ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরো ছয়জন করোনা সংক্রমিত , মোট আক্রান্ত ৩৯
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় তিন শিশুসহ নতুন করে ৬ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে জেলার বাঞ্চারামপুরে ৩ জন, বিজয়নগরে ১ জন, আখাউড়ায় ১ জন ও নাসিরনগরে ১ জন। এ নিয়ে জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯-এ।
এদিকে আখাউড়ায় আক্রান্ত রোগী রেলওয়ে স্টেশনের ‘ভবঘুরে’ হওয়ায় আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনকে লকডাউন করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ৭ এপ্রিল রাতে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মারা যাওয়া মালয়েশিয়া প্রবাসীর ১৯ বছর বয়সী আরেক ছোট ভাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ওই প্রবাসীর পরিবারে করোনায় আক্রান্ত হলেন ৬ জন।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ অভিজিৎ রায় বলেন, প্রচন্ড জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও সর্দি নিয়ে গত ৭ এপ্রিল রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার পথে ৩৫ বছর বয়সী এক মালয়েশিয়া প্রবাসী মারা যায়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ওই প্রবাসীর নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠালে তার করোনা পজেটিভ আসে। পরবর্তীতে প্রবাসীর স্ত্রী, মেয়ে ও দুই ভাইয়ের করোনা পজিটিভ আসে। গত ১৮ এপ্রিল প্রবাসীর আরেক ভাইয়ের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠালে সোমবার সকালে তার রিপোর্টে করোনা পজেটিভ আসে।
তিনি বলেন, প্রবাসীর পরিবারের আক্রান্ত সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া বক্ষব্যাধি হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন। নতুন আক্রান্তকে সোমবার আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের এক ভবঘুরের করোনা পজেটিভ এসেছে। তাকে সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বক্ষব্যাধি হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। তবে তার শরীরে কোনো উপসর্গ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ব্যক্তির বাড়ি কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার হরিচর গ্রামে। তিনি আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনেই থাকতেন। সম্প্রতি ভৈরবের এক ব্যক্তির সাথে তার চলাফেরা দেখে স্থানীয় লোকজন সংশ্লিষ্টদের খবর দেন। গত ২২ এপ্রিল ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠালে সোমবার তার নমুনার ফল পজেটিভ আসে। পরে তাকে খুঁজে বের করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বক্ষব্যাধি হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কারা কারা তার সংস্পর্শে এসেছিলেন তাদের খোঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনকে লকডাউন করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, বাঞ্চারামপুরের দুই শিশু ঢাকায় পরীক্ষা করানোর পর তাদের রেজাল্ট পজেটিভ আসে। তাদেরকে ঢাকাতেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন, চারজন আইসোলেশনে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বক্ষব্যাধি হাসপাতালের আইসোলেশনে আছেন ১৯ জন, বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টেনে আছেন ৬ জন এবং হোম কোয়ারিন্টেনে আছেন ২৬ হাজার ২৯৮ জন।