Main Menu

নবীনগরে যৌন নীপিড়নের অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া প্রভাবশালীরা

+100%-

মিঠু সূত্রধর পলাশ, নবীনগর প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের যৌননিপিড়ন মামলার প্রায় ১০দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ। পুলিশের নিরব ভূমিকা জনমনে প্রশ্নের উদয় হয়েছে।এবং ওই দুই শিক্ষককে বাঁচাতে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রতিষ্ঠানের সুনাম রক্ষার দোহাই দিয়ে তাদের শুধুই পদত্যাগ করিয়েই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্ঠা চালানো হচ্ছে।

যৌননিপিড়নের মূল নায়ক মামলার ১নং আসামী ওই স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাস (৪০) অতিত নারী কলেংকারি ও জোয়া খেলাসহ দুষচরিত্রে নানাহ ঘটনা গনমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ২নং আসামী প্রধান শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম(৫৫)তা জেনেও তিনি কোন প্রতিকার করেননি। ২০১৩ সালে প্রদিপ এ স্কুলে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে প্রার্থী ছিলেন। জনসাধারনের আপত্তিতে তৎকালিন ম্যানেজিং কমিটি স্কুলের ছাত্রীদের নিরাপত্তা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকে নিয়োগ দেয়নি। এরপরেও বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালী কতিপয় সদস্য সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৭ সালে তাকেই ওই পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করেন।

জনশ্রুতি রয়েছে, ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে প্রদিপ ইতিমধ্যে বিশেষ সুবিধা দিয়ে ম্যানেজিং কমিটিসহ স্থানীয় বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করেছেন। এর ফলশ্রুতিতে ম্যানেজিং কমিটি গত ১৪জুন স্কুল মিলনায়তনে স্থানীয়দের নিয়ে এক পরামর্শ সভা ডেকে গ্রেফতারের বিষয়টি চেপে গিয়ে পদত্যাগও একটা শাস্তি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে তাদের বাঁচিয়ে দেওয়ার জোর চেষ্ঠা চালানো হয়। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাংসদ, এবাদুল করিম বুলবুল। সভাপতিত্ব করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহেল। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ওই শিক্ষকদের পদত্যাগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে মানবিক দিক থেকে বিবেচনারও অনুরোধ জানান।

দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষক ছাত্রীদের উপর যৌন নিপিড়ন চালিয়ে আসছিল। যৌন নিপিড়িত ছাত্রীদের অভিভাবকরা স্থানীয় ভাবে লোকলজ্জার ভয়ে এতদিন মুখ খোলেননি। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সম্পতি ঘটে যাওয়া যৌননিপিড়নের ঘটনা গণমাধ্যমে দেখে ওই স্কুলের যৌননিপিড়নের শিকার ছাত্রীরা ফুঁসে উঠে। গত ৭ জুন নিপিড়নের শিকার ফুঁসে উঠা ৩০/৩৫জন ছাত্রীদের একটি দল তাদের অভিভাবকদের নিয়ে মিছিল সহকারে স্থানীয় সাংসদ এবাদুল করিম বুলবুলের বাড়িতে গিয়ে সাংসদের কাছে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী জানায়। সাংসদ থানার অফিসার ইনচার্জকে মামলার রজুর নির্দেশ দেন।যৌন হয়রানীর শিকার এক ছাত্রীর ভাই বাদী হয়ে গত ৮জুন মামলা করেন, এরপর থেকে তারা পলাতক রয়েছেন।

তথ্য অনুসন্ধানকালে কথা হচ্ছিল,মো. রবিউল্লাহ্ ,মোহাম্মদ শাহ্জালাল, মো.মোর্শেদ আলম, আলাউদ্দিন সোহাগ, মো.মাইনুদ্দিন মইন, পল্লব, রমা চন্দ্র দেব ও তার এসব অপকর্মের প্রতক্ষ্যদশীসহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে। তাঁদের বক্তব্যে তার অপকর্মের এসব দৃশ্যপট উঠে আসে।

এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহেল বলেন, অভিযুক্ত দুজনই অপরাধ করেছেন কি করেনি, সমস্ত অপরাধ মাথায় নিয়েই তারা পদত্যাগ করেছেন,আইনি প্রক্রিয়াও চলমান,আপনারা বিবেকবান মানুষ,তারাও মানুষ,আমি অনুরোধ করবো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ,ইলেকট্রন্সিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিষয়টা নিয়ে যেন আর লেখালেখী না হয়।

সাংবাদিকদের বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জবাবে সাংসদ এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, অভিযুক্তদের বাঁচাতে ক্ষমতাশীন দলের একটি মহল মরিয়া বিষয়টি সঠিক নয়, আইনী প্রক্রিয়া চলমান আছে। স্কুল বন্ধের সময় ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক ও পদত্যাগ পত্র গ্রহন বৈধ কি অবৈধ জানিনা ম্যানোয়েল দেখতে হবে। ২য় পর্যায় ইন্টারভিউর নিয়োগ স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে-এ প্রশ্নের জবাবে সাংসদ বলেন, ২০১৩ সালে আমি যখন ম্যানেজিং কমিটিতে ছিলাম তখন তার প্রথম ইন্টারভিউতে এলাকাবাসির আপত্তির মুখে তাকে আমরা নিয়োগ দেয়নি, এখন কিভাবে পেল বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি বলতে পারবে আমি জানি না। শিক্ষা সচিবের নির্দেশে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন শুনেছি।সর্বশেষ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হবে।

এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ রনোজিত রায় বলেন, ওই দুই অভিয্ক্তু শিক্ষকদেরকে গ্রেফতারের সকল প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে,দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের খুঁজতে গোয়েন্দা লাগানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত তাদের গ্রেফতার করা যাবে।






Shares