মৃত্যুর অনুমতি চাওয়া পরিবারটিকে চিকিৎসার প্রস্তাব ভারতীয় হাসপাতালের, চীনেরও আগ্রহ
বাংলাদেশের মেহেরপুরে দীর্ঘদিন ধরে দূরারোগ্য রোগে ভুগতে থাকা পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুর অনুমতি চেয়ে চিঠি লিখে সাড়া ফেলে দেয়া তোফাজ্জেল হোসেনের দুই ছেলে এবং নাতির বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারতীয় একটি হাসপাতাল।
ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থিত নিউরোজেন ব্রেইন অ্যান্ড স্পাইন ইন্সটিটিউট প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাব দিয়েছে।
চীনেরও একটি দল এবিষয়ে মি. হোসেনের সাথে যোগাযোগ করতে চেয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে তাদের সাথে এখনো বিস্তারিত কথা হয়নি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবরটি দেখে ভারতীয় হাসপাতালের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খানের সঙ্গে।
মি. খান বলেন, সংবাদ সংস্থা এএফপির একটি প্রতিবেদন ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ানে প্রকাশিত হলে ঐ প্রতিবেদনে তার একটি মন্তব্য দেখে নিউরোজেনের পক্ষ থেকে তার সাথে যোগাযোগ করা হয়।
“তারা আমাকে ফোন করে এবং তোফাজ্জল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করার বিষয়ে সাহায্য চায়। পরে ইমেইলে তাদের কাছে মি. হোসেনের পরিবারের রোগাক্রান্ত সদস্যদের প্রেসক্রিপশনসহ চিকিৎসার কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। তারা চাইছে এই মানুষগুলোকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করতে”।
রোগীদের যাতায়াতের খরচ বহন করার বিষয়েও ইমেইলে আগ্রহ দেখিয়েছে মুম্বাইয়ের ঐ চিকিৎসাকেন্দ্র।
গত ১৯শে জানুয়ারি মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর একটি চিঠি পাঠান তোফাজ্জেল হোসেন, যেখানে দুরারোগ্য ‘মাসকুল্যার ডিসট্রোফি’ বা মাংসপেশিতে পুষ্টির অভাবজনিত অসুখে আক্রান্ত দুই ছেলে ও এক নাতির মৃত্যুর অনুমতি প্রার্থনা করেন তিনি।
তিনি জানান, তার ২২-বছর বয়সী বড় ছেলে চলৎশক্তি হারিয়েছেন, ১৩ বছর বয়সী ছেলে এবং ৭ বছর বয়সী নাতিও দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
বিবিসির সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে তার পাঠানো চিঠির সংবাদ প্রকাশ হবার অনেকে চিকিৎসায় সাহায্য করতে চেয়েছেন।
চীনের একটি দলও তার সাথে দেখা করতে চেয়েছে, যারা চীনে তার পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা করা যায় কিনা সেই চেষ্টা করে দেখছেন।
বাংলাদেশেও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের একটি দল বর্তমানে চিকিৎসায় সহযোগিতা করছেন বলে জানান মি. হোসেন।
“তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা যেখানে হয়, সেখানেই তাদের চিকিৎসা করাবো”, বলেন মি. হোসেন।
ভারতের যে চিকিৎসাকেন্দ্র বিনামূল্যে চিকিৎসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তারা মূলত: স্টেম সেল বা ভ্রুণ কোষের মাধ্যমে চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভারতের নেতৃত্বস্থানীয় একটি হাসপাতাল।