Main Menu

আপডেট : ভয়াবহ টর্নেডোতে চার নারী, শিশুসহ ১০ জন নিহত ও পাঁচ শতাধিক আহত

+100%-

মনিরুজ্জামান পলাশ ও সুমন নূর ঘটনাস্থল থেকে ফিরে : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ও বিজয়নগর উপজেলার প্রায় ১৫ টি গ্রামে ভয়াবহ টর্নেডোতে চার নারী, শিশুসহ ১০ জন নিহত ও কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় আঘাত হানা টর্নেডোতে অন্তত পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে জেলা সদর হাসপাতালে পাঁচজন ও আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচজনসহ ১০ জন নিহত হয়েছে।

প্রত্যদর্শীরা জানায়, শুক্রবার বিকেল ৫টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের বিভিন্ন স্থানে বৃহৎ আকারের শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর টর্নেডোর তান্ডব শুরু হয়। সদর উপজেলার রামরাইল, মাছিহাতা, সুলতানপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের উপর ভয়াবহ টর্নেডো আঘাত হানে। এসময় কুমিলা-সিলেট মহাসড়কের পার্শ্বে যানবাহনের উপর গাছ উপড়ে পড়লে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়ে যায়।

এছাড়া বহু সিএনজিসহ বিপুল সংখ্যক গাড়ির উপর গাছ ভেঙ্গে পড়ে। এতে বাসযাত্রীরা গুরুতর আহত হয়। টর্ণেডোর আঘাতে দুই মহিলাসহ ৩জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে হলেন উরশিউড়া গ্রামের ডলী রানী দে (৩০), লাভলী বেগম (৩০), গুরুতর আহত দেড় শতাধিক মানুষকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের সদর হাসপাতাল সহ শহরের বিভিন্ন কিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।


টর্নেডোর সময় জেলা কারাগারের পশ্চিম পার্শ্বের দেয়াল ধ্বসে পড়েছে। টর্নেডোর ছোবলে এখন পর্যন্ত এক কারারী নিখোঁজ রয়েছে। কি পরিমান য়তি হয়েছে তা জানা যায়নি। ঘটনার পর পরই গ্রামবাসী, আইন শৃংখলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস আহত নিহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কুমিলা-সিলেট মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘটনার পর পরই বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে ওই এলাকায়। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
আখাউড়া উপজেলার টর্নেডোর ছোবলে অর্ধশত লোক আহত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে ২ শতাধিক বাড়িঘর।



জেলা সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ আবু সাঈদ ৩জন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, রাত ৭টা পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী আসছে। এর পরিমান সঠিক ভাবে বলা যাবে না।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন চাকমা টর্নেডোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছি। হিসেব না করে ক্ষয়ক্ষতি পরিমান বলা যাবে না।

আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা.মো.শাহাআলম জানিয়েছেন,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সুমি আক্তার (১০) এবং জয়নাল মিয়া (৩২) রয়েছেন। তারা দুজন সদর উপজেলার জারুলতলা গ্রামের বাসীন্ধা। অন্য তিনজনের লাশ পরিবারের লোকজন নিয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি তাদের পরিচয় তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসাপাতালের বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ও আবাসিক চিকিৎসক ডা.আবু সাঈদ জানিয়েছেন,সদর হাসপাতালে মোট ৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলার পাতিরহাতা গ্রামের ডলি দেব(২৫), বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লাভলী আক্তার (৩৫) রয়েছে। তাছাড়া ৩০ বছরের অজ্ঞাত এক পুরুষের লাশ সদর হাসপাতালে পড়ে রয়েছে। বাকিদের পরিচয় তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।

আখাউড়া জংশনের লোকোশেড ইনচার্জ মো.মহসিন ভূইয়া জানিয়েছেন,সদর উপজেলার ভাতশালা রেলওয়ে স্টেশনে গাছ পড়ে থাকায় টর্নেডোর পর থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি জানান,আমরা কিছুক্ষনের মধ্যেই উদ্ধারকাজ শুরু করবো।

জেলা প্রশাসক নূর মোহাম্মদ মজুমদার জেলা সদর হাসপাতালে ৫ জন নিহতের কথা স্বীকার জানিয়েছেন,ইতিমধ্যে নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের পরিবারকে ৫ হাজার টাকা, ১ বান্ডেল টিন এবং ২০ কেজি চাল দেওয়ার ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া টর্ণেডোটি ১৫ মিনিট স্বায়ী হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

১২ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্ণেল মাকসুদুল আলম জানিয়েছেন,বিভিন্নস্থানে নিরাপত্তা এবং সহায়তার জন্য বিজিবি’র মোট ৯টি পেট্রোল দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ইতিমধ্যে বিজিবির একটি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া সেনাবাহিনীর থেকে একটি মেডিক্যাল টিম চাওয়া হয়েছে। 






Shares