Main Menu

ভ্রাম্যমান আদালতে ৪ ব্যবসায়ীকে ৪৭ হাজার টাকা জরিমানা

নাসিরনগরে লবণ আতঙ্ক

+100%-

নিজস্ব প্রতিবেদক::একদিকে পেঁয়াজের বাজার অস্থির। পেঁয়াজের দাম না কমতেই নতুন করে বাজারে গুজব ছড়িয়েছে লবণের দাম বৃদ্ধির। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে লবণ আতঙ্কে ভুগছে সাধারণ মানুষ। উপজেলার সর্বত্র এখন লবণ কেনা নিয়ে ব্যস্ত এলাকার মানুষ। বাজারে সৃষ্টি হয়েছে লবণের কৃত্রিম সংকট। লবণ কিনতে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ভোগ্যপণ্যের দোকানে। গত সোমবার রাত থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লবণের দাম বেড়েছে শুনে কেউ কেউ বাড়িতে মজুদ করতে লবণ কিনে গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন। এমন দৃশ্য দেখা মিলে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর বাজারে।
১৯ নভেম্বর সকালে লবণের দাম বৃদ্ধির গুজবে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৪ অসাধু ব্যবসায়ীকে ৪৭ হাজার টাকা আর্থিক দন্ড দিয়েছেন নাসিরনগর উপজেলার বিচারিক হাকিম ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার।
এদিকে চাতলপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল আহাদ এ প্রতিবদেককে বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠেই শুনতে পাই বাজারে লবণ নেই। পরে খুঁজ নিয়ে জানতে পারি বাজারে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে লবণের দাম প্রতি কেজি ১২০ টাকা। তার পর থেকেই বাজারে বেশি দামে লবণ বিক্রি হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাজারে লবণের ক্রেতারা ভিড় করতে থাকে। অপরদিকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লবণ মজুদ করে রাখার কথাও জানান এ চেয়ারম্যান।
অপরদিকে একই বাজারে দুইরকম দৃশ্য দেখা যায়। নাসিরনগর বাজার ব্যবসায়ী রতন বনিক ও চানু দেব বলেন, বাজারে খোলা লবণের দাম প্রতি বস্তায় বিশ টাকা কমেছে। তাই লবণের দাম বেশি রাখার কোন কারণ নেই। অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রি করায় নির্বাহী হাকিম ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে নাসিরনগর বাজারের দুই লবণ বিক্রেতাকে ২২ হাজার, জেঠাগ্রামের ৫ হাজার ও পাঠানিশা গ্রামে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। আর্থিক দন্ডপ্রাপ্তরা হল উপজেলার সদরের দেবেন্দ্র চন্দ্র রায়ের ছেলে নান্টু রায়কে ২০ হাজার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামের এরশাদ মিয়ার ছেলে জানু মিয়াকে ২ হাজার,গোকর্ণ ইউনিয়নের পাঠানিশা গ্রামের রহিম মিয়ার ছেলে বশির মিয়াকে ২০ হাজার ও একই ইউনিয়নের জেঠাগ্রামের মনোরঞ্জন দাসের ছেলে কবির দাসকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
হঠাৎ করে লবণের বাড়তি চাপ সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে দোকানীরা। নিমিষেই ফুরিয়ে যাচ্ছে দোকানের লবণ। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়িরা বেশি দামে বিক্রি করছে। অভিযোগ উঠেছে দোকানে লবণ মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন ব্যবসায়ীরা। ১০ টাকা মূল্যের খোলা লবণ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা আর ৩০ টাকার পেকেটজাত লবণ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
কথা হয় নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তাহমিনা আক্তারের সাথে। তিনি সমকালকে জানান, সকাল থেকে আমি উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে বেশি দামে লবণ বিক্রির বিষয়টির সত্যতা পেয়েছি। যারা বেশি দামে লবণ বিক্রি করছে তাদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জমিনানা করা হয়েছে।

উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর বাজারে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভোগ্যপণ্যের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়। সাধারণ লোক লবণ কিনতে ব্যস্ত। কথা হয় একজন লবণ ক্রেতা মোশাহিদের সাথে। তিনি জানান, তিন কেজি খোলা লবণ কিনেছি। দোকানে আসতেই দোকানের মালিক লবণের দাম চায় ৬০ টাকা কেজি করে। অথচ এক কেজি খোলা লবণের মূল্য ১০ টাকা।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফুলপুর বাজারে খোলা লবণ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা করে। বাজার দর ১০ টাকা হলেও লবণের দাম বেড়েছে এই গুজবে দাম বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ফুলপুর গ্রামের সজল মিয়া।

নাসিরনগরের লনিবালা দাস ও জবা রানী দাস বলেন, সহাল (সকাল) বেলা দোহানে (দোকানে) গেলে দোকানের মালিক বলে খোলা লবণ ৬০ টাকা কেজি আর পেকেট লবণ ১০০ টাকা। পড়ে মালিকের লগে ঝগড়া কইরা ২০ টাকা কমাইছি। ৪০ টাকা দিয়া এক কেজি খোলা লবণ কিনছি। এমনই অভিযোগ শত শত লবণ ক্রেতাদের।






Shares