নবীনগরে ইউপি চেয়াম্যানের বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নাকে খত কাটানোর অভিযোগ



মিঠু সূত্রধর পলাশ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে শালিসের নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নাকে খত কাটানোর অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। উপজেলার রছুল্লাবাদ ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আলি আকবরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। তিন বছর আগের এ ঘটনা সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় আলোচনার ঝড় উঠছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ নৌবাহীনির অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাছান বশিরের সাথে তার চাচা ফরিদ মিয়ার (৯০) জমি নিয়ে একটি মতবিরোধ হয়। যা হাতাহাতিতে গড়ায়। এ বিষয়ে ফরিদ মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাছান বশিরের বিরুদ্ধে। মামলা চলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা হাছান বশির ও তার চাচা ফরিদ মিয়াকে বিষয়টি মিমাংসা করে দিবে বলে অফিসে ডেকে পাঠায় ইউপি চেয়ারম্যান আলি আকবর। পরে শালিসি সভায় জনসম্মুখে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাছান বশিরকে জোর পূর্বক নাকে খত কাটান এবং নগদ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন চেয়ারম্যান আলি আকবর।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা হাছান বশির জানান, গত তিন বছর আগের একটি ঘটনায় মিমাংসার কথা বলে তাকে ভয় দেখিয়ে নাকে খত কাটানো হয় এবং সাথে ৭০ হাজার টাকাও জরিমানা করা হয়। নাকে খত কাটতে অস্বীকার করলে চেয়ারম্যান লাঠি নিয়ে মারতে আসেন। আমি সেইদিন নিরুপায় হয়ে নাকে খত কাটি।
কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি আরো জানান, আমি এই ঘটনা লোক-লজ্জার ভয়ে কাউকে বলিনি শুধু আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি। গত কয়েক দিন ধরে ফেসবুকে লেখালেখি হইতাছে শুনেছি। এই কারনে হয়তো চেয়ারম্যান আমার কাছে সাংবাদিক নিয়া আইসা হাতে ধইরা মাফ চাইয়া এমন কিছু ঘটেনি বলে বলতে বলে। আমি চেয়ারম্যানরে জিগাইলাম আর কত বেইজ্জতী তুমি আমারে করবা! আমার পোলা মায়া বড় হইছে,সমাজে আমি মুখ দেখাই কেমনে!
চেয়ারম্যান আলি আকবর তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি টানা দুই বারের রানিং চেয়ারম্যান এবং ২৪ বছর যাবত রছুল্লাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে এমনটা প্রচার করছে। গত তিন বছর আগের ঘটনা এখন কেন টেনে আনবে। তিন বছর আগে হাছন বশির ও তার চাচা ফরিদ মিয়ার আদালতে চলমান একটি মামলার মিমাংসা আমি করে দিয়েছি। মামলাটি উঠিয়ে আনতেও সহযোগীতা করেছি। সে সময় তাদের বিচার করতে গিয়ে হাছান বশিরকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করে তার বৃদ্ধা চাচার কাছে মাফ চাইতে বলেছিলাম মাত্র। এ মাফ চাওয়ার ঘটনাকে এখন নাকে খত কাটার কথা বলে চালিয়ে দিচ্ছে যা সত্যিই দুঃখজনক।