নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছেন বিজয়নগরের সেই নারী চিকিৎসক!
মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন। এর মধ্যে জেলার বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নারী চিকিৎসকও রয়েছেন।
বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি জেলার একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সেন্টার। বর্তমানে ওই নারী চিকিৎসক ময়মনসিংহে অবস্থান করছেন। সেখানেই তিনি আইসোলেশনে রয়েছেন। তবে কীভাবে করোনভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সেটি নিশ্চিত না হলেও করোনভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা ওই চিকিৎসকের।
পাশাপাশি ওই চিকিৎসকের সঙ্গে নমুনা সংগ্রহে যাওয়া তার এক সহকর্মীও শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে মুঠোফোনে ওই নারী চিকিৎসকের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। নমুনা সংগ্রহের সময় যে সুরক্ষা সরঞ্জাম পরেছিলেন সেটি মানসম্মত ছিলনা বলে তার ভাষ্য।
তিনি বলেন, “গত ৭ এপ্রিল বিজয়নগর উপজেলার হরষপুরে এক রোগীর নমুনা সংগ্রহে গিয়েছিলাম আমিসহ চারজন। ওই রোগীর করোনভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। আমিই প্রথম ওই রোগীকে ডিল করি। ওই রোগীর রিপোর্ট পজেটিভ আসার পর আমরা চারজন নিজ থেকেই নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠাই। যদিও আমাদের মধ্যে কারোরই করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ ছিল না।”
তিনি বলেন, “গত শনিবার (১১ এপ্রিল) আমাদের নমুনা পাঠানোর পর গতকাল মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) আমাদের রিপোর্ট এসেছে। আমার রিপোর্ট পজিটিভ এবং বাকি তিনজনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।”
তিনি জানান, নমুনা সংগ্রহ করার জন্য তাদের মানসম্মত ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ছিলনা।
“এন-৯৫ মাস্কের পরিবর্তে আমরা সাধারণ সার্জিকেল মাস্ক, সাধারণ পিপিই, গ্লোভস ও বড় গগলসের পরিবর্তে প্লাস্টিকের গ্লাস পরেছিলাম। আমাদের পিপিই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ছিল না। সরকারিভাবে আমাদের এসব দেওয়া হয়নি। এগুলো ছাড়াই আমরা কাজ করেছি। আমি এখন আইসোলেশনে রয়েছি, তবে আমি সুস্থ্য আছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, “চিকিৎসকরা নমুনা সংগ্রহ করবে- বিষয়টি এমন নয়। পিপিই পরে মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা নমুনা সংগ্রহ করেন। আমাদের সার্জিকেল মাস্ক আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের।”
সবগুলো উপজেলায় ‘যথেষ্ঠ’ পিপিই দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রতিবেদনটি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে প্রকাশিত