Main Menu

নবীনগরে দুই মাসে খুন,আত্মহত্যাও অনান্য ঘটনায় ৮টি লাশ উদ্ধার

+100%-

নবীনগর প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় সামাজিক বিশৃঙ্খলা মহামারি আকার ধারণ করেন করেছে। গত দুই মাসে খুন, আত্মহত্যা ও অনান্য ঘটনায় নবীনগর থানার পুলিশ ৮টি লাশ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া একটি ধর্ষণ, একটি নারী নির্যাতন, বাবাকে মারতে গিয়ে ছেলের কারাদ- ও একটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ঘের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নবীনগরে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, ২০২০ সালের প্রথম দিন ১ জানুয়ারী, এক হাজার টাকার দেনা পাওনা কে কেন্দ্র করে নবীনগর পৌর এলাকার ভোলাচং গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম সানি উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে খুন হয়েছে। ৩ ফেব্রুয়ারী উপজেলার সলিমগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ে ছেলের পরিক্ষার সিট দেখতে গিয়ে বিদ্যালয়ের তোরন ভেঙ্গে ঘটনাস্থলে মারা যায় খোরশেদ মিয়া নামে এক অভিভাবক, এলাকাবাসীর অভিযোগ বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এই মৃত্যু। ১৪ ফেব্রুয়ারী নবীনগর পৌর এলাকার নবীনগর পশ্চিম পাড়ার (অবঃ) সেনাসদস্য আলমগীর হোসেন তার ছেলে সাইফুল ইসলাম শুভর দায়ের কোপে খুন হন। ২৪ ফেব্রুয়ারী উপজেলার সলিমগঞ্জ জান্নাতুল ফেরদৌস মহিলা মাদ্রাসার হোস্টেলের সিঁড়ির রুম থেকে ওই মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী আছমা আক্তার আমেনার (১১) ঝুলন্তÍ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আমেনা পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়নের কাঞ্চণপুর গ্রামের প্রবাসী মুমিনুল হকের মেয়ে, পরিবারের অভিযোগ ধর্ষণ শেষে তাকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

আত্মহত্যা:: ৪ জানুয়ারী পারিবারিক কলহের জের ধরে বিষপনে আত্বহত্যা করে নবীনগর পৌর এলাকার বিজয় পাড়ার বাবুল মিয়ার স্ত্রী রৌশনারা বেগম ও শ্যামগ্রামের শাাহবাজপুর গ্রামের খোকন মিয়ার স্ত্রী ছালেহা বেগম। ১২ জানুয়ারী নবীনগর পৌর এলাকার জল্লা গ্রামে জর্মিনা বেগম নামে এক গৃহবধু ও ২৬ ফেব্রুয়ারী নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের ফাতেমা বেগম নামে নবব শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্বহত্যা করে। ৮ জানুয়ারী নবীনগর কলেজ পাড়ায় ৭ বছরের শিশুকে কেক খাওয়ানোর কথা বলে ধর্ষণ করে এক বখাটে। ১৩ জানুয়ারী নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রামে এক গৃহবধু কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় উলঙ্গ করে শারিরিক ভাবে নির্যাতন করে এলাকার একটি প্রভাবশালী পরিবার। ১০ ফেব্রুয়ারী নবীনগরের বাইশ মৌজা গরুর বাজারের নিয়ন্ত্রন নিয়ে কৃষ্ণনগরে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ সহ ১০ জন আহত,৩০ টি বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ২৮ রাউন্ড ফাকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রে আনেন। ২৭ ফেব্রুয়ারী নবীনগর পৌর এলাকার আলমনগর গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরধরে আমির হোসেনের ছেলে সাইদুর রহমান তার বাবাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে গেলে বাবার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আমির হোসেনকে রক্ষা করে ছেলেকে আটক করে। সংবাদ পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইকবাল হাসান ও নবীনগর থানার ওসি রনোজিত রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাইদুর রহমানেকে তিন মাসের কারাদ- দিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করেন।
নবীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, প্রতিটা ঘটনাই দুঃখ জনক,এ সব ঘটনা পারিবারিক কলহের কারণে ঘটেছে, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও আত্বহত্যার প্রবনতা বন্ধ করতে হলে পরিবারিক,সামাজিক ও প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও হাট বাজারে পথসভার মাধ্যমে জনসচেতনা তৈরি সহ প্রশাসনকে আরো কঠোরভাবে কাজ করতে হবে।

নবীনগর থানা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন বলেন, নবীনগর উপজেলার ২১ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার আয়তন ও লোক সংখ্যার হিসেবে পুলিশ সদস্য সংখ্যা খুবই কম। তার পরও পুলিশের পক্ষ থেকে সব সময় চেষ্টা করা হয় আইন শৃঙ্খলা ও পরিবেশ শান্ত রাখার, সম্প্রতি সময়ে যে সব ঘটনা ঘটেছে সেই গুলো অপ্রত্যাশিত। তিনি আরো বলেন, পুলিশের পাশাপাশি জনগনকে সচেতন হবে। জনগন সচেতন না হলে কোন কাজে সফলতা আসবেনা। দাঙ্গা, মাদক ও আত্বহত্যার প্রবনতা কমিয়ে আনতে এবং জনগনকে সচেতন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে।






Shares