Main Menu

হ্যারি-মেগান: রাজকীয় দায়িত্ব ত্যাগ ছাড়া উপায় ছিল না, বললেন ব্রিটিশ সিংহাসনের দাবিদারদের একজন প্রিন্স হ্যারি

+100%-

ব্রিটেনের রাজসিংহাসনের দাবিদারদের একজন প্রিন্স হ্যারি জানিয়েছেন, তিনি ‘বিশ্বাসের ওপর ভর’ করে রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এছাড়া তার ‘সত্যি আর কোন উপায় ছিল না’।

রোববার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে প্রিন্স হ্যারি বলেন, তিনি এবং মেগান রানি ও রাজপরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেজন্য কোন সরকারি অর্থ বরাদ্দ নিতে চাননি।

“দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সেটা সম্ভব ছিল না।”

সাবেক অভিনেত্রী স্ত্রী মেগানকে নিয়ে রাজকীয় উপাধি ও দায়িত্ব ত্যাগ করার ঘোষণা দেবার পর এই প্রথম কোন বক্তৃতা দিলেন প্রিন্স হ্যারি।

কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, তিনি পরিষ্কার করে বলতে চান যে, তিনি এবং মেগান ‘রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন না।’

“যুক্তরাজ্য আমার বাড়ি এবং এই জায়গাটাকে আমি সবচেয়ে ভালোবাসি—এই অনুভূতি কখনো বদলাবে না।”

এর আগে এক যৌথ বিবৃতিতে প্রিন্স হ্যারি এবং তার স্ত্রী মেগান জানান, তারা রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন এবং বলেছেন, তারা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হবার জন্য কাজ করতে চান।

বক্তৃতায় প্রিন্স হ্যারি কী বলেছেন?

আফ্রিকার এইচআইভি আক্রান্ত শিশুদের জন্য প্রিন্স হ্যারির দাতব্য প্রতিষ্ঠান সেন্টেবালির এক তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে লন্ডনে কথা বলেন তিনি।

“আমি অনুমান করতে পারি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আপনারা আমাদের বিষয়ে কী কী শুনেছেন। কিন্তু আমি চাই আপনারা আমার মুখ থেকেই সত্যটা শুনুন। আমি যতটা বলতে পারি, একজন রাজকুমার বা ডিউক হিসেবে না, কেবল হ্যারি হিসেবে।”

দাদী ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে নিজের ‘কমান্ডার ইন চিফ’ সম্বোধন করে প্রিন্স হ্যারি বলেন, তার প্রতি ‘সব সময় পরম শ্রদ্ধা’ থাকবে।

“আমাদের ইচ্ছে ছিল সরকারি অর্থ না নিয়ে রানীর প্রতি, কমনওয়েলথের প্রতি এবং আমার সামরিক সংস্থার প্রতি দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাওয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা সম্ভব ছিল না।”

“আমি এটা মেনে নিয়েছি, যদিও জানি এতে আমি কে বা আমার কতটা দায়িত্ববোধ আছে সেসবের কিছুই বদলাবে না।”

শনিবার রানি, রাজপরিবারের ঊর্ধ্বতন সদস্যগন এবং এই জুটির মধ্যে এক আলোচনায় হ্যারি ও মেগান একমত হয়েছেন এখন থেকে তারা আর আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতিনিধিত্ব করবেন না।

আসছে বসন্ত থেকে তাদের নামের আগে রাজউপাধি আর ব্যবহৃত হবে না, এবং আনুষ্ঠানিক সামরিক দায়িত্বসহ তাদের রাজকীয় সব দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হবে।

যদিও, বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাজপরিবার হ্যারি ও মেগানের জন্য নিজস্ব পৃষ্ঠপোষকতা এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা চালিয়ে যাবে।

‘চ্যালেঞ্জের সময়’

এই যুগলের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা বক্তৃতায় প্রিন্স হ্যারি বলেছেন, তাদের যখন বিয়ে হয় তখন ‘আমরা খুবই উদ্দীপ্ত ছিলাম, আশাবাদী ছিলাম, এবং আমরা রাজপরিবারের সেবা করতে চেয়েছিলাম’।

“সে কারণেই এটা ভেবে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে যে এটা আজ এই পর্যায়ে পৌঁছেছে। আমার স্ত্রী এবং আমার নিজের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়াটা খুব সহজ বা হালকা ব্যাপার ছিল না।”

“বহু বছরের চ্যালেঞ্জের পরে বহু মাস ধরে কথাবার্তা চলার পর, এবং আমি জানি আমি সব সময় সবকিছু ঠিকঠাক করতেও পারিনি। কিন্তু যেভাবে চলছিল, তাতে আসলেই এ ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না।”

এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ যুগলের ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন।

পুত্র আর্চিকে নিয়ে ভ্যানকুভার দ্বীপে ছয় সপ্তাহের ছুটি কাটানোর পর হ্যারি এবং মেগান জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাজ্য এবং উত্তর আমেরিকায় তাদের সময় ভাগাভাগি করে থাকতে চান।

মেগান মার্কেল বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে কানাডার ওয়েস্ট কোস্টে রয়েছেন। এর আগে এ মাসের শুরুতে কয়েকদিনের জন্য যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন তিনি।

গত ৮ই ডিসেম্বর হ্যারি এবং মেগান ঘোষণা করেন যে, তারা রাজপরিবারের সামনের কাতারের দায়িত্ব থেকে অবসর নিতে চান।

তারা এই ঘোষণা দিয়েছিলেন রানি বা রাজপরিবারের কোন সদস্যের সঙ্গে আগাম আলোচনা ছাড়াই। এজন্যেই এ ঘটনা এত তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করে।






Shares