ছোট বেলার ৩ টি চরম দুষ্টুমি- যা নিজেকে হাসায় এবং অন্যকেও হাসায়।
আমার বড় চাচা চরমনাই পিরসাহেবের মুরিদ। শুধু মুরিদ বললেই ভূল হবে চরম মুরিদ। তার এর মুরিদানায় আপ্লুত হয়ে এলাকাবাসি তার নাম দিয়েছে কুতুব। আমি তখন ক্লাস টেনে। ঠিক এমনি একদিন আমাদের স্কুলে আসলেন চরমনাইর বিগত পির সাহেব জনাব ফজলুল হক। এই উপলক্ষে আমাদের স্কুল মাঠে রমরমা অবস্থা। পির সাহেবের হুজরাখানার জন্য স্কুলের একটি রুম বরাদ্ধ হলো। আরেকটি রুম বরাদ্ধ হলো তার পাইক পেয়াদার জন্য।
তো এই সুযোগটি ভালভাবে কাজে লাগাতে চাইলেন আমার বড় চাচা। আমকে সঠিক পথে আনার জন্য তিনি সর্বদাই ব্যাস্ত থাকতেন এবং বড় কাকা হিসেবে আমরা তাকে যথেষ্ট মান্য করি। তো তিনি স্কুলে এসে আমাকে সোজা ধরে নিয়ে গেলেন হুরুরের খাস কামরায়। হুজুরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে হুজুরকে বললেন আমার জন্য দোয়া করতে। সাইজে একটু ছোট এবং দেখতে নাদুস নুদুস হওয়ার কারনে হুজুর আমাকে বেশ পছন্দ করলেন। তার কাছে থাকা খেজুর খেতে দিলেন। শরীরে আতর মেখে দিলেন এবং সাথে এক গ্লাস দুধ। তা দেখে আমার চাচা মহা খুশি। তিনি আমাকে নির্দেশ দিলেন হুজুরের পা চেপে দিতে। চাচা হুজুরের পা চেপে দেয়ার মহাত্ব বর্ননা করলেন। এতে নাকি দুনিয়া ও আখেরাতে বহুত ফায়দা হবে। শুনে আমারতো কান গরম। পারলে যা খেয়েছি সব বের করে দিয়ে দৌড়াই। ফায়দার দরকার নাই। অনেকটা বাধ্য হয়ে হুজুরের পা চাপতে নিয়োজিত হলাম। আমার কাকা আমার কৃত কর্ম দেখে মহা আনন্দে বের হয়ে গেলেন। আমি কি করব বুজতে পারছিনা। কি করব কি করব ভাবতে ভাবতেই হুজুরের গুপ্তাঙ্গে দিলাম জোরে চাপ। দেখলাম হুজুর কুৎ করে উঠলেন। আমি পুরা থ খেয়ে গেলাম। হুজুর উঠে আমাকে বললেন বাবা যাও আর লাগবেনা। এরপর আবার কুৎ করে দুহাতে নিজের অঙ্গ সামলাতে ব্যাস্ত হয়ে পরলেন। অন্য অনুসারীরা কিছু বুঝার আগেই আমি ভোঁ দৌড়।
২।
আমি এস এস সি পরীক্ষা দিয়ে বেকার। সুযোগটা কাজে নিলেন আমার বড় চাচা। আমাকে অনেকটা জোর করে পাঠিয়ে দিলেন তাবলীগে। একটা মসজিদে আমাদের জামাত হলো। খাবার আমার জন্য কোন সমস্যাই করলনা। কারন সাবাই দেখলাম মাছের ভাল টুকরো গুলো আমার দিকেই দিচ্ছেন আর আমি নির্দিদায় তা গলদকরন করছি।
তো পরের দিন রান্নার দায়িত্ব পরল আমার কাঁধে। আমার কাজ ছিল ভাত রান্ন করা। জীবনে কোন দিন আলু ভর্তাও কারিনাই আর ভাত রাধতে হবে আমার। কি আর করা!! ইচ্ছে মতো চাল দিয়ে শুরু করলাম ভাত রান্না। একটু পরেই ভাত ফুটে চারদিকে পড়তে লাগলো। আমির সাহেবের ডাক পরল। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন চাল বেশী দিয়েছি কিনা। আমি বললাম আপনি যতটুকু চাল দিতে বলেছেন তারও একটু কম দিয়েছি। আমির সাহেব সুবহানআল্লাহ বলে উঠলেন। বললেন আল্লাহ তোমারে পছন্দ করেছে তাই ভাতের বরকত হয়েছে। তো জামাতে খুব দ্রুতই আমার সুনাম বৃদ্ধি পেতে থাকল।
দুপুরে গোসল করে মসজিদের ছাদে আমাদের লুঙ্গি রোধে দিলাম। বিকেলে যখন লুঙ্গি আনতে গেলাম তখন দেখলাম আমার লুঙ্গি নেই। আবার আমির সাব হুজুর। আমার মেজাজ তখন চরমে। আমি তাবলিগে আসব এ জন্য চাচা নতুন লুঙ্গি কিনে দিয়েছেন। আমার সেই লুঙ্গি নেই। আমির সাহেবকে বললে তিনি সবার সাথে আলাপ করলেন কিন্তু আমার লুঙ্গির কোন হদিস দিতে পারলেন না। তিনি আমাকে ডেকে মসজিদের এক কোনে গিয়ে বসলেন। আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করলেন। বললেন যে আল্লাহ আমার লুঙ্গি পছন্দ করছে তাই সেইটা হারাইয়া গেছে। আমার মেজাজ যতোটা ভাল ছিল তার চেয়েও খারাপ হযে গেল জোরে চিৎকার দিয়ে বললাম আল্লাহ যদি আমার লুঙ্গি পছন্দ করে তাইলে আমি ল্যাংটা থাকুম। পুরা মসজিদ স্তব্দ। আমির সাহেব ঘামছেন। হয়তবা কথা খুঁজে পাচ্ছেন না। আমিই বললাম এখনই আমারে টাকা দেন আমি লুঙ্গি কিনব। যদি না দেন তাহলে আমি ল্যাংটা থাকব। তিনি আমাকে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। আমি ছাড়া সবার মিটিংয়ে ডাক পরল। সেখানে আমার সকাল বেলার চালাকিও ধরা পড়ল।
অবশেষে আমির সাহেব আমাকে ৫০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললেন বাবা তুমি চলে যাও আর এই টাকা দিয়ে দিয়ে তোমার লুঙ্গি কিনে নিও।
আমিতো মহা খুশি। যথাসম্ভব দ্রুতই প্রস্থান করলাম আমিরদের ঐ ফালতু জলসা থেকে। আমার কাকাও আর চেষ্টা করেননি অন্য কোন জলসায় পাঠানোর জন্য। তবে বিষয়টি আমাকে যথেষ্ট আনন্দ দেয় যখন দেখি এইসব ভন্ড হুজুরদের দেখি হালকায়ের আসর জমায় অথবা গাস্তের মিছিল নামায়।