নবীনগরের হোটেল গুলিতে নোংরা ও নিম্নমানের খাবার, স্বাস্থ্য ঝুকিতে সাধারণ মানুষ
[Web-Dorado_Zoom]
মিঠু সূত্রধর পলাশ,নবীনগর প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের হোটেল গুলিতে নোংরা ও নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে, এতে করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে সাধারণ মানুষ। নবীনগর উপজেলার দিনমুজুর, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে আগত মানুষেরা দৈনন্দিন খাবার গ্রহন করেন আনাচে-কানাচে ফুটপাতে গড়ে ওঠা বিভিন্ন হোটেল ও খাবারের দোকানের মাধ্যমে।তবে এসব হোটেল ও দোকানে অস্বাস্থ্যকর এবং নিম্নমানের খাবার অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই খাবারের মান ও মূল্য নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে অনেকের মধ্যে। বাধ্য হয়ে তারা অতিরিক্ত দাম দিয়ে মানহীন খাবার গ্রহণ করছেন।
বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে দাবি শ্রমজীবী মানুষের। প্রশাসনের পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবেই হোটেল মালিকরা খাবারের মান ও মূল্য নিয়ে লাগামহীনভাবে অনিয়ম করে চলেছেন। ফলে ভোগান্তির কোনো স্থায়ী সমাধান মিলছে না।
অভিযোগ করে এক ভোক্তা জানান , সময়ের সাথে হোটেলগুলোর খাবারের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু নোংরা পরিবেশ শেষ হচ্ছে না । ফলে সহজেই ফুড পয়জনিং সহ নানা সমস্যায় পড়ছেন। অনেকটা যেন টাকা দিয়ে বিষ কিনে খাওয়ার মতো অবস্থা!
একসময় হোটেলগুলোতে ৪০ টাকায় পেট ভরে খাওয়া যেত, এখন সেটা আর নেই। দাম বাড়লেও মাছ-মাংসের আকার ছোট হয়েছে। বাজারে মাছ মাংসের দাম কমলেও হোটেলগুলোতে কমে না দাম।
সরেজমিনে হোটেলগুলো ঘুরে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর প্লাস্টিকের পুরোনো বোতলে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। নোংরা ফ্রিজে একসাথে মাছ, মাংস ও শাকসবজি সংরক্ষণ করা হয়েছে। পুরোনো পোড়া তেল বারবার ব্যবহার করে সিংগারা, পুরি, মাছ ও বড়া ভাজা হচ্ছে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে কালো পাতিলে রান্না করা হচ্ছে মাছ-মাংস। প্লেটগুলোও ব্যবহার শেষে ভালোভাবে না ধুয়ে, হালকা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে আবার পরিবেশন করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নবীনগর উপজেলার দোকানগুলোতে ফার্মের লাল ডিমের হালি ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে—অর্থাৎ প্রতিটি ডিমের বাজারমূল্য সাড়ে বারো টাকা। কিন্তু হোটেলগুলোতে একেকটা ডিম বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫টাকায়। । কয়েক মাস আগেও এক প্লেট খিচুড়ি ছিল ৩০/৩৫ টাকা; এখন তা ৮০/১০০ টাকা। আগে ৫ টাকার রুটির যে আকার ছিল, এখন তা ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪৫–৫০ গ্রাম রুই মাছের টুকরা বিক্রি হচ্ছে ২০০/২৫০ টাকায়। বাজারে সহজলভ্য হলেও হোটেলগুলোতে পাঙাস মাছও দামে চড়া। মাত্র ৫০ গ্রামের মতো পাঙাস মাছের পিছ বিক্রি হচ্ছে ৭০/১০০ টাকায়। এক টুকরো গরুর মাংস খেতে গেলেও দামে শতবার ভাবতে হচ্ছে। ৫০–৫৫ গ্রাম গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়।
এক কাপড় ব্যবসায়ী জানান, খাবার খাওয়া হয় দেহে শক্তি যোগাতে, মনকে প্রফুল্ল রাখতে। কিন্তু হোটেলগুলোতে যা বিক্রি হয়, তা যেন বিষ। না ঢেকে রাখা হচ্ছে খাবার। ডায়রিয়া, পেটের পীড়া আর ফুড পয়জনিং যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। দীর্ঘ সময় তা গ্রহণের ফলে বড় ধরনের শারীরিক জটিলতার সম্ভাবনাও রয়েছে। এইসব বন্ধ করতে হলে প্রশাসনের তৎপরতা বাড়াতে হবে।
যদি হোটেল মালিকরা খাবারের দাম কমাতে রাজি না হয়, তাহলে এসব দোকান সিলগালা করে দেওয়া হোক।
নবীনগর উপজেলার স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা কিশালয় সাহা জানান, ফুড পয়জনিং সহ নানা রোগ সম্পর্কে প্রচারনা করা হচ্ছে। যারা আইনর প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয় তাদের প্রতি আমাদের কঠোর অবস্থানে যাব। যারা খোলা নুংরা পরিবেশে খাবার পরিবেশন করেন তাদেরকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে আমরা শাস্তি প্রদান করিব।
এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরীর বলেন, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে আমরা নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছি। পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছি।
« শোক সংবাদ :: সরাইলে সাংবাদিক শফিকুর রহমানের ইন্তেকাল, বিভিন্ন মহলে শোক (পূর্বের সংবাদ)
(পরের সংবাদ) নবীনগরে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত »































