Main Menu

মুরাদনগর ডালপা গ্রামের দুই শিক্ষকের কান্ড : জাহের মিয়া জমির দলিল নিয়ে নানা প্রশ্ন?

+100%-

বিশেষ প্রতিনিধি সরেজমিন থেকে ফিরে খ.ম.হারুনুর রশীদ ঢালী ঃ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার আন্দিকোট ইউপির ডালপা গ্রামের দুই শিক্ষকের কান্ড নিয়ে তুলকালাম ভূতের কান্ড সৃষ্টি হয়েছে। আন্দিকোট ইউপির ডালপা গ্রামের পিতা মৃত আলহাজ্ব ছোবান মিয়ার দুই পুত্র  শিক্ষক মো.নজরুল ইসলাম ও শিক্ষক মো.আবুল কালাম আজাদ টাকার প্রয়োজনে ৯৫শতক জমি বিক্রি করে, চুক্তি নামায় স্বাক্ষীগণের সামনে স্বাক্ষর করে নগদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা গ্রহণ করে সাবদলিল না দেওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। আন্দিকোট ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত ভাবে বিচার চেয়ে ও চেয়ারম্যানের নোটিশের ডাকে সারা দেননি বিক্রিতা দুই শিক্ষক।
অবশেষে ক্রয়দাতা জাহের মিয়া গত ১৯ নভেম্বর কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ও মুরাদনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর বৃদ্ধ জাহের মিয়া জমির দলিল কবে পাবে এই নিয়ে গ্রামবাসীর প্রশ্ন উঠেছে ? এই বিষয়ে সরেজমিনের বিশেষ প্রতিবেদন।

 

জাহের মিয়া জানান (ছবি-০১)
কুমিল্লা জেলার আন্দিকোট ইউপির ডালপা গ্রামের পিতা মৃত আলহাজ্ব ছোবান মিয়ার দুই পুত্র মোঃ নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল কালাম আজাদের টাকার প্রয়োজনে (একই বাড়ির চাচাতো ভাই এরশাদ মিযার শুশুড় ) তালুই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউপির গোলাসার গ্রামের পিতা মৃত-বারিক মিয়া কে ক্রয়ের প্রস্তাব দিলে সরল বিশ্বাসে মুদরাদনগর সাবেক ৯৮ হালে ২৮ দাগের ডালপা মৌজাস্থিত সাবেক দাগ ৩৪৪৪, ৩৪৪৫, ৩৪৪৬ এর অধীনে ৯৫ শতক নাল জমি ১লাখ ৯০হাজার ক্রয় সূত্রে যত্নবান হয়ে গত ১৯-০৪-২০০৯ইং এক চুক্তিনামায় ২০জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষরে ১শত ৫০টাকার ট্যাম্পের মাধ্যমে এডভোকেট আতিকুল ইসলাম লেখকের সম্পাদনায় এক চুক্তিনামা করা হয়। এবং বিক্রিত জমিটি দুই ভাই মো.নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল কালাম আজাদ তালুই জাহের মিয়াকে দখল বুঝাইয়ে দেয় এবং ব্যাংক থেকে দলিল এনে সাব দলিল করে দেওয়ার অঙ্গিকার করে। এই দিকে বিক্রিত জমির দলিল আজ না কাল দিবে দিচ্ছি বলে ঘুরাইতে থাকে। ডালপা গ্রামের মানুষের কাছে বিচার চেয়েও আজও কোন সুবিচার পায়নি জাহের মিয়া। পরিশেষে আন্দিকোট ইউপি চেয়ারম্যান ও ৯নং ওয়ার্ড মেম্বারের নিকট বিচার চেয়েও বিমুখ হতে হয়েছে। অবশেষে গত ১৯-১১-২০১৩ইং কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ও মুরাদনগর অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এর নিকট পৃথক পৃথক ভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। অফিসার ইনচার্জ এস আই নাজমূল ইসলামকে তদন্তক্রমে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন।
গত ২১ নভেম্বর সাংবাদিকরা সকালে ঘটনাস্থল ডালপা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে জমিবিক্রি, বিক্রিত ৯৫ শতক জমির ১লাখ ৯০হাজার টাকা গ্রহণ, বিক্রিত জমি দখল বুঝিয়া দেওয়ার সকল সততা খুজে পাওয়া যায়। অপরদিকে গ্রামে দুই ভাই প্রভাবশালী ও একশ্রেণীর খারাপ প্রকৃতির লোকদের হাত করে এরশাদ নামে এক ব্যক্তির কাছে বসতবাড়ির জায়গা বিক্রি করেও দলিল না দিয়ে তালবাহানা করার বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। অসহায় বৃদ্ধ জাহের মিয়া জানান বিক্রিত জমির মালিক দুই ব্যক্তি এলাকায় গেলে মিথ্যা মামলা হামলার ভয়ভিতি সহ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে থাকে। তার কারণ জানতে চাইলে বলেন কেন আমি গ্রামবাসীকে জানাইলাম এবং বিচার প্রার্থী হলাম। আমি ডালপা গ্রামবাসী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা  করছি।


মতিউর রহমান জানান (ছবি-০২)
ডালপা গ্রামের বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিউর রহমান জানান মৃত আলহাজ্ব ছোবান মিয়ার দুই পুত্র মো.নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল কালাম আজাদ তাদের ৯৫শতক জমি জাহের মিয়ার কাছে নগদ টাকায় বিক্রি করে দখল বুঝিয়া দেন। কিন্ত হলফনামায় স্বাক্ষী গণের সামনে সাবদলিল করার অঙ্গিকার দিয়েও দলিল সম্পাদান করে দেননি। তা খুবই দুঃখজনক এবং আমি বিক্রিত চুক্তিনামায় এক জন স্বাক্ষী বটে।  

বাহার উদ্দিন মেম্বার জানান (ছবি-০৩)
ডালপা গ্রামের বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও আন্দি কোট ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. বাহার উদ্দিন জানান মৃত আলহাজ্ব ছোবান মিয়ার দুই পুত্র মো.নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল কালাম আজাদ তাদের ৯৫শতক জমি জাহের মিয়ার কাছে নগদ টাকায়  বিক্রি করে দখল বুঝিয়া দেন। কিন্তু হলফনামায় স্বাক্ষী গণের সামনে সাবদলিল করার অঙ্গিকার দিয়েও দলিল সম্পাদান করে দেননি। আমি বারবার চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারেনি। বরং দুই শিক্ষক বাদিকে মামলার করার কথা আমাকে বলেন। তা খুবই দুঃখজনক এবং আমি বিক্রিত চুক্তিনামায় এক জন স্বাক্ষী বটে।

আলী আহাম্মদ জানান  (ছবি-০৪)
ডালপা গ্রামের আলী আহাম্মদ মিয়া জানান, এই ৯৫শত জমির মালিক মৃত আলহাজ্ব ছোবান মিয়ার দুই পুত্র মো.নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল কালাম আজাদের হাতে দুই দাগে ১লাখ ৯০হাজার টাকা স্ব হাতে প্রদান করার কথা শত শত উপস্থিত লোকজনের সামনে জানান। বিক্রিত জমি দখল দিয়েও সাব কাবলা না করে দেওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমিও সহজ সরল জাহের মিয়া যেন ন্যায় বিচার পাওয়ার দাবী করছি এবং আমি বিক্রিত চুক্তিনামায় এক জন স্বাক্ষী বটে।

এডভোকেট আতিকুল ইসলাম জানান (ছবি-০৫)
ডালপা গ্রামের বিশিষ্ট এডভোকেট ও শিক্ষক আতিকুল ইসলাম জানান মৃত আলহাজ্ব ছোবান মিয়ার দুই পুত্র মো.নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল কালাম আজাদ আমার বন্ধু মানুষ ও সহপাটি বটে। কিন্ত হলফনামায় স্বাক্ষী গণের সামনে সাবদলিল করার অঙ্গিকার নামায় আমার সম্পাদান করে দিয়েও আজ পর্যন্ত সাব দলিল করে দেননি। তা খুবই দুঃখজনক। তাদের ৯৫শতক জমি জাহের মিয়ার কাছে নগদ টাকায়  বিক্রি করে দখল বুঝিয়া দেন। আমি তাদেরকে দলিল প্রদানে বার বার বলেছি।

নুরু মিয়া জানান  (ছবি-০৬)
ডালপা গ্রামের নুরু মিয়া জানান মৃত আলহাজ্ব ছোবান মিয়ার দুই পুত্র মো.নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল কালাম আজাদ  সমাজে শিক্ষক নামের কলংক । জমি বিক্রি করে দিয়ে আজ সাব দলিল না দেওয়ার যে প্রতারণা করেছে তার বিচার হওয়া দরকার। জাহের মিয়া টাকা দিয়ে এই বয়সে মানুষের দ্বারে দ্বারে হয়রানি হবে কেন? এবং আমি বিক্রিত চুক্তিনামায় এক জন স্বাক্ষী বটে।

গ্রামের সাধারণ মানুষের অভিমত (ছবি-০৭)
মুরাদনগর থানার ডালপা গ্রামের মৃত আলহাজ্ব ছোবান মিয়ার দুই পুত্র মো.নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল কালাম আজাদ  দুই জনই শিক্ষক। তারা শিক্ষক হয়ে যে অন্যায় করছে তা অতিব দুঃখজনক। তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার হওয়া দরকার বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ।

আন্দিকোট ইউপি চেয়ারম্যান
মুরাদনগর উপজেলার ৩নং আন্দিকোট ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক জানান বাদি জাহের মিয়ার জমিসংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলার ডালপা গ্রামের মৃত আলহাজ্ব ছোবান মিয়ার দুই পুত্র মো.নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল কালাম আজাদকে নোটিশগত ৩০ অক্টোবর স্ব স্বাক্ষরের গত ০৬ নভেম্বর প্রমাণসহ স্বাক্ষী নিয়ে স্ব কার্যালয়ে হাজির  হওয়ার কথা থাকলেও তারা ঐ তারিখে উপস্থিত হননি।

মুরাদনগর থানার ওসি জানান
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ জানান জাহের মিয়া গত ১৯ নভেম্বর থানায় একটি অভিযোগ প্রদানের ফলে উক্ত থানার এসআই নাজমূল ইসলামকে সরেজমিনে তদন্ত ক্রমে আইনগত ব্যবস্থার নির্দেশ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এস আই নাজমূল ইসলাম জানান
মুরাদনগর থানার উপ-পুলিশপরিদর্শক মো.নাজমূল ইসলাম জানান আমি গত ১৯ নভেম্বর বাদি জাহের মিয়ার অভিযোগটি অফিসার ইনচার্জ এর মাধ্যমে মতামত প্রাপ্ত হয়েছি। আমি সরেজমিনে গিয়ে তদন্তক্রমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। দুই শিক্ষকের সাথে বহু চেষ্টা করেও তাদের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। তাই তাদের অভিমত প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।






Shares