Main Menu

বিজয়নগরে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে অনেক গ্রাম, ত্রানের জন্যে হাহাকার করছে কয়েক হাজার মানুষ

+100%-

মো,জিয়াদুল হক বাবুঃ পার্শবর্তী উপজেলা আখাউড়া দিয়ে পানি নামায় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিতাস নদী এবং কাজলা বিলের পানি অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে বিজয়নগর উপজেলার ৩০টি গ্রাম। অব্যাহত পানি বৃদ্ধি হওয়ায় তলিয়ে গেছে কৃষকের জমি, ঘর বাড়ি,স্কুল ও ফসলের মাঠ। ভেসেগেছে পুকুরের মাছ। রাস্তাঘাটও তলীয়ে গেছে। পানি বন্দি অবস্থায় আছে কয়েক হাজার মানুষ। আয় উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে চরম দূর্ভোগে পরেছে বন্যা কবলিত মানুষ গুলো। এ অবস্থায় এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সাহায্য সহযোগীতা পান নি বলে অভিযোগ ক্ষতি গ্রস্থদের। তবে স্থানীয় প্রশাসনের দাবী এ লক্ষ্য কাজ করছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, গত এক সপ্তাহের ব্যাবধানে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তলীয়ে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিতাস নদীর পূর্বাঞ্চলের বিজয়নগর উপজেলার চর ইসলামপুর, পত্তন,হরষপুর, চান্দুরা, বুধন্তি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম,এর মধ্যে দত্ত খোলা, ইসলামপুর, শশুই, মনিপুর, পত্তন, লক্ষিমোড়া, কালিসিমা,হরষপুর , মানিকপুর,বিন্নি ঘাট,তালতলা, মেরাশানি,ফতিপুর, গাছতলা সহ অন্তত ১০টি গ্রাম বেশী ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে কৃষকের জমি,ফসলের মাঠ,স্কুল ও রাস্তাঘাট। ভেসেগেছে পুকুরের মাছ। পানি বন্ধি অবস্থায় কর্মহীন অবস্থায় আছেন,“কয়েক হাজার মানুষ। গত এক সপ্তাহ ধরে এমন দূর্ভোগের মধ্যে থাকলেও সরকারী বা বেসরকারী কোনো ধরনের ত্রান পৌছেনি দূর্গত এলাকায়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষ গুলো।মনিপুর এলাকার নায়েব মিয়া বলেন, গরু আছে কয়েকটা, ঘরে বাচ্চা আছে তাদের নিয়ে খুব বেশি সমস্যায় আছি। রান্না ঘর টিউবওয়েল বাথরুম সব পানির নিচ তলিয়ে গেছে। খুব সমস্যার মধ্যে আছি। গরু রাখার কোনো জায়গা নেই । অন্য এলাকায় নিয়ে গরু রেখে আসছি। এভাবে যদি পানি বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের বাড়ীছাড়া হতে হবে। চান্দুরা ইউনিয়নের কালিসীমা গ্রামের জয়নাল ইসলাম বলেন,খুব অসহায় অবস্থায় আছি আমরা। বাড়ীঘর পানির নিচে চলে যাচ্ছে। মাছের খামার, পুুকুরের মাছ সবকিছু ভেসে গেছে। আমরার অবস্থা খুব খারাপ। কষ্টের বিষয় হল এখানো পর্যন্ত আমাদের কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।আম্বিয়া বেগম জানান, ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা এসে কত কথা বলে এখন কেউ আমাদের পাশে নাই। প্রতিদিন আস্তে আস্তে পানি বাড়ছে। বাড়ীর উঠানে কোমড় পানি। বাড়ীঘর থেকে বের হতে পারছি না। নামাজ পড়তে পারি না,বাথরুমে যেতে পারি না, রান্না করতেও পারি না সব জায়গায় শুধু পানি আর এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যান কেউ কোনো খোজ নেয়নি।

বিজয়নগর উপজেলা চর ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দানা মিয়া ভূঁইয়া জানান,” এখন পর্যন্ত তার এলাকায় কোন ধরনের সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়নি। এলাকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি সরকারের পক্ষ থেকে সবধরনের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করেছেন। তবে তিনি জানান, আজ দুপুরে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করছেন।বুধন্তি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কাজী সায়্যিদুল ইসলাম জানান,আমার ইউনিয়নের ৭/৮ টি গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে,এখানে সরকারি বা বেসরকারি ভাবে কেউ ত্রান দিতে আসেনি।তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সার্বক্ষনিক খবর নিচ্ছেন এবং ক্ষতি গ্রস্তদের তালিকা করতে বলেছেন।

উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শাহিনুর জাহান জানান, আজ বুধবার সকালে চর ইসলামপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি বন্যা কবলিত গ্রামে ঘুরে এসেছি এবং ৬৮৬ টা পানি বন্দী পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগীতা করা হবে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ ইফরান উদ্দিন আহমেদ জানান,“ এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। গতকাল আমরা মিটিং করেছি এ বিষয় নিয়ে, প্রত্যেক ইউনিয়নে ১ জন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে শনাক্ত করে সহযোগীতা করা হবে ।আমাদের উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সব কয়টা এলাকা ঘুরে দেখবেন। ত্রান তৎপড়তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং আমি নিজে আশ্রায়ন প্রকল্প সহ কয়েকটি গ্রামের খোজ খবর নিয়েছি। তাছাড়া আমরা জান মালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রও প্রস্তুত রেখেছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছে।






Shares