বাংলাদেশের নীচেই ঘুমিয়ে ‘মহাপ্রলয়’, ঘুরে যেতে পারে গঙ্গায় স্রোত
ডিজিটাল ডেস্ক: গত এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভূ-বিজ্ঞানী এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ভূমিকম্পের তত্ত্ব উঠে এসেছে। নেপালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সকলে তা প্রত্যক্ষ করেছেন। কিন্তু বৈজ্ঞানিকরা বলছেন, সেটা ‘ট্রেলার’ ছিল। দক্ষিণ এশিয়ায়, আরও সঠিকভাবে বললে বাংলাদেশ এবং গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের ঠিক নীচে দার্ঘ দিন ধরে তৈরি হচ্ছে একটি জায়ান্ট ভূমিকম্প, যা এই গোটা অঞ্চলের মানচিত্র চিরতরে পাল্টে দিতে পারে।
ভূ-বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মাত্র এক দশকের ডেটা থাকার জন্য এখনই নির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না কত দিনের মধ্যে আসতে পারে এই জায়ান্ট ভূমিকম্প। তবে রিখটার স্কেলে সেই ভূমিকম্পের মাত্রা হতে পারে ৮.২ থেকে ৯.০ পর্যন্ত। যাতে প্রভাবিত হতে পারেন ১৪ কোটি মানুষ। পরোক্ষভাবে ক্ষয়ক্ষতির জন্য আরও বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাইকেল স্টেকলার বলেন, ‘আগামী কাল হবে না ৫০০ বছর পরে তা আমরা জানি না। কত দিন লাগবে সেই প্রচণ্ড শক্তি পুঞ্জিভূত হতে তাও আমাদের অজানা। তবে গবেষণা একটা দিকেই নির্দেশ করেছে, এই ভূমিকম্প হবেই এবং প্রতিনিয়ত মাটির নীচে এই ধ্বংসাত্মক শক্তি তৈরি হচ্ছে।’
কী ভাবে তৈরি হচ্ছে এই শক্তি?
গত ১৩ বছর এই অঞ্চলে সবার অলক্ষ্যে একটি প্রাকৃতির কাণ্ড ঘটে চলেছে। ভারতীয় এবং সান্ডা টেকটনিক প্লেট একে অপরের মধ্যে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিরন্তর। বছরে প্রায় ১৭ মিলিমিটার করে ইন্ডিয়ান প্লেট এগিয়ে যাচ্ছে সান্ডা প্লেটের দিকে। এই কারণেই দক্ষিণ এশিয়ায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রায় সব ক’টি ভূমিকম্প ঘটেছে। মাটি এবং স্যাটেলাইট জিপিএস থেকে পাওয়া চিত্রে এটা পরিষ্কার, যে বাংলাদেশের একটি বিরাট অংশ এই সাবডাকশন জোনের ওপর বসে রয়েছে।
স্টেকার আরও জানিয়েছেন, গত ৪০০ বছর যাবত এই ঘটনা ঘটছে। এত দিন ধরে জমে থাকা শক্তি একবারের জন্যেও মুক্ত হয়নি। আর ঠিক এর কেন্দ্রের পরই রয়েছে ঢাকা শহর। যদি একবারে এই পরিমাণ শক্তি মুক্ত হয়, তবে ঢাকা-সহ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের জমি ১৮ থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত জেগে উঠতে পারে। তা ছাড়াও পাল্টে যেতে পারে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রের গতিপথও। এর ফলে এই বড় নদীগুলির গতি পথে যা আসবে সব ভেসে যাবে।