ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে বেহাল সড়কের মনিটরিংয়ে গঠিত কমিটির ১২ সদস্যের একজনকে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সড়ক ও জনপথের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদের বদলির আদেশ দেন।

মীর নিজাম উদ্দিনকে কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগে বদলি করা হয়েছে। অবশ্য বদলির আদেশে কোনো কারণ বলা হয়নি। তিনি বর্তমানে জাপানে রয়েছেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত জাইকার একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে তিনি সেখানে যান।

নিজাম উদ্দিন মনিটরিং কমিটির ৭ নম্বর সদস্য। তার জায়গায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে বদলি করা হয়েছে নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামকে।

বদলিকৃত কর্মকর্তাদের ১৪ অক্টোবর দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে।

গত বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোডে সড়ক পরিদর্শনের পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সড়কের কাজ দেখার জন্য ১২ কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান। তাদের প্রকল্প এলাকায় থেকে সমস্যা সমাধান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এলাকায় না থাকলে তাদের সাসপেন্ড করা হবে। নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের নাম-তালিকা গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে দিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। পরদিন বৃহস্পতিবার ১২ কর্মকর্তা নিয়োগের অফিস আদেশ সাংবাদিকদের হাতে পৌঁছে।

এর আগে, গত ৪ অক্টোবর ১২ কর্মকর্তা নিয়োগের অফিস আদেশ হয়।

সড়ক ও জনপথের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান স্বাক্ষরিত ওই অফিস আদেশে বলা হয়, ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এবং আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে চার লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আশুগঞ্জ-সরাইল মহাসড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতকরণের চলমান কাজ দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১২ জন কর্মকর্তার একটি মনিটরিং কমিটি করা হয়েছে।’

কমিটিতে থাকা কর্মকর্তারা হলেন– সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, সড়ক ও জনপথের কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক, আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক, সড়ক ও জনপথের কুমিল্লা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথের ঢাকা তেজগাঁওয়ের মনিটরিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (প্যাকেজ-২) এবং সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (প্যাকেজ-৩)।

অফিস আদেশে কমিটির সদস্য কর্মকর্তাদের মহাসড়কের সাইট ক্যাম্পে অবস্থান করে চলমান কাজ নিবিড়ভাবে মনিটরিং, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কাংশের মেরামত কাজ দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন ও স্বাভাবিক যান চলাচল নিশ্চিতকরনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ, মেরামত কাজ দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়নের স্বার্থে কমিটির সদস্যরা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও হাইওয়ে পুলিশসহ প্রয়োজনীয় সকল পর্যায়ে সমন্বয় সাধনের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। এছাড়া কমিটি কাজের বাস্তবায়ন অগ্রগতি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দৈনিক ভিত্তিতে সড়ক ও জনপথের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে দাখিল করবে।

এদিকে, ১২ কর্মকর্তা প্রকল্প এলাকায় নেই বলে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তবে আজ কর্মকর্তাদের মাঠে দেখা গেছে।

আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মোট ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু নানা জটিলতায় ৫ বছরেও শেষ হয়নি এ কাজ। গত ২ বছর পুরোপুরি কাজ বন্ধ থাকে। এতে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে।