এস.এ.রুবেল : অব্যাহত লোকসানের মুখে ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নবীনগরের পোল্ট্রি শিল্প। যার কারনে ইতিমধ্যেই প্রায় পাঁচশ’র ছোট, বড় খামারের মধ্যে দুই’শর অধিক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। লোকসানের কারণে খামারিরা পোল্ট্রি ব্যবসা ছেড়ে অন্য দিকে ঝুঁকছেন। জানা যায় মুরগির খাদ্য ঔষুধ,বাচ্চার দাম, শ্রমিক মজুরি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও বয়লার মুরগি ও ডিমের দাম তেমন বাড়েনি। খামারিদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ব্যবসায় দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। এই কারনে খামার মালিকরা অব্যাহত লোকসানের সম্মুখীন হয়ে একের পর এক খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। নব্বই দশকের পর থেকে নবীনগরে ব্যাপক ভাবে মুরগি খামারের বেশ প্রসার ঘটেছে। লাভজনক হওয়ায় এই ব্যবসায় অনেকেই ঝুঁকে পরেন। ২০০৭ সালে ব্যাপক হারে বার্ড ফুর কারনে মুরগির খামার ব্যবসায় ধস নামতে শুরু করে। ২০০৯ সালে দুর্যোগ কাটিয়ে খামার ব্যবসা শুরু হলেও এক দিকে মুরগির বাচ্চার দাম ও খাদ্য এবং ওষুধের মূল্য বৃদ্ধির কারনে লাভের মুখ দেখতে পায়নি খামারিরা। ফলে অব্যাহত লোকসানের মুখে খামারিরা একের পর এক খামার বন্ধ করে দিয়ে অন্য ব্যবসায় চলে যাচ্ছেন। সূত্র জানায় ২০০৮ সালের দিকে নবীনগরে ৫০০ পোল্ট্রি খামার ছিলো। অব্যাহত লোকসানের কারনে খামারিরা এপর্যন্ত অধিকাংশ খামার করে দিয়েছে। অবশিষ্ট খামারগুলো এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম। নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান মিয়ার ছেলে নুর মোহাম্মদ জানান ২০০৫ সালে মুরগি বিক্রি করতে গিয়ে দেড় লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। এর তিন মাস পরে আবার খামারে মুরগি পালন শুরু করি। দফায় দফায় লোকসানের পর লোকসান দিয়ে দেনাগ্রস্ত হয়ে খামার ছেড়ে অন্য ব্যাবসা ধরলাম। অপর দিকে সি্গংাপুর ফেরত একই গ্রামের ৭ নং ওয়ার্ডের এমরান মিয়া ২০০৭-০৮ সালের দিকে বাড়িতে মাঝাড়ী পরিসরে বয়লার খামার স্থাপন করেন। তিনি ও একাধারে পর পর লোকসান দিয়ে পৈতৃক জমি জমা বিক্রি করে ফের বিদেশে পাড়ি জমান। পাশের দোলাবাড়ী গ্রামের মৃত ফিরোজ মিয়ার ছেলে এরশাদ মিয়া ২০০৩ সালের দিকে বয়লার পোলট্রি খামার দিয়ে ব্যাবসা শুরু করেন। তার মধ্যে প্রাকৃতীক দূযোর্গ সর্বগ্রাসী বার্ড ফু ভাইরাসের কবলে পরে পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতির স¤ণি হন। পুনরায় পৈতৃক জমি জমা বিক্রি ও বন্ধক দিয়ে ঘুড়ে দাড়ানোর আশায় প্রায় ৩০০০ লেয়ার মুরগির বাচ্চার খামার তৈরি করেন। সেই সময়ে অব্যাহত লোডশেডিং এবং পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক আলোর অভাবে খামারে মুরগির ডিম উৎপাদন কমে যায়। ফলে ডিম পাড়া উপযুক্ত মুরগি লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে বাধ্য হন। যার ফলে কয়েক লক্ষ টাকার খাঁচা পদ্ধতি উপকরন ভাঙাড়ীর দড়ে বিক্রি করতে বাধ্য হন। তবু ও থেমে থাকেননি তিনি পুনরায় জীুবকার তাগিদে অর্থলগ্নি এনজিও ও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ঘুড়ে দাড়ানোর আাশায় পৈার এলাকার সোহাতা মোড়ে পোল্টি এবং লেয়ার ফিড ও ১ দিনের বয়লার বাচ্চার এজেন্ট নিয়ে ব্যাবসা আরম্ভ করেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে টিকে থাকতে পারেননি তিনি। বর্তমানে দেনা গ্রস্থ হয়ে স্ত্রী সন্তান পরিবার পরিজন ছেড়ে অজানা পথে নিরুদ্দেশ তিনি। একই ভাবে এই শিল্পে লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে আহমদপুরের অব: সেনা সদস্য গোলাম মোস্তফা, জীবন মিয়া, ও মুজিবর মিয়া, লাউর ফতেহপুরের মুতি মিয়া, কড়–ই বাড়ির গিয়াস উদ্দিন, রছুল্লাবাদ গ্রামের মনির হুসেন, মুতালিব হুসেন, শ্যামগ্রামের মদন মিয়া, মোশারফ হুসেন সহ আর ও অনেককে। এমনি ভাবে সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুড়ে খামারীদের এরূপ নানাহ সমস্যার কথা জানা যায়। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে জীবন যুদ্ধে টিকে থাকা খামার ষংগ্রামী এসব খামারীদের প্রতি সরকারী এবং বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে জামানত বিহীন লোন, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন, সেমিনার, ও উপকরন সামগ্রী নায্য মূল্যে হাতের কাছে পৌছে দেওয়ার সু-দৃষ্ঠি সহ সকল প্রযোজনীয় ব্যাবস্থা নিতে খামারীদের বিনীত প্রার্থনা। |