কসবায় প্রবাসীর রহস্যজনক মৃত্যু ॥ পরিবারের দাবী হত্যা
রুবেল আহমেদ : কসবায় নজরুল ইসলাম (৪০) নামে এক প্রবাসীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। প্রবাসীর পরিবারের দাবী তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে স্ত্রী ও তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজন। মঙ্গলবার ( ২২ আগষ্ট) উপজেলার কুটি ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নজরুল ইসলাম গৌরীপুর গ্রামের মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। সকাল থেকে নিহতের শ্বশুরবাড়ীর লোকজন পলাতক রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কসবা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় নিহতের ভাই মাসুক মিয়া।
নিহতের ভাই মালেক মিয়া জানান, তাদের ভাই নজরুল ইসলাম প্রবাসে ব্যবসা করতো। বিয়ের পর থেকে মা-বাবা ভাইদের সাথে স্ত্রীর একগুয়েমী আচরনের কারনে নজরুল ইসলাম নিজ বাড়ি থেকে সামান্য দুরত্বে আলাদা বাড়িতে বসবাস করতো। দুই সপ্তাহ আগে প্রবাস থেকে বাড়িতে আসে নজরুল । বাড়িতে আসার পর স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ীতে দেয়া প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা চাওয়া নিয়ে অশান্তি শুরু করে স্ত্রী ও বিরোধ বাধে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে। গত কয়েকদিন সংসারে তুমুল ঝগড়া হতো বলে জানায় প্রতিবেশীরা। পরে মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে স্বজনরা তার ঘরে গিয়ে দেখতে পায় খাটের উপর তার মৃতদেহ পড়ে আছে। পাশে বসে একা কান্না করছে তার এগার বছর বয়সী মেয়ে রুনা। পরিবার বলছে রাতে তাকে বাপের বাড়ির লোকজন নিয়ে হত্যা করে খাটে শুইয়ে রেখে স্ত্রী সুরাইয়া বেগম অপপ্রচার চালাচ্ছে যে তার স্বামী আত্ম হত্যা করেছে। একই গ্রামে নজরুলের শ্বশুর বাড়ী। বাড়িতে ছুটিতে আসলেই স্ত্রীর মানষিক নির্যাতন সইতে না পেরে ছুটি শেষ হওয়ার আগেই প্রবাসে চলে যেতো।
নিহতের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম (৩২) জানায়, রাতে স্বামীর সাথে ঝগড়া করে রাগ করে একই গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে যাই। সকাল ৮টার সময় তার মেয়ে রুনা আক্তার (১১) বাড়িতে এসে দেখতে পায় তার বাবার ঝুলন্ত মৃতদেহ। লাশ ঝুলানো ছিল তবে পা গুলো সম্পূর্ন ভাবে মাটিতে লাগানো ছিল বলে জানায় রুনা। গলার দড়ি খোলে সে একাই লাশ নামিয়েছে বলে জানায় সে। পরে তার কান্নায় স্বজনরা গিয়ে নজরুলের মৃতদেহ দেখতে পায়।
প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, ছোট এই মেয়ে একাই বাবার ঝুলন্ত লাশ নামিয়েছে এটা কি করে সম্ভব। অথচ নিহতের গলায় ফাসিঁর দড়ির কোনো দাগ নেই। ঘরে গিয়ে ঝুলন্ত দড়িও দেখতে পায়নি তারা। নিহতের এগার বছরের মেয়ের এমন কথায় পরিবারসহ গ্রামবাসীর মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে তার স্ত্রীর প্রতি। তারাও এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবী করেন।
নিহতের মায়ের দাবী, ছেলের পাঠানো টাকা চাওয়ায় তার ছেলেকে স্ত্রী এবং তার বাপের বাড়ীর লোকজন হত্যা করেছে। তার ছেলের লক্ষ লক্ষ টাকা তাদের কাছে রয়েছে। আমি আমার সন্তান হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই যেন আর কোনো মায়ের বুক এমনভাবে খালি না হয়।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত জানা যাবে।