১৪তম তারাবিতে পঠিত আয়াতসমূহের সারাংশ
আজ ১৪তম তারাবিতে সূরা আম্বিয়ার শুরু থেকে সূরা হাজ্জ এর শেষ পর্যন্ত পড়া হবে। পারা হিসেবে আজ পড়া হবে সতেরতম পারা। পাঠকদের জন্য আজকের তারাবিতে পঠিত অংশের মূলবিষয়বস্তু তুলে ধরা হল।
২১. সূরা আম্বিয়া : ১-১২২
মক্কায় অবতীর্ণ সূরা আম্বিয়ার আয়াত সংখ্যা ১২২ এবং রুকু সংখ্যা সাত। আজ পঠিত হবে পুরো সূরাই।
প্রথম রুকু। ১-১০ নম্বর আয়াতে সত্য অস্বীকারকারীদের সংক্ষেপে হুশিয়ার করা হয়েছে যে, তাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে অথচ তারা এখনো গাফেল। তারা নবী এবং কোরআন এ দুটোকেই অবিশ্বাস করছে।
দ্বিতীয় রুকু। ১১ থেকে ২৯ নম্বর আয়াতে যারা ক্রমাগত সত্য অস্বীকার করে এসেছে, অতীতে তাদের কী ভয়াবহ পরিণত হয়েছে তা বলে বর্তমান সত্য অস্বীকারকারীদের সতর্ক করা হয়েছে।
তৃতীয় ও চতুর্থ রুকু। ৩০ থেকে ৫০ নম্বর আয়াতে এ যুগের সত্য অস্বীকারকারীদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন যার প্রকৃত উত্তর খুঁজতে গেলে মন ও বিবেক অবনত চিত্তে সত্য গ্রহণ করে নিতে বাধ্য হবে।
পঞ্চম রুকু। ৫১ থেকে ৭৫ নম্বর আয়াতে হজরত ইবরাহিম (আ.) এর দৃষ্টান্ত দেয়া হয়েছে। কীভাবে তাকে সত্য গ্রহণের মানসিকতা দান করা হয়েছে এবং তিনিও কীভাবে কঠোর সাধনার মাধ্যমে সত্য গ্রহণ করেছিলেন সে কথাই বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে সত্যের দাওয়াত দিতে গিয়ে তিনি কীভাবে প্রজ্ঞা এবং জ্ঞানের ব্যবহার করেছিলেন। তারপরও তার জাতি সত্য গ্রহণ করেনি বরং উল্টো তাকেই আগুনে পুড়িয়ে মারার ষড়যন্ত্র করেছিলো।
ষষ্ঠ রুকু। ৭৬ থেকে ৯৫ নম্বর আয়াতে সংক্ষেপে নূহ, দাউদ, সোলায়মানসহ আরো অন্যান্য নবীর দৃষ্টান্ত দিয়ে বোঝানো হয়েছে সত্য মেনে নেওয়ার গুরুত্ব এবং আল্লাহর বিধান অস্বীকারের ভয়াবহতা কী।
সপ্তম তথা শেষ রুকু। ৯৬ থেকে ১২২ নম্বর আয়াতে বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে আলাদা আলাদা নসিহতের মাধ্যমে সূরার সমাপ্তি টানা হয়েছে।
২২. সূরা হাজ্জ : ১-৭৮
সূরা হাজ্জ। নাজিল হয়েছে মদিনায়। এর আয়াত সংখ্যা ৭৮ এবং রুকু মোট দশটি। পূর্ণ সূরা তেলাওয়াতের মাধ্যমেই শেষ হবে আজকের তারাবি।
প্রথম রুকু। ১ থেকে ১০ নম্বর আয়াতে মানুষকে মহাপ্রলয় দিবস সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় রুকু। ১১ থেকে ২৫ নম্বর আয়াতে কেয়ামতে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের আচরণ-প্রকৃতি, ধ্যাণ-ধারণা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
চতুর্থ রুকু। ২৬ থেকে ৩৩ নম্বর আয়াতে হজের ফরজিয়াত এবং ষষ্ঠ রুকু, ৩৪ থেকে ৩৮ নম্বর আয়াতে কোরবানির বিধান ঘোষণা করা হয়েছে।
ষষ্ঠ রুকু। ৩৯ থেকে ৪৮ নম্বর আয়াতে আক্রান্ত এবং অত্যাচারিত হলে যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়েছে মোমিনবাহিনীকে। পাশাপাশি এও বলা হয়েছে, যদি মোহাম্মাদ (সা.)কে অস্বীকার করা হয় তবে এতে আশ্চর্য বা বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। পূর্ববর্তী নবীদেরও ঠিক একইভাবে অস্বীকার করা হয়েছিলো।
সপ্তম রুকু। ৪৯ থেকে ৫৭ নম্বর আয়াতে রাসুল (সা.)কে উদ্দেশ্যে করে কিছু নসিহত করা হয়েছে, যাতে করে সত্য অস্বীকারকারীদের মোকাবেলায় সবর এবং আল্লাহর সাহায্য নিয়ে সামনে আগানো যায়।
অষ্টম রুকু। ৫৮ থেকে ৬৪ নম্বর আয়াতে যারা আল্লাহর পথে নির্যাতিত হয়ে হিজরত করেছে তাদের মর্যাদা বর্ণনা করা হয়েছে। মোহাজিরদের পক্ষে আল্লাহ সবসময় ছিলেন এবং থাকবেন এ কথাও বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, আল্লাহই সত্য। তাকে ছাড়া বাকী সব উপাস্য বস্তুই মিথ্যা। তাই একাগ্রচিত্তে কেবল আল্লাহর আনুগত্যই করে যেতে থাকো হে মানুষ!
নবম ও দশম তথা শেষ রুকু। ৬৫ থেকে ৭৮ নম্বর আয়াতে মানুষকে সম্বোধন করে বারবার বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে বোঝানো হচ্ছে আল্লাহ কেমন সত্তা? কেন তার প্রতি বিশ্বাসী হতে হবে? তার প্রতি বিশ্বাসী হলে কী লাভ আর অবিশ্বাসী হলেই বা কত ক্ষতি- এসব বিষয় বলেই সূরা শেষ করা হয়েছে।