শিশু তানিয়ার বর আসবে হেলিকপ্টারে চড়ে!
বিশ্বজিৎ পাল বাবু :: তানিয়ার বর আসবে হেলিকপ্টারে চড়ে। এ জন্য থানায় অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় যত হইচই। তবে বেশি আলোচনা তানিয়ার বয়স নিয়ে। পৌরসভার দেওয়া জন্মসনদ অনুযায়ী ওর জন্ম ২০০১ সালের ১২ নভেম্বর। অর্থাৎ সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী সে এখনো শিশু। বিয়ের বয়স হয়নি। অথচ ‘ভালো ছেলে’ পাওয়ার কথা বলে পরিবারের লোকজন ষষ্ঠ শ্রেণিপড়–য়া তানিয়ার বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিয়ে। বুধবার গায়ে হলুদ। বাড়িতে ধুমধাম করে চলছে তানিয়ার বিয়ের আয়োজন। তানিয়া আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কসবা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সে কসবা পৌর এলাকার বগাবাড়ী গ্রামের মাহফুজ মিয়ার মেয়ে। ওর হবু বর জেলার নবীনগর উপজেলার ভাতুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা, প্রবাসী খন্দকার আলম।
উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তানিয়ার বিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট সূত্রও তার বয়সের সত্যতা নিশ্চিত করে এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানায়।
স্থানীয় সাংবাদিকরা মঙ্গলবার বগাবাড়ী গ্রামে কনের বাড়িতে গিয়ে সাজ সাজ রব দেখতে পান।
তানিয়ার মা জানান, বিদেশি পাত্র পাওয়ায় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন। তানিয়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়লেও বয়স বেশি বলে তিনি দাবি করেন। তবে শিশুটির সঙ্গে সাংবাদিকদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
কসবা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ইউএনও স্যারের কাছ থেকে মেয়েটির বিয়ের আয়োজনের কথা জানতে পেরেছি। ওনাকে মেয়ের বরসসহ সব তথ্য দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’
কসবা থানার ওসি মহিউদ্দিন আহমেদ মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘বর হেলিকপ্টারে চড়ে আসবেন বলে মেয়েটির বাবা গত সোমবার থানায় লিখিত আবেদন করেছেন। কিন্তু মেয়েটির বয়স কম জানতে পেরে আমরা এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। মেয়ের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সত্যতা পাওয়া গেলে বিয়ে বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।’
ইউএনও মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে মেয়েটির বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। বিয়ের আয়োজন না করতে মেয়েটির অভিভাবকদের বলা হয়েছে। এর পরও তাঁরা কথা না শুনলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রওনক আরার বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।