ইউপি নির্বাচনে খালেদা-ফখরুল শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে চান
ডেস্ক ২৪:: ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে থাকছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চেয়ারপারসনের ঢাকার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সোমবার রাতে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
মির্জা ফখরল বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি করবে জেনেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ইউপি নির্বাচনে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেছেন, ইউপি নির্বাচনের শেষ ধাপ পর্যন্ত থাকবে বিএনপি ও তার জোট। সামনের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হবে না জেনেও বিরোধী জোট নির্বাচনী মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতা বারবার প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনকে ৬ ভাগে ভাগ করায় সহিংসতা অনিয়ম কম হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত দুই ধাপ পার না হতেই ৪২ জন নিহত হয়েছে। এ নির্বাচন ব্যবস্থা ও সরকারের প্রতি জনগণ আস্থা হারিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিএনপি শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না- তা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতারা ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন।
তবে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থেকে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
রোববার (০৩ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকে ইউপি নির্বাচনে থাকা না থাকার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সোমবার ২০দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন জোট নেত্রী খালেদা জিয়া।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ নির্বাচন বর্জন করার পক্ষে মত দেন। তাদের মতে, নির্বাচন বর্জন করলে সরকার নৈতিক দিক থেকে প্রচণ্ড একটা ধাক্কা খাবে। তখন এ নির্বাচন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মত গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। ফলে বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটযুদ্ধে সুবিধা পাবে।
কিন্তু বৈঠকে অংশ নেওয়া শীর্ষ নেতাদের বড় একটি অংশ শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থেকে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। তাদের মতে, নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে গেলে বিএনপি ফের মূল ধারার রাজনীতি থেকে পিছিয়ে যাবে। ঘটনা যাই ঘটুক, দায় তো আর বিএনপির উপর আসছে না। তাহলে বিএনপি কেন নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে আসেব?
সূত্র মতে, শীর্ষ নেতাদের এ ধরনের মতপার্থক্যের মধ্যেই বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাচিব রুহুল কবির রিজভী নির্বাচনে থেকে যাওয়ার পক্ষে মত দেন।
তবে দলের শীর্ষ নেতাদের কথাও তারা গুরুত্বের সঙ্গে শোনেন এবং ২০দলের বৈঠক শেষে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউছুফ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদনি, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, মো. শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু প্রমুখ।