সাংবাদিক সম্মেলনে নিহতদের পরিবারে অভিযোগ
নবীনগরের জোড়া খুনের আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে :: মামলা তুলে নিতে হুমকি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার নবীনগর উপজেলার সাতমোড়ার আলোচিত জোড়া খুনের মামলার আসামিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।
২০১৭ সালের ১লা মার্চ নবীনগর উপজেলার জগন্নাথপুরে সাবেক বিজিবি সদস্য ইয়াছিন মিয়া ও তার ভায়েরা ভাই খন্দকার এনামুল হক খুন হন। এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার কোনা আসামিকেই ধরতে পারেনি পুলিশ। নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের ধরছে না। উল্টো আসামিরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য অনবরত হুমকি দিচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহত খন্দকার এনামুল হকের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার বলেন, হত্যাকান্ডের পর থানায় মামলার এজহার নিয়ে গেলে পুলিশ মামলা নিতে রাজি হয়নি। পরে আদালতে ২৬ জনকে আসামি মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) মামলার তদন্তভার দেন।
তিনি আরও বলেন, সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে এজহারে উল্লেখিত ২৬ জন আসামিসহ আরও দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এরপর আদালত সব আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর মধ্যে ১২ জন উচ্চ আদালত থেকে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জামিন পান। কিন্তু বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি থাকলেও তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ ।
তাছলিমা আক্তার বলেন, মামলার আসামি ও সাতমোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা নবীনগর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ হালিমের আপন ভাই। এম.এ হালিম দলীয় প্রভাব বিস্তার করার কারণে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করছে না। এর ফলে আমরা হত্যাকান্ডের বিচার পাচ্ছি না। উল্টো আসামিরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আসামিদের হাত থেকে জীবন বাঁচাতে আমরা এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে চলে এসেছি। আমি আমার স্বামী এবং আমার বোন নাসিমা বেগমের স্বামী হত্যাকা-ের বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত সাবেক বিজিবি সদস্য ইয়াছিন মিয়ার স্ত্রী নাসিমা বেগম ও তাঁর সন্তানেরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরও বলেন পুলিশ সুপারকেও অবহিত করেছি। তিনি নবীনগর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। অজ্ঞাত কারণে নবীনগর থানা পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার করছেন না। এই ব্যাপারে নবীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলে অবশ্যই আসামীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
উল্লেখ, ২০১৭ সালের পহেলা মার্চ রাতে নবীনগর উপজেলার জগন্নাথপুরে সাবেক বিজিবি সদস্য ইয়াছিন মিয়া ও তার ভায়েরা ভাই খন্দকার এনামুল হককে হত্যা করা হয়।