সামাজিক দায়বদ্ধতায় যাকাত আদায় !!
যাকাত ব্যবস্থা ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। আর্থিক এবাদতের মধ্যে বড় একটি এবাদত- যার মাধ্যমে এবাদতের পাশাপাশি মুয়ামালাত (সামাজিক যোগাযোগ ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য) সম্পন্ন হয়। ইসলামে শুধু নামাজ রোজা তাসবিহ দিয়েই বন্দেগী হয় না, প্রতিবেশীদের হক্ব আদায়ের মাধ্যমেও মুসলমান হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। ধনীদের অর্থ সম্পত্তিতে গরীবদের হক্ব আছে এবং সেই হক্ব আদায়ের মাধ্যমই হচ্ছে যাকাত। শতকরা ২.৫ টাকা হারে এই জাকাত আদায় করতে হয়।
কথিত আছে হযরত উমর (রাঃ) এঁর শাসনামলে যাকাত দেয়ার মতো মানুষ খুজে পাওয়া দূষ্কর হয়ে গিয়েছিলো। কারণ সুশাসন ও ন্যপরতার কারণে তখন মানুষ এতটাই সমৃদ্ধি লাভ করেছিলো যে, সবাই যাকাত প্রদানের যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। যাকাত নেয়ার মতো মানুষ কমে গিয়েছিলো। এর থেকেই বোঝা যায় যাকাত সমাজকে কতটা সমৃদ্ধশালী করে।
কিন্তু আমাদের সমাজে আমরা যেভাবে যাকাত আদায় করি, তাতে মনে হয় না কোন গরীবেরা সেভাবে উপকৃত হয়। নিম্ন মানের শাড়ী লুঙ্গি প্রদানের মাধ্যমে আমরা যে যাকাত আদায় করি, আদৌ তাতে যাকাত আদায় হয় কিনা, প্রশ্ন থাকে। আমার মতে একটি সমাজের কিছু সম্পদশালী ব্যক্তি একত্রে যদি এমন কোন উদ্যোগ নেয়, যাতে গরীব মানুষ কিছু করে খেতে পারে, সেই ব্যবস্থায় সহযোগিতা করে, তবে যাকাত আরো সফল ভাবে আদায় হয়। যেমন একজন গরীব মহিলাকে একটি সেলাইমেশিন কিনে দেয়া বা দরিদ্র কাওকে অটো রিকসা কিনে দেওয়া/ দোকান করে দেওয়া, ড্রাইভিং সহ বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা লাভে সহায়তা করা। অর্থাৎ মানুষকে স্বাবলম্বী হতে সহযোগিতা করাই যাকাতের মূল উদ্দেশ্য, যা শাড়ী লুঙ্গি প্রদানের মাধ্যমে পুরাপুরি আদায় হয় না। তারপরেও এর পাশাপাশি শাড়ী লুঙ্গী দেওয়াই যায়, তবে তা হওয়া উচিৎ ভালো মানের। আমাদের দেশে একটি বিষয় প্রচলিত হয়েই গেছে যে- যাকাতের শাড়ী/লুঙ্গী। অর্থাৎ নিম্ন মানের কাপড়ে তৈরী করা শাড়ি/লুঙ্গীই যাকাতের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ এবাদতের ভার বহনে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু একবারো কি ভেবে দেখেছি, এই ভার বহনের ক্ষমতা ঐ নিম্নমানের শাড়ী / লুঙ্গীর আছে কিনা?