Main Menu

পৌর মেয়র নির্বাচন :: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক ছবি, ঢাকায় অন্য দৃশ্য

+100%-

1833_d1 (1)

একটি ছবি। নানা আলোচনা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরভবনে প্রবেশের সিঁড়ি মুখে তোলা এই ছবিটি ফেসবুকে আপলোড করার পর ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ৫ নেতা একত্রে রয়েছেন ছবিতে। তারা হাত তুলে দোয়া করছেন। এই নেতারা জানান- রোববার দলের মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার পর ছবিটি উঠানো হয়। তারা বলেন, আমরা সবাই একত্রে আছি। ছবিতে রয়েছেন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি তাজ মো. ইয়াছিন, মো. হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন। এ পর্যন্ত দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৯ জন। তাদের মধ্যে ছবির ৫ জন জোট বেঁধেছেন- তাদের মধ্যে যে কাউকে মনোনয়ন দিলে সবাই মেনে নেবেন। দুদিন আগের এ দৃশ্যপট বদলে গেছে এখন। সোমবার মনোনয়ন নির্ধারণে গঠিত ৬ সদস্যের কমিটি ঢাকায় বৈঠক করে। সেখানে ৯ জনের বাইরে নতুন যোগ করা হয় জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের নাম। ওই বৈঠকে উপস্থিত একজন নেতা জানান-আল মামুন সরকারসহ ১০ জনের নামই আমরা দলের সভানেত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। কারণ, আমরা এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারিনি। গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ঢাকায় সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাইকে নিয়ে আরেকটি বৈঠক হয়। আগামী ২০শে মার্চ ভোট এই পৌরসভার। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই ঘুম হারাম হয়ে যায় বড় দু-দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে মুখেমুখে খবর ছড়িয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে আল মামুন সরকারকে। আবার বর্তমান মেয়র হেলাল উদ্দিনের সমর্থকরা বলাবলি করেন ৬ জনের কমিটির বৈঠকে ৪ জন হেলাল উদ্দিনকে মনোনয়ন দেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ওদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে সোমবার রাতে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার কার্যালয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ মাহবুুব শ্যামল জানান- এখনো দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। চেয়ারপারসন সবার কথা শুনেছেন। তিনি আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন। জেলা বিএনপির শীর্ষ ৩ নেতা বিএনপির মনোনয়ন চান।

আওয়ামী লীগের মেঘ না চাইতে জল পরিস্থিতি: মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত ছিল ৯ জন। ঢাকায় গিয়ে তা দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের নাম নতুন যোগ হয়। এরপরই গতকাল শহরে খবর ছড়িয়ে পড়ে মামুন দলের মনোনয়ন পেয়ে গেছেন। যদিও মামুন নির্বাচন করবেন না বলেই এতদিন অটল ছিলেন। সেকারণে দলের মনোনয়ন ফরমও সংগ্রহ করেননি তিনি। কিন্তু মনোনয়ন কোন্দলের ইতি টানতে শেষ পর্যন্ত তাকে দলের মনোনয়ন দেয়া হতে পারে এমন আলোচনা ছিল সাধারণের মধ্যে। মেঘ না চাইতে জল- এমনই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাকে নিয়ে। আল মামুন সরকার ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পৌরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তবে এ কথাও রয়েছে, ঢাকায় অনুষ্ঠিত মনোনয়ন নির্ধারণের দায়িত্ব প্রাপ্ত ৬ জনের বৈঠকে ৪ জনই দলের মনোনয়ন বর্তমান মেয়র হেলাল উদ্দিনকে দেয়ার পক্ষে তাদের মত দিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থী অন্যরা হচ্ছেন- জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি তাজ মো. ইয়াছিন, নায়ার কবির ও হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, শাহ আলম সরকার, সদস্য মাহমুদুল হক ভূঁইয়া ও যুবলীগ নেতা গোলাম মোস্তফা রাফি। আল মামুন সরকার নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না এমন পর্যায়ে ৩ জনকে নিয়েই আলোচনা ছিল বেশি। তারা হচ্ছেন- বর্তমান মেয়র হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি তাজ মো. ইয়াছিন ও নায়ার কবির। নায়ার কবির মনোনয়ন পেয়ে গেছেন এমন আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে দুদিন আগে। তখনই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা ঐক্যবদ্ধ হন। তারা ভেতরে ভেতরে সিদ্ধান্ত নেন নায়ারকে তারা মানবেন না। তাদের মধ্যে যে কাউকে মনোনয়ন দিলে তারা মেনে নেবেন। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মনোনয়ন লড়াইয়ের এ চিত্র পালটে গেল ঢাকায়।
বিএনপির কে?: দু-ডজনের বেশি মামলার আসামি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন ও সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। তারপরও অটল তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে। মামলাকে ফ্যাক্টর মনে করছেন না মেয়র পদে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী এই নেতারা। প্রয়োজনে কারাগারে থেকে নির্বাচন করতেও প্রস্তুত তারা। তবে তাদের মধ্যে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন সেটিই এখন দেখার বিষয়। তফসিল ঘোষণার পর ৩ জনই গণসংযোগে বের হয়েছেন। এর আগে প্রায় আড়াই মাস এই নেতারা কারাগারে ছিলেন। তবে সাবেক মেয়র হিসেবে হাফিজুর রহমান মোল্লা কচির সম্ভাবনা বেশি বলে আলোচনা আছে। যদিও অন্য দুই নেতা সিরিয়াস। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ দলের মনোনয়নের জন্য অনেক তৎপর। সোমবার রাতে ঢাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে বৈঠক হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই মনোনয়ন প্রার্থীদের। যদিও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল। তিনি জানান- দলের চেয়ারপারসন আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন।

সংবাদ সূত্র :: মানবজমিন






Shares