অল্প খরচে বাদামের চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আনিছুজ্জামান বলেন, নাসিরনগরে এ বছর ২৬ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং চাষাবাদ খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা বাদাম চাষে আগ্রহী হবে বলে তিনি আশাবাদী।






Shares