ব্রেক্সিট: শার্কদের লস আর মধ্যবিত্তের জয় (ব্যালট পেপার সহ পোস্ট )
হাইজেনবার্গ ০৬ :: বন্ধুরা ফোন করে মতামত জানতে চায় ইন অর আউট কোনটায় ভোট দিব? জানি না কোনটা ভালো কোনটা মন্দ।ভোটের দিন চিন্তা করলাম কি করবো, ভোট দিতে যামু না যামুনা, এই বৃষ্টিতে কে যায় আজাইরা ভোট দিতে।ইউকে ই ইউতে থাকলেই কি না থাকলেই কি।দেশে ভোট হইলে অন্য কথা, চোখ বন্ধ কইরা ধানের শীষে ধুমায়া ভোট দিতাম
যাই হউক ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দেয়ার ডিসিসান নিলাম।কিভাবে? যাদের পছন্দ না তারা যা চায় তাদের উল্টা কাজ করা। ডে.ক্যামেরোন, লন্ডনের নয়া মেয়র পাকি বংশদ্ভূত সাদেক খান, পরে জানলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও নাকি এই দলে, চায় ই ইউতে থাকতে।উনারা ছাড়াও অন্যান্য ফাইনান্সিয়াল হুমড়া চোমড়া রা ও ইনে’র পক্ষে ক্যাম্পেইন করছে। আমার কথা আমার লাভ কি? আমি ইস্টার্ন ইউরোপ থেকে আসা মেইনলি রুমানিয়ান আর বুলগেরিয়ানদের উৎপাতে অতিষ্ট হয়া গেছিলাম। আরেকটা গ্রুপ আছে,তারা দেশী ভাই।উনারা পোলা মাইয়া বউ সব লয়া ধুমায়া আয়া সারা ইউকে ভইরা দিছে।ইতালী,জার্মানী, নেদারল্যান্ড,স্পেইন, পর্তুগাল থেকে আইসা সুন্দরকরে কিছু জাল কাগজ তৈরী করে, ফ্রিতে থাকা সহ বেনিফিট এর টাকা নিয়া খুব সকুনছে আছেন। সন্ধার পর রেস্টুর্যান্টে বসে দেশের পলিটিক্স নিয়া চায়ের কাপে সুনামি তুলেন।এক ছোট ভাই এই ‘মাইগ্রেন্টদের নাম দিছে ‘হিজরতকারী’ গ্রুপ।এদের যদি জিগাই ভাই ঐখান থেকে ইউকে তে চলে আইলেন কাহিনী কি? বাই দা ওয়ে এসব ‘হিজরতকারী’ সবাই ক্লেইম করেন ওনারা তাদের আগের দেশে জমিদারেরে মতন ছিলেন,শুনতে অনেকটা যারা ইন্ডিয়া চলে গেলে বলে ওপাড়ে জমিদারী ছিল আমাদের, এর মত শুনায়।তাইলে জমিদারী ফেলে চলে আইলেন যে?আরে পোলা মাইয়ার পড়াশুনার জন্য চলে আইছি,ইংলীশ শিখাইতে আইছি। যাই হউ, দেশী ভাই,কি আর করা। আমি কামলা দিমু,ভাইয়ে বয়া বয়া বেনিফিট খাইবো,খা। কিন্তু রুমানিয়ান গুলিও খাইবো! ফ্রিতে থাকবো, স্লারা নোংরা আর অপরিস্কার,চুরি চামারী আর প্রস্টিটিউশানে এলাকা পচয়া ফেললো।লন্ডনের বেশির ভাগ কাউন্সিল বা পৌরসভার নাগরিক ইন’এ থাকার জন্য ভোট দিছে। আমার পৌরসভা বের হওয়ার জন্য ভোট দিছে।সারা ইউ কে’র কি হবে তা দেখে আমার লাভ নাই।আমার ধান্ধা, পাউন্ড পড়লে,মাইগ্র্যান্টরা চলে গেলে বাড়ীর দাম কমবে তখন যদি এক্টা বাড়ী মর্টগেজে নেয়া যায়
ব্রেক্সিটের ফলে সত্যিকারের কি হবে তা কেউ জানে না এখনো। যারা এর পক্ষে ক্যাম্পেইন করছে তাদের মূল কথা নিজের দেশ নিজে কন্ট্রল করবো,কোন ই ইউ ডাইরেক্টিভ আমার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।প্রতি সপ্তাহে £৩৫২মিলিয়ন সদস্য ফি দিতে হয় ই ইউ কে।আজাইরা মাইগ্র্যান্টরা আইসা এদেশের স্বাস্হ্য সেবারে চাংগে তোলার অবস্হা করছে।
যারা ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ক্যাম্পেইন বা ভোট দিছেন তাদের মেইন লজিক ইউকে ফাইনান্সিয়ালী উইক হয়ে যাবে,শেয়ার বাজার,পাউন্ড পড়ে যাবে।চাকরী হারাবে। হ্য়তো হবে,সমায়িক ভাবে। কিন্তু আমার ব্যাক্তিগত মত, তেমন কিছুই হবে না। ই ইউ ছাড়ছে ঠিক ই কিন্তু মার্কেটতো গ্লোবালাইজড, ফাইনান্সিয়াল শার্করা সব একই, লসটা বেশি শার্কদের। এখন মাত্র প্রসেস চালু হইছে, ফাইনালী বের হবে দুই বছর পরে।এর মধ্যে শার্ক ভাইয়েরা নিশ্চয়ই কোন সিস্টেম করবে। আমার মনে হয় সব কিছুর মূলে রয়েছে গত ২০০৬ শুরু হওয়া রিসেসান। ধণী দেশগুলি যে সিস্টেমে জোড়াতালি দিয়ে বের হয়ে এসেছে এসব ব্রেক্সিট তারই ফল। পলিটিশিয়ানরা যে দেশের বিশাল এক শ্রেনী নাগরিকদের কাছ থেকে দূরে চলে গিয়েছে, তারা তা বুঝতে পেড়েছে ব্রেক্সিটের রেজাল্ট পেয়ে।জয় হয়েছে মধ্যবিত্তের।