নবীনগরে লকডাউন ভেঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়রের নেতৃত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ, জানেন না ইউএনও
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের লকডাউন ভেঙ্গে জানাযায় লাখো মানুষের উপস্থিতির সমালোচনায় সারা দেশ । এরই মধ্যে আবারও লকডাউন ভেঙ্গে নবীনগরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে খোদ দুই জনপ্রতিনিধি। প্রতিবাদের বিষয়বস্তু নবীনগরে স্থানীয় এমপি এবাদুল করিম বুলবুলকে ফেসবুকে কটুক্তি। যদিও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির ও নবীনগর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস বলেছেন এটি প্রতিবাদ সমাবেশ নয়। এটি সাংবাদিক সম্মেলন। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তারা যে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সে বিষয়ে তথ্য এসেছে। আর এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান তিনি কিছুই জানেন না। তবে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানান।
জানা গেছে, নবীনগর উপজেলার থানাকান্দিতে পা কেটে পৈশাচিক খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়। আর আসামি করার ঘটনায় এমপি বুলবুলের হস্তক্ষেপ রয়েছে উল্লেখ করে কবির চেয়ারম্যানসহ তার অনুসারীরা ফেসবুকে বুলবুলের ছবি দিয়ে অশ্লীল ভাষায় এমপি বিরোধী নানা পোস্ট দিচ্ছেন। এর প্রতিবাদেই এ সভার আয়োজন করা হয়। শনিবারও বীরগাঁও বাজারে এমপি বুলবুল অনুসারীরা ফেসবুকে কটাক্ষকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লকডাউন উপেক্ষা করে রবিবার দুপুর ১২টায় উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে উপস্থিত হন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিনের পরিচালনায় সেখানে নবীনগর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুজিত কুমার দেব, যুবলীগ সভাপতি সামস আলম, শ্রমিকলীগ নেতা ফোরকান উদ্দিন মৃধা, শ্রীরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজহার হোসেন জামাল, নবীনগর বাজার কমিটির সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম জনিসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
বক্তারা ফেসবুকে এমপি বুলবুলকে নিয়ে কটাক্ষকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
তবে কিভাবে লক ডাউনের মধ্যে করলেন প্রতিবাদ সমাবেশ? তারা বলছেন সাংবাদিক সম্মেলন। সাংবাদিক সম্মেলন হলেও কি তারা তা করার আইনগত কোন ভিত্তি আছে? তাদের জন্য আইন কি ব্যতিক্রম?
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আমাদের পার্টি অফিসে এটা করেছি। তবে সরকার সব ধরনের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে সেখানে আপনারা এভাবে সভা করতে পারেন কিনা? এমন প্রশ্নেও তিনি সামাজিক দূরত্বের দোহায় দেন।
পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাসও একই সুরে কথা বলেন। তিনিও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করা হয়েছে উল্লেখ করে শুধুমাত্র সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেন।
যদিও সেখানকার একটি ভিডিও চিত্রে নেতা কর্মীদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না করেই বসে থাকতে দেখা গেছে। এবং দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে উপস্থিত হন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
নবীনগরের লকডাউনসহ সামগ্রিক বিষয় দেখভালের দ্বায়িত্ব যাদের তারাই যখন নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন তখন কি বলছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বললেন, তিনি এসবের কিছুই জানতেন না। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন। দেখার পর তিনি কি ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাইলে, তিনি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহীনির দেখার কথা বলে ওসিকে ফোন দিতে বলেন।
তবে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেছেন, স্বাস্থ্য বিধির পরিপন্থী কোন কাজ করে থাকলে সেটা নিন্দনীয় ।