নবীনগরে এক মিটার রিডারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারীদের বিক্ষোভ; ডিজিএম কক্ষে অবরু
নবীনগর প্রতিনিধি :: পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা জোনাল অফিসের একজন মিটার রিডারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ওই অফিসের বিক্ষুব্দ কর্মচারীরা জোনাল অফিসের ডিজিএম শংকর চন্দ্র দাসকে প্রায় সাড়ে তিনঘন্টা তাঁর কার্যালয়ে তালাবদ্ধ (অবরুদ্ধ) করে রাখে। এ সময় বিক্ষুব্দ কর্মচারীরা ওই ডিজিএম এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে তার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. মোবারক হোসেন, নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু শাহেদ চৌধুরী ও উপ-পরিদর্শক (এস আই) মেজবাহ উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডিজিএমকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
সরজমিনে বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএমকে তাঁর কার্যালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ করে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে অফিসের নারী স্টাফসহ প্রায় অর্ধশত কর্মচারী তাঁর (ডিজিএম) বিচারের দাবিতে বিভিন্ন ধরণের শ্লোগান দিচ্ছেন।
এসময় মিটার রিডার কামাল হোসেন, খলিলুর রহমানসহ একাধিক কর্মচারী অভিযোগ করেন,‘গত বৃহস্পতিবার রাতে অত্র অফিসের মিটার রিডার আলী হোসেনের ডিউটি না থাকা সত্তেও ডিজিএম স্যার জোরপূর্বকভাবে তাকে প্রায় ২৫ কি.মি দূরের এক গ্রামে নৈশকালীন ডিউটিতে পাঠান। সেখান থেকে আসার পথে আলী হোসেন সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন।
পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে মারা যান। এ মৃত্যুর খবর শোনার পরই কর্মচারীরা ডিজিএম স্যারের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তাকে তাঁর কার্যালয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে।’
ডিজিএমএর বিরুদ্ধে মিছিলকারী একাধিক কর্মচারী অভিযোগ করেন,‘ডিজিএম এর রুঢ় আচার আচরণে কর্মচারীরা এতটাই অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল, যে এই অনাকাংখিত মৃত্যুর পর সেটির আজ চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটে। যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে এখান থেকে বদলী না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই অফিসে আর শৃংখলা আসবে না।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডিজিএম শংকর দাস বলেন,‘এ সবই মিথ্যা অভিযোগ। মিটার রিডার সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর আমি নিজে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে তার সুচিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠাই। মূলত: আমি সম্প্রতি যোগ দিয়ে এই অফিসের নানান অনিয়ম ও দূর্নীতি বন্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করায়, অফিস স্টাফরা আমার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এর সুষ্ঠু তদন্ত হলেই আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ টিকবেনা।’
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া অফিসের জেনারেল ম্যানেজার ( জিএম) মো. মোবারক হোসেন বলেন,‘নবীনগরের ইউএনও ও পুলিশের সহায়তায় একটি তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে অবরুদ্ধ ডিজিএমকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে এসেছি। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্তের পর দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’