Main Menu

কুমিল্লা নামে বিভাগ হোক- এটি নোয়াখালী, চাঁদপুরসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার অনেক মানুষ চান না

কুমিল্লার কথা উঠলে ঘৃণিত খন্দকার মোশতাকের কথা মনে পড়ে যায় : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

+100%-

কুমিল্লার কথা উঠলে খন্দকার মোশতাকের কথা মনে পড়ে যায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘৃণায় রি রি করে শরীর মন। তবে কুমিল্লার বদলে ময়নামতি নামে বিভাগ হওয়ার কারণ অন্য বলে তিনি জানিয়েছেন। বলেছেন, কুমিল্লা নামে বিভাগ হোক- এটি নোয়াখালী, চাঁদপুরসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার অনেক মানুষ চান না। বলেছেন, ময়নামতি একটি সুন্দর নাম।

জার্মানির মিউনিখে স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকালে মেরিয়ট হোটেলে ইউরোপী আওয়ামী লীগের নেতা- কর্মীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ উপলক্ষে এখন জার্মানি রয়েছেন শেখ হাসিনা।

কুমিল্লা থেকে উঠে আসা রাজনীতিবিদ খন্দকার মোশতাক ছিলেন আওয়ামী লীগেরই নেতা। তবে তিনি দলের ভেতর বিশ্বাসঘাতক হিসেবে পরে চিহ্নিত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর খন্দকার মোশতাককে প্রেসিডেন্ট করা হয়। পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ানো বঙ্গবন্ধুর খুনিরা তাকে সামনে রেখেই রাষ্ট্র পরিচালনার চেষ্টা করছিলেন। তবে মোশতার রাষ্ট্রপতি হিসেবে টিকতে পেরেছিলেন কেবল ৮৩ দিন। পরে সেনা অভ্যুত্থানেই তাকে অপসারণ করা হয়।

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হারানোর পর মোশতাক ডেমোক্রেটিক লীগ নামে দল করেছিলেন, তবে আগাতে পারেননি। আর দুর্নীতি মামলায় তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডও হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে তিনি মারা যান।

সভোয় শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ইউরোপ থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ভিড় এখন মিউনিখে। সবাইকে সুযোগ দিতে দুই দফা তাদেরকে নিয়ে বসেন শেখ হাসিনা। নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও ভাষণ প্রদান করে হোটেলে ফিরে প্রধানমন্ত্রী দলের নেতা-কর্মীদের সময় দেন।

সভায় ভাষণ প্রদান শেষে শেখ হাসিনা আগ্রহীদের কাছ থেকে প্রশ্ন এবং মতামত আহ্বান করেন। এ সময় একজনের প্রশ্নের জবাবে, প্রধানমন্ত্রী ময়নামতি নামে কুমিল্লা বিভাগ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চান। এরপর শেখ হাসিনা তার জবাব দেন।

ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী লিংকন মোল্লাহ জানান, প্রধানমন্ত্রী ‘ময়নামতি’ একটি সুন্দর নাম বলে মন্তব্য করার সাথে সাথে সভাস্থলে উপস্থিত সকলে হাততালি দিয়ে নিজেদের সমর্থন জ্ঞাপন জানান। এক পর্যায়ে নেতা-কর্মীরা স্লোগানও দেয়।

লিংকন মোল্লাহ জানান, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। জবাবে শেখ হাসিনা, বলেন, ‘আল্লাহ-তা-আলা আমাকে রক্ষা করবেন’।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদানের জন্য প্রবাসীদেরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবাসীদের বিনিয়োগেরও আহ্বান জানান।
সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল দাশগুপ্ত এর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক শামিম খালাসি, নেদারল্যান্ডস আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইদ ফারুখ, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জামান, সুইডেন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মহিউদ্দিনসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ৫৩তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে জার্মানি পৌঁছেন শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ছয়টার দিকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি জার্মানির মিউনিখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে জামার্নিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
এরপর বিমানবন্দর থেকে মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে মিউনিখ মেরিয়ট হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। তিন দিনের সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা এই হোটেলেই অবস্থান করবেন।

সম্মেলনের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাটো জোটের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা, নানামুখী নিরাপত্তা ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের করণীয়, ইউক্রেন সংকট এবং রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক, সিরিয়া সংকট, কোরীয় উপদ্বীপ পরিস্থিতি, ধর্ম-সংক্রান্ত সন্ত্রাসবাদ, তথ্য যুদ্ধ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হবে। এছাড়াও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও জলবায়ুসংক্রান্ত নানা হুমকি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয় নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তনিও গুতেরেস, ইউরোপীয় কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক, ইইউ শীর্ষ প্রতিনিধি ফেডেরিকা মোঘেরিনি, ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলেনবার্গ, ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি পেট্রো পোরোশেংকো, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লেভরভ, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আশরাফ ঘানি, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইরনা সোলবার্গ, হাংগেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবিন, ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবেদ আল-জুবায়ের, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ শরীফ, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগডর লিবেরমেন, রেডক্রস ইন্টারন্যাশনাল কমিটির প্রেসিডেন্ট পিটার মওরের, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রোথ অন্যান্যদের মধ্যে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন।






Shares