Main Menu

সাংবাদিকের উপর হামলা ॥ উপজেলা আওয়ামলীগ নেতাদের দু:খ প্রকাশ

+100%-

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মাদ্রাসা শিক্ষকের বেত্রাঘাতে তিন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সময় টিভির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যুরো কার্যালয়ের প্রতিবেদক উজ্জল চক্রবর্তী হামলার শিকার হয়েছেন।
আজ সোমবার দুপুরে আখাউড়া টেকনিক্যাল ইসলামিয়া আলীম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য বাবুল পারভেজ এই প্রতিবেদকের উপর হামলা চালিয়ে তার সঙ্গে থাকা ক্যামেরাপার্সন জুয়েলুর রহমানের কাছ থেকে টেলিভিশন ক্যামেরাটিও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে তারা সেখান থেকে রক্ষা পায়।
এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে আখাউড়ায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এদিকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় শীর্ষ নেতারা এ ঘটনার জন্য সাংবাদিকদের কাছে দু:খ প্রকাশ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, এ সংক্রান্ত সংবাদ সংগ্রহ করতে সময় টিভির ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্যুরো প্রধান উজ্জল চক্রবর্তী ওই মাদ্রাসায় যান। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে মাদ্রাসার দোতলা থেকে নামার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পরচিালনা কমিটির সদস্য বাবুল পারভেজ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে উজ্জল চক্রবর্তীর উপর হামলা করেন। এ সময় ব্যবসায়ি জাহাঙ্গীর আলমও (ওয়ালটনের ডিস্ট্রিবিউটর) তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এক পর্যায়ে সময় টিভির ক্যামেরাটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাবুল পারভেজ এ সময় উজ্জল চক্রবর্তীকে চাকরিচ্যুত করা এমনকি হত্যারও হুমকি দেন। জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে কেটে টুকরো টুকরো করে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আখাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজহারুল ইসলাম ও স্থানীয় সাংবাদিকরা উজ্জল চক্রবর্তীকে মাদ্রাসা থেকে বের করে নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক উজ্জল চক্রবর্তী জানান, মাদ্রাসা শিক্ষকদের অনুমতি নিয়ে তিনি ওই মাদ্রাসায় কাজ করতে যান। কাজ শেষ করে দোতলা থেকে নামার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পরচিালনা কমিটির সদস্য বাবুল পারভেজ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে তার সাথে অসৌজন্য মূলক আচরন করেন। এ সময় বাবুল পারভেজ নিজেকে আইন মন্ত্রীর লোক আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের আওয়ামলীগ নেতা বলে সাংবাদিক উজ্জল গায়ে হাত তুলেন। এসময় বাবুল এবং তার সাঙ্গ পাঙ্গরা সাংবাদিক উজ্জল চক্রবর্তীর কাছ থেকে মানিব্যাগ এবং গলায় থাকা স্বর্নের চেইনের একটি অংশ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে তিনি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সাংবাদিকদের কে তাৎক্ষনিক ভাবে অবগত করেছেন।
এবিষয়ে আখাউড়া পৌর সভার মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘সাংবাদিকদেরকে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন করতে দেওয়া উচিত। কিন্তু এভাবে তাকে নাজেহাল করা ঠিক হয়নি’।
আখাউড়া উপজেলা আওয়ামলীগের আহবায়ক জয়নাল আবেদিন বলেন,সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়টি দু:খ জনক। তিনি বলেন এ ব্যাপারে আমরা খোজ খবর নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করব।
এদিকে এরই মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষক বিল্লাল আহমেদকে শোকজ করা হয়েছে। বর্তমানে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল রোববার বিকেলে আখাউড়া টেকনিক্যাল ইসলামিয়া আলীম মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ঝর্ণা আক্তার, রাবেয়া আক্তার ও সামিয়া আক্তারকে পিটিয়ে আহত করেন ওই মাদ্রাসার শিক্ষক ও উপজেলা জামায়াত আমীর বিল্লাল আহমেদ। এর মধ্যে ঝর্ণা আক্তার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
এ ঘটনায় মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. ফোরকান উদ্দিন খলিফা রাতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। নোটিশ পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।






Shares