প্রতিনিধি : ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রূপীর অব্যাহত দরপতনের কারণে আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে রপ্তানী বাণিজ্যে ধ্বস নেমেছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর রপ্তানী মুখি এ বন্দর দিয়ে রপ্তানী ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ছয় মাস আগেও যেখানে প্রতিদিন শতাধিক (১২০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫০) ট্রাক পণ্য ভারতে প্রবেশ করতো সেখানে গত তিন-চার মাস থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০ ট্রাক পণ্য রপ্তানী হচ্ছে। এতে এ স্থল বন্দরে কর্মরত প্রায় একশত আমদানী-রপ্তানীকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে রুপীর উর্ধ্ব মূল্যের কারণে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বাংলাদেশী রপ্তানীকারদের রপ্তানীকৃত পণ্যের কোটি কোটি টাকার বিল আটকা পড়েছে। এ অবস্থায় রপ্তানী ব্যবসার সাথে প্রত্য ও পরোভাবে জড়িত সহস্রাধিক মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জানা যায়, ছয় মাস আগে এক ডলারের বিপরীতে রূপীর মূল্য ছিল ৫০/৫৫। কিন্তু গত কয়েক মাসে তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় সত্তুর টাকায় ঠেকেছে। বর্তমানে প্রতি ডলারের ৬৭-৬৮ রুপী উঠানামা করছে। স্থল বন্দর শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত এক বছরে ভারতে রপ্তানি কমেছে প্রায় ১শ কোটি টাকা। র্খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় প্রায় ৪০টি পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, মাছ, পাথর, সিমেন্ট, তুলা, প্লাস্টিক সামগ্রী, চিপস ইত্যাদি। রপ্তানিতে প্রায়ই যোগ হচ্ছে নতুন পণ্যের নাম। এসব পণ্য উত্তর পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালায়, মিজুরাম, মনিপুরসহ সাতটি রাজ্যে সরবরাহ হয়। আখাউড়া স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল জানান, ভারতে ডলারের বিপরীতে রূপীর অব্যাহত দরপতনের কারনে আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে রপ্তানী প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। দুই মাস পূর্বে যেখানে এক ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য ছিল ৫৬/৫৭ রুপি। বর্তমানে তা বেড়ে দায়িড়েছে ৬৮/৬৯ রুপীতে। একদিকে ব্যবসা বন্ধ অন্যদিকে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আটকে পড়া বিল পাচ্ছি না। অনেক রপ্তানীকারক কোটি কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানী করে বসে আছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ভারতীয় আমদানী কারকরা বিল ছাড়ছে না। আখাউড়া স্থল বন্দরের সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল হামিদ জানান, বর্তমানে প্রতিদিনি ২০/২৫ ট্রাক পণ্য ভারতে রপ্তানী হচ্ছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধি কারনেই রপ্তানী কমে গেছে। আখাউড়া স্থল শুল্ক বিভাগের সহকারী কমিশনার সহিদুল ইসলাম জানান, ভারতে ডলারের বিপরীতে রূপীর অব্যাহত দরপতনের কারনে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা নতুন করে কোন চুক্তি করছে না। ডলারের মূল্য স্থিতিশীল পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত রপ্তানী বাড়ার কোন সম্ভবানা নেই। |