নাসিরনগরে চার দিনে তিন শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গত চার দিনে উপজেলার দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা প্রত্যেকেই মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামের সমীর পালের ছেলে নয়ন পাল (১১), একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী উপজেলা সদরের কাশিপাড়ার মানিক দাসের মেয়ে রিয়া দাস (১৪), কুন্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী মসলন্দপুর গ্রামের সুবোধ রায়ের মেয়ে রিতু রায় (১৬)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রিতুর পরিবারের লোকজন দেখতে পায় ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলে আছে রিতুর ওড়না পেঁচানো দেহ। এ ঘটনার ছয়দিন পর রিতুর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী উপজেলা সদরের কাশিপাড়ার রিয়া দাসকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়।
এর দুই দিন আগে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) একই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী নয়ন পালকে ঘরের মাচায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এ নিয়ে গত চার দিনে তিন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।
নিহত নয়ন পালের ভাই শয়ন পাল জানান, কথা না শোনায় আমার বাবা নয়নকে বকা দিয়েছিলেন। পরে আমরা দেখি ঘরের মাচায় নয়নের দেহ ঝুলছে।
নাসিরনগর সরকারি কলেজের মনোবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, এ বয়সে শিক্ষার্থীরা আবেগপ্রবণ থাকে। বিভিন্ন ধরনের মানসিক পরিবর্তন ঘটে। এ সময় অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের মনোভাব বুঝতে না পারলে তাদের মধ্যে একটা মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। ফলে বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
নাসিরনগর থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় সরকার জানান, তিনটি লাশই ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরানুল হক ভূইয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের এমন মৃত্যু কাম্য নয়। এ ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করব।