বিজয়নগরে আওয়ামীলীগ নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ
প্রতিবেদক :: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চর ইসলামপুর ইউনিয়নে এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চান্দুরায় অবরোধ দিয়েছে তার সমর্থকরা। ফলে এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানা যায়, সোমবার ভোর ৪টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার চর ইসলামপুর ইউনিয়নে হাসান আলী সর্দার (৬৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। হাসান আলী স্থানীয় ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দ্বায়িত্বে ছিলেন।
পুলিশের দাবি তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ডোবার পানিতে পড়ে মারা গেছেন। তবে এলাকাবাসীর দাবি পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালানোর সময় তিনি ডোবায় পড়ে মারা যান।
এলাকাবাসী জানায়, বৃহম্পতিবার চরইসলামপুর ইউনিয়নের নাজিরা বাড়ি মসজিদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থেকে তাবলীগের একটি দল আসে। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রের ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসের জের ধরে ওই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয়রা নাজিরাবাড়ি মসজিদের ভেতরে ঢুকে তাবলীগ জামাতের লোকদের ওপর হামলা চালায়। এ হামলায় মাদ্রাসার এক শিক্ষকসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্র ১৬৬ জনকে আসামি করে শুক্রবার বিজয়নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ভোরে ওই মামলার আসামিদের ধরতে পুলিশ চরইসলামপুর গ্রামে যায়। পুলিশের খবর পেয়ে পালানোর সময় হাসান আলী সর্দার ডোবায় পড়ে মারা যান।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রসুল আহমেদ নিজামী হাসান আলী সর্দারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালানোর সময় তার মৃত্যুর ঘটনা অস্বীকার করেন।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চান্দুরায় অবরোধ দেয় তার সমর্থকরা। এতে সড়কের দু’পাশে ১৫ কিলোমিটারে যানজটের সৃষ্টি হলে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
সোমবার দুপুর ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চান্দুরায় টায়ার জ্বালিয়ে আড়াই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে তারা।
খবর পেয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশিরুল হক, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল-এএসপি) শাহ আলম বকাউলসহ বিপুল সংখ্যক র্যাব-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধ করে ব্যর্থ হয়।
পরে অবরোধকারীদের দাবি অনুয়ায়ী গ্রেপ্তার হওয়া ১৭ জন নেতাকর্মীকে নিঃশর্ত মুক্তি, হাসান আলীর হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিতের আশ্বাস দেয়ায় অবরোধ তুলে নেয়া হয়। অবরোধকারীরা তিনদিনের আলটিমেটাম উল্লেখ করে বলেছেন, দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে।