Main Menu

আশুগঞ্জে মুড়িং টার্মিনাল নির্মান নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা।বিদ্যুৎ ইউনিট নির্মাণকাজ ব্যাহতের আশঙ্কা

+100%-

মো.শফিকুল ইসলাম. আশুগঞ্জ থেকে : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ পাওয়া স্টেশন কোম্পানির অধীনে প্রায় সাড়ে ১৩‘শ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন নতুন ৪টি বিদ্যুৎ ইউনিটের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ২২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ইউনিট চলতি বছরের অক্টোবর মাসে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। কিন্তু এসব বিদ্যুৎ ইউনিটের ভারী যন্ত্রাংশ সরবরাহ করার জন্য মেঘনা নদীতে নির্মানাধীন মুড়িং টার্মিনাল নির্মান নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে যথা সময়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ পরিবহন নিয়ে বিপাকে পড়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের মধ্যে মুড়িং টার্মিনাল নির্মাণ নিয়ে এই জটিলতার অবসান না হলে  হুমকির মধ্যে পড়তে পারে সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক আশুগঞ্জ সাড়ে ১৩‘শ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র কারিগরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়,বর্তমান সরকার ২০১৭ সালের মধ্যে ১৬‘হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা বাস্তবায়নে অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন কোম্পানির উৎপাদন ক্ষমতা ৬‘হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।এরই অংশ হিসেবে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানির অধীনে প্রায় সাড়ে ১৩‘শ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ৪টি বৃহৎ ইউনিটের নির্মাণ কাজ একযোগে শুরু করেছে সরকার। নির্মাণাধীন এসব ইউনিটের জন্য র্জামানি থেকে ৪টি টার্বোজেনারেটর আমদানি করা হচ্ছে। যার প্রতিটির ওজন প্রায় ৩৮৫ টন। এই ৪টি টার্বোজেনারেটর জার্মানী থেকে পরিবহনের জন্য বিকল্প কোনো পথ না থাকায় নদী পথে পরিবহন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে টার্বোজেনারেটর নিয়ে একটি জাহাজ আশুগঞ্জের উদ্দ্যেশে জার্মানি ছেড়ে এসেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের শেষের দিকে জেনারেটর নিয়ে এই জাহাজটি আশুগঞ্জ মেঘনা নদীতে নোঙ্গর করার কথা রয়েছে। আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের নিজস্ব জেটির ধারন ক্ষমতা মাত্র ৮০টন হওয়ায় ৩৮৫টন টার্বোজেনারেটর জাহাজ থেকে আনলোড করার জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন মেঘনা নদীতে একটি মুড়িং টার্মিনাল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমতি নিয়ে অস্থায়ী মুড়িং  টার্মিনাল নির্মাণের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনভেয়ার লজিস্টিক লিমিটেডকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তাদের সাব কন্ট্রাকটর হিসেবে আশুগঞ্জের ঠিকাদারি  প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স ছফিউল্লাহ এন্টারপ্রাইজ’ মুড়িং টার্মিনাল নির্মান কাজ শুরু করে। এই নিয়ে নদীর ঘাট ইজারাদারের আপত্তির কারণে কয়েকটি গণমাধ্যমে মেঘনা নদী দখল করে জেটি নির্মান শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ‘হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ এর পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোর্শেদ হাইকোর্টে একটি রীট আবেদন করেন। রীট আবেদনটি শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট অস্থায়ী জেটি নির্মান স্থগিত আদেশ দেন এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেয়ার জন্য ১০জনের বিরুদ্বে রুল জারি করেন। হাইকোর্টের এই আদেশের পর অস্থায়ী মুড়িং টার্মিনাল নির্মান কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ পরিবহন নিয়ে বিপাকে পড়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ নুরুল আলম জানান,  প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ উৎপাদনে মহাপরিকল্পনার অংশ হিসাবে এসব ইউনিটের বাস্তবায়ন কাজ চলছে। এই নতুন ৪টি ইউনিটের জন্য টার্বোজেনারেটর গুলি পরিবহনের জন্য মেঘনা নদীতে অস্থায়ী  মুড়িং টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছিল। হাইকোর্ট জেটি নির্মান স্থগিত করায় বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি  বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত মুড়িং টার্মিনাল নির্মান করতে না পারলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টার্বোজেনারেটর জাহাজ থেকে আনলোড করা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এবং নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি ভারী যন্ত্রাংশ পরিবহনকারী জাহাজকে কোম্পানীর অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হবে। জাতীয় স্বার্থে আমরা বিষয়টি আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।
টার্মিনাল  নির্মানের ব্যাপারে বিআইডব্লিইটিএ‘র যুগ্ম পরিচালক মোঃ মঞ্জুর কাদের জানান, বিদ্যুৎ একটি জাতীয় বিষয় হওয়ায় অস্থায়ী টার্মিনাল নির্মাণের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল পরিবহন শেষ হলে তারা তারা নিজ খরচে নদীর ঘাট পরিস্কার করে  দিবে এ শর্তে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।






Shares